Advertisment

দলবদলুরা যাচ্ছে যাক, আদিদের অনুগত্যই অস্বস্তির মাঝে বিজেপির আশার আলো

মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে দলকে। তাহলেই পার্টি আবার দাঁড়িয়ে যাবে। মনে করছেন পদ্ম নেতাদের একাংশ।

author-image
Joyprakash Das
New Update
without quit bjp but work for aap, kejriwal tells gujrat bjp workers

বিজেপি কর্মীদের তাঁর দলের হয়ে কাজের আবেদন মুখ্যমন্ত্রীর।

একের পর এক প্রাক্তন তৃণমূলী ভায়া বিজেপি হয়ে ফের ঘাসফুল শিবিরে ফিরে যাচ্ছেন। এরপর কারা ঘরে ফিরবেন সেই নিয়ে চর্চা অব্যাহত রাজনৈতিক মহল। এরইমধ্যে রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন, সময়-সুযোগ পেলেই নিশ্চুপ কর্মীরা সক্রিয় হয়ে উঠবেন। পার্টি আবার দাঁড়িয়ে যাবে। মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে দলকে।

Advertisment

মূলত ২০১৮ পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে বিজেপির উত্থান বাম-কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে দিয়েছিল। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের বিরোধী শক্তিসমূহকে প্রায় নির্মূল করে, তৃণমূলের আসন ছিনিয়ে নিয়ে প্রধান বিরোধী শক্তি হয় পদ্মশিবির। এরপর শুধু এগিয়ে চলা। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ঝাঁকে ঝাঁকে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা বিজেপিতে যোগ দিতে শুরু করে। রীতমতো যোগদান শিবির চালু করে বিজেপি। অভিযুক্ত হোক বা দুর্নীতিতে যুক্ত, দলে যে এসেছে তাঁদেরই স্বাগত জানিয়েছে বঙ্গ বিজেপি। ২০২১ উল্টোতেই লাইন দিয়ে তৃণমূলে ফিরতে শুরু করে প্রাক্তনীরা। অর্জুন সিংয়ের পর কে কে লাইনে আছে সেটাই এখন আলোচনা চলছে। তবে আদি বিজেপি নেতা-কর্মীরা দলকে নিয়ে এখনও আশার আলো দেখছেন।

রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, 'কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যেভাবে চাইবে সেভাবে হবে। রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে ফাইনাল হবে। পার্টিকে তো আবার মানুষের সঙ্গে যুক্ত করবেই। তবে এটা ঠিক কমিটেড বিজেপি নেতা বা কর্মীরা এখন দল না করলেও ছেড়ে চলে যায়নি। সেটা নেতৃত্ব হোক বা কর্মী। হলপ করে বলতে পারি তাঁরা হয় তো সঠিক সময়ের অপেক্ষা করছে। এখনও ব্যবস্থা হয় তো হয়নি। তবে আমার মনে হয়, তাঁরা যদি নেমে পড়ে তাহলে পার্টি আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।' নতুন রাজ্য কমিটিতে শীর্ষ নেতৃত্বের একটা বড় অংশের স্থান হয়নি। রাজনৈতিক মহলের মতে, ক্ষোভে সংগঠনের নীচু স্তরেও আদি বিজেপির বহু কর্মী বসে গিয়েছেন, কিন্তু দলবদল করেনি।

এরাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল থেকে লোকেদের ওপর নির্ভর করে বিজেপি লড়াই করেনি। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে দিকে দিকে তৃণমূল থেকে আসা নেতাদের প্রার্থী করেছিল বিজেপি। এখন জয়ী বা পরাজিত প্রাক্তন তৃণমূলীদের একাংশ ফের পদ্মবন থেকে ঘাসবনে ফিরে চলেছেন। সায়ন্তনের কথায়, '২০১৮ পঞ্চায়েত বা ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে অন্য দল থেকে যাঁরা এসেছিল তাঁদের ওপর নির্ভর করে লড়াই করেনি। কমিটেড কর্মী বা কার্যকর্তাদের জন্য দলে উঠেছিল। তাঁদেরই একটা অংশ নিশ্চুপ। সঠিক সময় বা সঠিক সুযোগ এলেই তাঁরা আবার সক্রিয় হয়ে যাবে। পার্টি আবার দাঁড়িয়ে যাবে। কেন পুরনো দলে ফিরে যাচ্ছে? সায়ন্তনের জবাব, 'যাঁরা ক্ষমতা ছাড়া থাকতে পারে না। তাঁরা চলে গিয়েছে বা চলে যাবে। তাঁদের পুলিশ, লালবাতি চাই। তবে তৃণমূল থেকে আসা সবাই এমন তা কিন্তু একেবারে নয়।'

বিজেপির রাজ্য সংখ্যালঘু মোর্চার প্রাক্তন সভাপতি আলি হোসেন দীর্ঘ ৩০ বছর বিজেপির সঙ্গে যুক্ত। যদিও নতুন রাজ্য কমিটিতে তিনি স্থান পাননি। তবে বিজেপিই তাঁর ধ্য়ান-জ্ঞান একথা জানাতে ভোলেননি গেরুয়া শিবিরের এই সংখ্যালঘু নেতা। আলি হোসেন বলেন, 'বিজেপির সংগঠন মজবুত করতে গেলে সমস্ত স্তরের দলের কার্যকর্তাদের গ্রামাঞ্চলে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। মানুষের সমর্থন পেতে হলে তাঁদের সমস্যা মেটাতে হবে। গ্রামের মানুষ ভীষন বেকায়দায় আছে। সাধারণ মানুষের ক্ষতি হয়েছে। বাড়ি-ঘর ভাঙচুর হয়েছে। দলকে কর্মসূচি নিতে হবে, গঠনমূলক বিরোধিতা করতে হবে।' আলি হোসেনর বক্তব্য, 'সকালে তৃণমূলের পার্টি অফিসে গেলেন, বিকেলে বিজেপির পার্টি অফিসে গেলেন। আপনাকে কী মানবে সাধারণ মানুষ? এই নীতি কিন্তু চলবে না।'

bjp West Bengal Arjun Singh Suvendu Adhikari Sukanta Majumder
Advertisment