প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে নিয়োগের জন্য মোদী সরকার 'অগ্নিপথ প্রকল্প' চালু করার চার মাস পরে হিমাচল প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচন হতে চলেছে। অন্যান্য রাজ্যের পাশাপাশি, 'অগ্নিপথ প্রকল্প' নিয়ে ক্ষোভ উত্তাল হয়ে উঠেছিল হিমাচল প্রদেশও। ফলে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনেও ইস্যু হয়ে উঠেছে এই প্রকল্প। যা শাসক দল বিজেপির জন্য মোটেও সুখকর নয়। বিশেষ করে যে যুবশ্রেণি সেনাবাহিনীতে স্থায়ী চাকরির প্রত্যাশায় ছিল, তাঁরা আশাহত হয়েছেন। বিরোধীদের মতে, এর প্রভাব পড়তে চলেছে বিধানসভা নির্বাচনেও।
অগ্নিপথ হ'ল সশস্ত্র বাহিনীর তিনটি পরিষেবায় কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারের পদমর্যাদার নীচের সৈন্যদের নিয়োগের জন্য একটি প্রকল্প। এর অধীনে, স্থায়ী চাকরির পরিবর্তে, নিয়োগকারীদের চার বছরের জন্য নিয়োগ করা হবে। এই প্রকল্প হিমাচলের যুবক-সহ দেশের সমস্ত যুবকদের সেনাবাহিনীতে স্থায়ী চাকরির সম্ভাবনা কেড়ে নিয়েছে।
প্রতিবাদে চলতি বছরের জুনে ধর্মশালায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রোড শো চলাকালীন, কাংড়া জেলার গাগ্গাল বিমানবন্দরের কাছে পাঠানকোট-মান্ডি মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন বহু যুবক। যার জন্য পুলিশ প্রায় ৩০০ যুবকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল। আর, ওই যুবকরা পালটা প্রধানমন্ত্রীর পোস্টার ছিঁড়ে তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল।
হিমাচলের প্রায় ২.৮ লক্ষ বাসিন্দা বর্তমানে প্রতিরক্ষা পরিষেবায় রয়েছেন। কেউ আবার প্রাক্তন সৈনিক। এর মধ্যে ৮০ শতাংশই কাংড়া, উনা এবং হামিরপুর জেলার বাসিন্দা। এছাড়াও, রাজ্যজুড়ে কর্মসংস্থান এক্সচেঞ্জগুলোয় 8 লক্ষ বেকারের নাম নথিভুক্ত রয়েছে। হিমাচলপ্রদেশে রাজ্য সরকারি কর্মীর সংখ্যা ৩ লক্ষ।
আরও পড়ুন- মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ, সূচির বাইরে ফের বৈঠকে মুদ্রানীতি কমিটি
এই প্রসঙ্গে নাগরোটা বাগওয়ানের কংগ্রেস প্রার্থী রঘুবীর সিং বালি বলেন, 'নিম্ন হিমাচল আসলে পঞ্জাবের অংশ ছিল। এই অঞ্চলের লোকেরা সর্বদা দেশের সেবা করার জন্য প্রতিরক্ষা বিভাগের দিকে তাকিয়ে থাকে। কিন্তু, অগ্নিপথ প্রকল্প তাঁদের চাকরির সম্ভাবনায় মারাত্মক আঘাত করেছে। বর্তমানে এই প্রকল্পই তাই নির্বাচনে প্রধান ইস্যু হয়ে উঠেছে। কারণ কাংড়া, উনা এবং হামিরপুরের মত গ্রামগুলোয় চাকুরিজীবী এবং প্রাক্তন সেনাদের ভিড়ই বেশি। আর, সেই কারণে অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে হিমাচলবাসীর মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।'
গাগ্গাল গ্রামের বাসিন্দা কিষাণদেব রানা বলেন, 'হিমাচলে চাকরির তেমন একটা সুযোগ নেই। তার মধ্যেই যুবকরা এখনও পর্যন্ত প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে কাজ খুঁজে পাচ্ছিল। আপনি যদি এই জেলার গ্রামে যান, প্রাক্তন সেনাদের দ্বারা নির্মিত অনেক গোছানো বাড়ি দেখতে পাবেন। তাঁরা এজন্য নিজেদের সম্মানিত বোধ করেন। এছাড়াও আপনি অনেক যুবককে হিমাচলের রাস্তায় ব্যায়াম করতে দেখবেন। যা তাঁদের মধ্যে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে পরিষেবার জন্য শারীরিক ফিটনেস তৈরি করছে। অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে তাঁদের উচ্চাভিলাষ ধাক্কা খেয়েছে। চার বছর পর তাঁরা রাজ্যে ফিরবেন। এটা মোটেও কোনও ভালো প্রকল্প নয়।'
Read full story in English