মুখ্যমন্ত্রীর ছায়া এবার ভাইপো অভিষেকের মধ্যে। এই নজরুল মঞ্চেই অসংখ্য বার ভাষন দিতে গিয়ে সরাসরি উপস্থিত নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মত বিনিময় করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী প্রশাসনিক সভায় যে কোনও ক্ষেত্রেই সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বকুনি খেয়েছেন অনেক মন্ত্রী-আমলা-নেতা। প্রশংসাও পেয়েছেন অনেকে। এদিন নজরুল মঞ্চে এআইটিসি ডিজিট্যাল কনক্লেভ ২০১৮-তে ক্ষণিকের জন্য হলেও তার ছায়া দেখা গেল তৃণমূল যুবর সর্বভারতীয় সভাপতির মধ্যে। বক্তব্য রাখার সময় মঞ্চ থেকেই নাম ধরে বলে গেলেন কাজ ভাল হচ্ছে, ভাষাটা ঠিক করুন, অনেক কিছুই।
অভিষেক বলেন, "কাজের মাধ্যমে পরিচয় দেবেন। মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে নেতাদের সঙ্গে চারটে সেল্ফি তুলে সস্তায় কিছু লাইক আর কমেন্ট পাওয়া যায়। কিন্তু দলের মধ্যে নিজের প্রতিষ্ঠা পাওয়া যায় না। এটা দয়া করে করবেন না। ওই নেতারাও পরে আপনাকে পছন্দ করবেন না। ভাল কাজ করলে দল অনুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে আপনাকে খুঁজে বের করবে।"
আরও পড়ুন: তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতৃত্বে থাকবেন শুধু ছাত্র-ছাত্রীরাই
এরপরই অভিষেক সরাসরি উপস্থিত সাইবার সেলের সৈনিকদের সঙ্গে মত বিনিময় শুরু করেন। তিনি বলেন, "আমি আপনাদের অনেকের লেখা পড়ি। শ্রীপর্ণা যেমন ভাল কাজ করে। শ্রীপর্ণা এসেছে? দেবাংশু খুব ভাল কাজ করছে। দেবাংশু এসেছে? ওঠ। তুই খুব ভাল কাজ করছিস। কিন্তু মাঝে মাঝে ভাষাটা একটু দেখে! এছাড়া গার্গী রয়েছে, স্বরূপ আছে। স্বরূপ এসেছে? খুব ভাল। তোমার শরীর ঠিক আছে এখন? তোমরা সকলেই খুব ভাল কাজ করছো।" এবার তাঁদের প্রশংসা করে যুবরাজ বলেন, "এদের প্রোফাইলে গিয়ে দেখবেন, কোন সেল্ফি পাবেন না কখনও। দলকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য এরা সোশ্যাল মিডিয়ায় জীবন দিয়ে লড়াই করছে। এরাই প্রকৃত সৈনিক।"
দিদির হাত শক্ত করতে বলে অভিষেক স্পষ্ট করে দেন, দলে অন্য কারও কোনও গুরুত্ব নেই। উদাহরন দিতে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ ছাড়েননি আমলাদেরও। তিনি বলেন, “দয়া করে এই দাদা, ওই দিদির প্রচার বন্ধ করুন। আমি স্ট্রেস দিচ্ছি। এটা করে কোনও লাভ নেই। যে দাদা, দিদি করছেন, মাথার পিছন থেকে জোড়াফুল চলে গেলে দাদাও নেই, দিদিও নেই! এটা সকলে মাথায় রাখুন। বাংলায় একটা কথা আছে বাঁশের থেকে কঞ্চি দড়, শাড়ির থেকে গামছা, মন্ত্রীর চেয়ে আমলা বড়, নেতার থেকে চামচা বড়। এটা যেন আর না হয়।"
আরও পড়ুন: ভোটে দাঁড়াতে চান? ন্যূনতম যোগ্যতা ১৫হাজার ফেসবুক লাইক, ৫০০০ টুইটার ফলোয়ার
সাইবার সেল নিয়ে তৃণমূলের পরিকল্পনাও খোলসা করেছেন তিনি। কিভাবে বিরোধীদের দলে টানতে হবে তারও উপায় বাতলে দিয়েছেন। তাঁর মতে, "২৯৪টি বিধানসভায় ১০০টা করে সৈনিক আমাদের কাছে থাকছে। এই ৩০,০০০ সৈনিকের কাজ হবে অন্য দলের ভাল কর্মীদের আমাদের দলে নিয়ে আসা। মাসে আটজনকে বুঝিয়ে আমাদের দলে আনতে হবে। মাসে আড়াই লক্ষ। বছরে ৩০ লক্ষ। পরিবারে ৩ জন ভোটার ধরলে ১ কোটি ভোটার আমাদের বেড়ে যাবে।"
বিজেপির সোশ্যাল পেজে গিয়ে পরিসংখ্যান ও যুক্তিযুক্ত তথ্য দিয়ে লড়াই করার উপদেশ দিয়েছেন তৃণমূলের যুবনেতা। এদিন ফোন মারফত সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য শোনানো হয়। মমতা বলেন, "হিন্দি জানতে হবে। পোস্ট করা তথ্য যেন কখনও ভুল না হয়। ডিজিট্যালে ভারত তথা বিশ্বে প্রথম হতে হবে।" বছরে তিনি দলের সাইবার সেলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একবার মত বিনিময় করবেন বলেও জানিয়ে দেন।