Advertisment

প্রায় ৯ ঘণ্টা পর ইডি দফতর ছাড়লেন অভিষেক, 'জীবন দিয়ে দেব, মাথা নোয়াব না', সরব সাংসদ

Abhishek Banerjee: কয়লা পাচারকাণ্ডের তদন্তে প্রায় ৯ ঘণ্টা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডির তদন্তকারীরা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

Abhishek Banerjee: প্রায় নয় ঘণ্টার ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর ইডির দফতর ছাড়লেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সকালেই জামনগরের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের দফতরে হাজির হয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়লা পাচারকাণ্ডের তদন্তে আজই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। ইডি দফতরের পৌঁছেই তদন্তে সহযোগিতার বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারাণ সম্পাদক।

Advertisment

এদিন সন্ধায় ইডি দফতর থেকে বেরিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকেই তোপ দাগেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। ইডি-সিবিআই আর যা আছে লাগাতে পারেন। এভাবেই সুর চড়িয়ে অভিষেক বলেন, ‘চব্বিশের ভোটে বিজেপিকে হারাবই। বাংলায় দুশো আসন পাব, বলে দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু ৭০ আসনেই থামতে হয়েছে বিজেপিকে।‘

এখানেই থামেননি তিনি। আরও আক্রমণাত্মক অভিষেক জুড়েছেন, ‘প্রথম থেকেই বলছি ১০ পয়সার দুর্নীতি আমার বিরুদ্ধে প্রমাণ করতে পারলে ফাঁসিকাঠে ঝুলব। ইডি-সিবিআইয়ের দরকার লাগবে না। যাদের টাকা নিতে দেখা গিয়েছে , তাঁদের কী কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলো দেখতে পাচ্ছে না? রাজনৈতিক কারণেই কি? অন্য দলে যোগ দেওয়ার জন্য কি ছাড় দেওয়া হচ্ছে? যদি মনে করেন ভয় দেখিয়ে তৃণমূলকে জব্দ করবেন, হবে না। যে যে জায়গায় বিজেপি আছে, সেখানেই তৃণমূল যাবে। অন্য রাজনৈতিক দল বিশেষ করে কংগ্রেসের মতো তৃণমূল ঘরে ঢুকে পড়বে না। আপনি যাই করুন আগামি ভোটেও তৃণমূল জিতবে। কাপুরুষরা আমাদের হারাতে পারেনি বলে প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে। জীবন দিয়ে দেব কিন্তু মাথা নোয়াবো না।‘  তিনি আরও বলেন, 'বিজেপির স্বৈরাচার শেষ হবেই। আপনাদের যা উপড়ানোর উপড়ে নিন। আমরা আমাদের মেরুদণ্ড এই এই ভীরু, স্বৈরাচারের কাছে বিক্রি করব না। যারা আমদের রাজনৈতিকভাবে পরাজিত করতে পারেনি। বিজেপি যাতে মনে না করে তৃণমূল ভয় পাবে।'

দিল্লি থেকে বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে তিনি বলেন, '২৫ জন বিজেপি বিধায়ক তৃণমূলে যোগের জন্য অপেক্ষা করছেন। আমরা নিচ্ছি না। কেউ কেউ মনে করতে পারে ওরা দলে আসবে কিন্তু ভোট হবে না। আমি দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বলছি পদত্যাগ করেই তাঁরা তৃণমূলে আসবেন। এবং পুনরায় নির্বাচনে জিতবেন।'

আজ সকালে কী বলেছেন অভিষেক?

কয়লা পাচারকাণ্ডের তদন্তে আজই তাঁকে দি্ল্লির দফতরে হাজিরারা নোটিস দিয়েছিল ইডি। সেই মতো রবিবারই রাজধানীতে পৌঁছে যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সোমবার বেলা ১০টা ৫০ নাগাদ জামনগরের ইডির দফতরের পৌঁছন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, "যে কোনও তদন্তের মুখোমুখি হতে আমি প্রস্তুত। দেশের সব নাগরিকদেরই তদন্তে সহযোগিতা করা উচিত।"

যদিও কয়ালা পাচারকাণ্ডে সস্ত্রীক তাঁকে ইডির তলবকে এতদিন বিজেপির 'রাজনৈতিক প্রতিহিংসা' বলে সরব হয়েছেন অভিষেক। সোচ্চার তৃণমূল সুপ্রিমোও। রবিবারই দিল্লিতে যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে কেন্দ্রকে নিশানা করে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন তাঁর বিরুদ্ধে ১০ পয়সার দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে ফাঁসির মঞ্চে যেতেও তিনি প্রস্তুত। তবে জানিয়েছিলেন যে, তিনি এবার ইডির তন্তকারীদের মুখোমুখি হবেন।

রবিবার কী বলেছিলেন অভিষেক?

কয়লা পাচারকাণ্ডে ইডির তলব প্রসঙ্গে রবিবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারাণ সম্পাদক বলেছিলেন যে, "আমার বিরুদ্ধে ১০ পয়সার কোনও প্রমাণ কেন্দ্রীয় সংস্থা জনসমক্ষে আনতে পারলে বা কোথাও থেকে নিয়েছি প্রমাণ থাকলে জনসমক্ষে আনুন। আমার পিছনে ইডি-সিবিআই লাগাতে হবে না। আমাকে বলুন ফাঁসির মঞ্চ করে মৃত্যুবরণ করতে রাজি আছি। আগেও এটা বলেছিলাম, আজও একই কথা বলছি। যে কোনও তদন্তের মুখোমুখি হতে আমি রাজি আছি। কিন্তু প্রশ্ন হল যে কেন্দ্রীয় সংস্থা কেন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ জনসমক্ষে আনছে না? কলকাতার কেস আমাকে ডেকে পাঠিয়েছে দিল্লিতে। আমি তো দিল্লিতে যাচ্ছিই। আমি সব ধরনের তদন্তের মুখোমুখি হতে রাজি।"

আরও পড়ুন- সিআইডি হাজিরা এড়ালেন শুভেন্দু, গরহাজিরার কারণ জানালেন ইমেলে

কয়লা পাচারকাণ্ডের তদন্ত করছে ইডি। এই মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আগ্রহী তদন্তকারীরা। গত ২৮ অগস্ট সমন পাঠিয়ে ৬ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে ইডির দফতরের ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদকে তলব করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। কায়লা পাচারকাণ্ডে ওই দিনই সমন পাঠানো হয়েছিল অভিষেক-পত্নী রুজিরাকেও। ১ সেপ্টেম্বর তাঁকে দিল্লিতে তলব করেছিল ইডি। যদিও কোভিড পরিস্থিতির কথা চিঠিতে জানিয়ে গত বুধবার রাজধানীতে তদন্তকারীদের মুখোমুখি হননি রুজিরা নারুলা। কলকাতায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।

দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে ইডি-র এই তলব নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চ থেকে তিনি বলেছিলেন যে, “রাজনৈতিকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পেরে প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে বিজেপি। বিরোধীদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

abhishek banerjee Coal Smuggling Case Enforcement Directorate tmc
Advertisment