আক্রান্ত হলো বিশ্বের দরবারে সম্ভবত ভারতের সর্বাধিক পরিচিত সৌধ -- আগ্রার তাজ মহল, যা কিনা UNESCO ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ মনুমেন্টও বটে। সংবাদ সূত্রের খবর, VHP অথবা বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কিছু সদস্য গত রবিবার তাজ মহলের পশ্চিমদিকের গেট ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে। তাদের দাবি, তাজ মহলের জন্য একটি বিশেষ এলাকা ঘিরে দিতে গিয়ে নিকটবর্তী ৪০০ বছরের পুরোনো এক শিব মন্দিরে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে Archaeological Survey of India (ASI)।
ঘটনাটির ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় VHP কর্মীরা স্লোগান দিতে দিতে হাতুড়ি এবং লোহার রড দিয়ে বাসাই ঘাটে পশ্চিম গেটটি ভাঙার চেষ্টা করছে, এবং একইসঙ্গে ASI-এর বসানো টার্নস্টাইল গেটটি সরিয়ে দিচ্ছে। পুলিশের বক্তব্য, উত্তেজিত কর্মীরা মানতে রাজি হয় নি যে বাসাই ঘাটেই মন্দিরে পৌঁছনোর একটি বিকল্প পথ রয়েছে।
ASI গোটা ঘটনার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করবার পর VHP-র পাঁচজন কর্মী - রবি দুবে, মদন ভার্মা, মোহিত শর্মা, নিরঞ্জন সিং রাঠোর, ও গুল্লা - এবং তাদের ২০-২৫ জন অজ্ঞাতপরিচয় সহযোগীর বিরুদ্ধে FIR নথিভুক্ত করা হয়, যদিও এখন পর্যন্ত কোন গ্রেফতারের খবর পাওয়া যায় নি। "রবিবার VHP-র ২৫-৩০ জন কর্মী পশ্চিম গেটে এসে হাজির হন এবং টিকেট পরীক্ষা করার জন্য বসানো নতুন টার্নস্টাইল গেটটিতে আঘাত করতে থাকে। তাদের হাতে হাতুড়ি আর লোহার রড ছিল। গেটটি সরিয়ে প্রায় ৫০ মিটার দূরে ছুড়েও ফেলে দেয়। তাজ সেফটি পুলিশ টিম দ্রুত সেখানে পৌঁছে তাদের বাধা দেয়," বলেছেন তাজ সেফটি সার্কেল অফিসার প্রভাত কুমার।
আরও পড়ুন: ‘দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারী কর্মচারীদের চেয়ে নাচিয়ে মেয়েরা ভাল’, দাবি বিজেপি নেতার
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক বয়ানে VHP-র রবি দুবে জানান, তারা বাধ্য হয়েই এই পদক্ষেপ নিয়েছেন, কারণ ASI তাজ মহলের চারপাশ থেকে হিন্দু সংস্কৃতির সমস্ত নিদর্শন মুছে ফেলার চেষ্টা করছে। তাঁর বক্তব্য, "বছর পনেরো আগে পর্যন্ত পশ্চিম গেটে সহেলি কা বুর্জে সৎসঙ্গ হত, কিন্তু সেটা বন্ধ হয়ে যায়। তাজ মহলের কাছে দশেরা মেলাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। আগে এখানে একটা আমলকি গাছের কাছে আমলা নবমী পালিত হত, ASI সেই গাছটিও কেটে ফেলে। এই সবই হয় সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজ পার্টির আমলে। আমরা এটা হতে দিতে পারি না।"
দুবে এও বলেন, যে ASI যতই বলুক শিব মন্দিরে যাওয়ার বিকল্প রাস্তা রয়েছে, সেই পথ এতই অপরিসর যে সেখান দিয়ে স্বাভাবিকভাবে হাঁটা অসম্ভব। তাঁর দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্বন্ধে তাঁর বক্তব্য, জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে ASI-এর সঙ্গে আলোচনায় বসেছে, যার ফলে আশা করা যায় বিষয়টি শান্তিপূর্নভাবেই মিটে যাবে।