ব্রিটেনে গিয়ে ভারত ও মোদী সরকার সম্পর্কে রাহুলের মন্তব্য ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠল সংসদের বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্ব। সোমবারই এই দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়েছে। শাসক দল বিজেপি অভিযোগ করেছে, ব্রিটেন সফরের সময় ভারতকে নিয়ে রাহুলের মন্তব্যে দেশের সম্মানহানি ঘটেছে। কারণ, রাহুল ব্রিটেনবাসীকে বলেছেন যে মোদী সরকারের জমানায় ভারতের গণতন্ত্র আক্রমণের মুখে পড়েছে। বিজেপির এই সব অভিযোগের জবাবে পালটা সরব হয়েছে কংগ্রেসও। এই ব্যাপারে কংগ্রেস সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, রাহুল কেবল সত্যের আয়না দেখিয়েছেন। দুই পক্ষের এই নিয়ে তীব্র চাপানউতোর উভয় কক্ষকেই শেষ পর্যন্ত অধিবেশন দিনের মত মুলতুবি করতে বাধ্য করে।
সম্প্রতি বারবার বিজেপি অভিযোগ করে চলেছে, রাহুল গান্ধী বিদেশের মাটিতে গিয়ে ভারতকে বদনাম করছেন। সেই একই অভিযোগ মোদীর বিরুদ্ধেও বারবার উঠেছে। তিনিও বিদেশে গিয়েছে ভারতে হওয়া নানা ঘটনা টেনে এনেছেন। আর, ভারতের বিরোধী দল এবং তাদের কাজকর্মের বদনাম করেছেন। এমন অভিযোগ বিজেপিকে জবাব দিতে পালটা তুলেছে কংগ্রেস। এই পরিস্থিতিতে দেখে নেওয়া যাক, বিদেশ সফরকালে রাহুলের কিছু মন্তব্য। অর্থাৎ, বিদেশে গিয়ে ঠিক কী বলেছেন কংগ্রেসে গান্ধী পরিবারের প্রতিনিধি।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়
২৮ ফেব্রুয়ারি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জজ বিজনেস স্কুলে, 'একবিংশ শতাব্দীতে শুনতে শেখা' বিষয়ে তার বক্তৃতায়, রাহুল অন্যান্য বিবৃতির মধ্যে মন্তব্য করেছিলেন: 'সবাই জানে এবং এটা অনেক খবরে এসেছে যে ভারতীয় গণতন্ত্র চাপের মধ্যে রয়েছে, আক্রমণের মুখে রয়েছে, ঠিক। আমি ভারতের একজন বিরোধী দলের নেতা এবং আমরা সেটা বুঝতে পারছি। গণতন্ত্রের জন্য যে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো প্রয়োজন – সংসদ, একটি মুক্ত গণমাধ্যম, বিচার বিভাগ, সংহতির ধারণা, ঘুরে বেড়ানোর ধারণা, এগুলো সবই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে। তাই আমরা সংবিধানে ভারতীয় গণতন্ত্রের মৌলিক কাঠামোর ওপর আক্রমণের সম্মুখীন হচ্ছি। ভারতকে রাজ্যগুলোর একটি যুক্তরাষ্ট্র হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে এবং সেই যুক্তরাষ্ট্র জন্য একটি আলোচনার প্রয়োজন, একটি কথোপকথন প্রয়োজন। যা অন্যান্য দেশের তুলনায় আলাদা।'
আরও পড়ুন- বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে বিল পাশই সরকারের লক্ষ্য, একাধিক ইস্যুতে সংসদ উত্তালের সম্ভাবনা
আইজেএ-এর অনুষ্ঠান
৪ মার্চ লন্ডনে আইজেএর প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাঁর কথোপকথনের সময়, ওয়েনাদের কংগ্রেস সাংসদ বলেছিলেন: লোকেরা ভারত এবং এর গণতন্ত্রের মাপকাঠি বোঝে না। ইউরোপে হঠাৎ করে গণতন্ত্র অদৃশ্য হয়ে গেলে তখন কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবেন? আপনি হতবাক হবেন এবং আপনি হবেন, ওহ আমার ঈশ্বর, এটি গণতন্ত্রের জন্য একটি বিশাল আঘাত। আর ইউরোপের চেয়ে সাড়ে তিনগুণ এক কাঠামো যদি হঠাৎ অগণতান্ত্রিক হয়ে যায়, তাহলে আপনি কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবেন? এটি ইতিমধ্যে ঘটেছে। এটি এমন কিছু নয় যে ভবিষ্যতে ঘটবে। এটি ইতিমধ্যে ঘটেছে। কিন্তু, আপনাদের কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। অবশ্য প্রতিক্রিয়া না-হওয়ার কারণ রয়েছে। কারণ, সেখানে বাণিজ্য আছে। সেখানে অর্থ ও জিনিসপত্র আছে। কিন্তু, ভারতীয় গণতন্ত্র জনকল্যাণকর এবং আপনি যদি গণতান্ত্রিক কাঠামোর দিকে তাকান, সেটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জনকল্যাণ।'