রাজ্য সরকারের সাজানো গোয়েন্দা রিপোর্টে বিভ্রান্ত হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই কারণেই এরাজ্যে রথযাত্রার অনুমতি দেয়নি সর্বোচ্চ আদালত। যাত্রার অনুমতি না পেয়ে মঙ্গলবার বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা এই মন্তব্য করেন। এদিন দলের রাজ্য দপ্তরে তিনি বলেন, “সারা দেশে রথযাত্রা হয়েছে, হচ্ছে। কিন্তু আইন শৃঙ্খলার অজুহাত দিয়ে এখানে সেই যাত্রা হতে দিচ্ছে না রাজ্য সরকার। এরাজ্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারছে না রাজ্য সরকার। আদালতে দেওয়া সরকারের গোয়েন্দা রিপোর্ট আসলে তৈরি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।” তিনি পুলিশ মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবিও জানান।
আদালত যে গণতন্ত্র যাত্রার রায় দিতে গিয়ে কীভাবে ‘বিভ্রান্ত’ হয়েছে, তারও ব্যাখ্যা দেন রাহুলবাবু। তিনি বলেন, “আদালতকে ভুল বোঝানো হয়েছে। সাজানো, পরিকল্পিত ভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে গোয়েন্দা রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। তাতে আদালতও বিভ্রান্ত হয়েছে। বড় গণ্ডগোল, প্রাণহানী, দাঙ্গার কথা বলা হয়েছে। আদালতকে ভুল প্রমাণিত করতে দাঙ্গাও লাগিয়ে দেওয়া হবে। দেগঙ্গা ও ধূলাগড়ে তৃণমূল দাঙ্গা লাগিয়েছে, ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করেছে। তাই হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট বিভ্রান্ত হয়েছে।”
আরও পড়ুন: বিজেপি-র রথযাত্রায় অনুমতি নেই সুপ্রিম কোর্টের
রথযাত্রার বিড়ম্বনা কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না বিজেপির। সামনেই ১৯ জানুয়ারি তৃণমূল কংগ্রেসের ব্রিগেডের জনসভা। লোকসভা নির্বাচনেরও আর বেশি দেরি নেই। তাই বিজেপির ‘প্ল্যান-বি’ প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। রাহুলবাবু জানান, বুধবারই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপস্থিতিতে রাজ্য দপ্তরে বৈঠকে বসবে বিজেপি। সেখানেই পরবর্তী সভা-সমাবেশ বা পদযাত্রার কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সহ অন্যান্য বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা শিগগিরই রাজ্যে আসবেন দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে। তবে এদিন সাংবাদিক বৈঠকে সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেন বিজেপি নেতা। রথযাত্রার বিষয়ে কেন্দ্রীয় সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে জানান তিনি।
এদিন নাম না করে নোবেল জয়ী অর্থনীতিবদ অমর্ত্য সেনকে উদ্দেশ করে কটাক্ষ করেন রাহুলবাবু। তিনি বলেন, “নোবেলজয়ী বিশ্বসেরা অর্থনীতিবিদ মাথা নীচু করে বসে রয়েছেন। এখন কেন চুপ করে বসে আছেন? সব ব্যাপারে আগ বাড়িয়ে বেশি কথা বলেন। এখন একেবারে চুপ। রাজনৈতিক রং লাগিয়ে বুদ্ধিভ্রষ্ট হবেন না।” তিনি একহাত নেন রাজ্যের বুদ্ধিজীবী মহলকেও। বলেন ৪১ দিনের যাত্রা কমিয়ে ১৮ দিন করা হয়েছে তবুও ভয় পাচ্ছে রাজ্য। তাঁর প্রশ্ন, এখন বুদ্ধিজীবীরা কী বলছেন?