মঙ্গলবার তাঁকে লখনৌ থেকে প্রয়াগরাজ (কিছুদিন আগে পর্যন্ত এলাহাবাদ) গামী বিমানে উঠতে সরকারের তরফ থেকে বাধা দেওয়া হয়েছে, এই দাবী করে আজ দুপুরে টুইটারে মুখ খোলেন সমাজবাদী পার্টির নেতা তথা উত্তর প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিক্রিয়া দিলেন উত্তর প্রদেশের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। শুরু হয়ে গেল বাকযুদ্ধ। এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন অখিলেশ। আদিত্যনাথের বক্তব্য, অখিলেশের উপস্থিতির কারণে হিংসা ছড়াতে পারে। অখিলেশের জবাব, "নিজেদের নার্ভাসনেস লুকোতে চাইছে" বিজেপির নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার।
আজ কলকাতা বিমানবন্দরে দিল্লির বিমান ধরার আগে ঘটনা সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, "বিনাশকালে বুদ্ধিনাশ হচ্ছে বিজেপির। গণতন্ত্রে এমন স্বৈরাচার আগে কখনও দেখা যায়নি। দেশের একতাকে নষ্ট করছে, ঘৃণার রাজনীতি করছে। এজেন্সির অপব্যবহার করছে ওরা। কাউকে কোথাও যেতে দেওয়া হচ্ছে না। অখিলেশকে আটকানো হল। জিগ্নেশ মেওয়ানির সঙ্গেও এমনটা করা হল। ধিক্কার জানাচ্ছি।" দিল্লিতে অবতরণ করেও একই কথা বললেন তিনি।
আরও পড়ুন, কংগ্রেসের সঙ্গেও জোট? অখিলেশের মন্তব্যে তুমুল জল্পনা
প্রয়াগরাজের জেলা শাসক (ডিএম) এবং পুলিশের সিনিয়র সুপারিন্টেনডেন্ট (এসএসপি) লখনৌয়ের ডিএম এবং এসএসপি-কে চিঠি দিয়ে জানান, এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেষ্টা কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে অনুষ্ঠানে কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে আমন্ত্রণ জানানো হবে না। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আদিত্যনাথ বলেন, এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্র সংগঠনগুলির মধ্যে অখিলেশের উপস্থিতি হিংসা ছড়াতে পারত। তাঁর দাবী, "এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় সরকারের কাছে আবেদন জানায়, অখিলেশকে যেন আটকে দেওয়া হয়। সেইমতোই কাজ করেছে সরকার।"
![]()
তাঁর টুইটে অখিলেশ লেখেন, "কোনও লিখিত নির্দেশ ছাড়াই আমাকে বিমানে উঠতে বাধা দেওয়া হয়। আপাতত আমি লখনৌ বিমানবন্দরে আটক। স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে, সামান্য একজন ছাত্র নেতার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানকেই কতটা ভয় পাচ্ছে সরকার। বিজেপি জানে, আমাদের এই মহান দেশের যুব সমাজ এই অবিচার আর মেনে নেবে না!"
আরও পড়ুন: কংগ্রেসের সঙ্গেও জোট? অখিলেশের মন্তব্যে তুমুল জল্পনা
অখিলেশকে প্রধান অতিথি করতে চেয়ে তাঁকে নিমন্ত্রণ পত্র পাঠান এলাহাবাদ ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সদস্যরা। তাঁর ব্যক্তিগত সচিব গঙ্গারামের কাছে এই মর্মে চিঠিও লেখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। কিন্তু এদিকে আদিত্যনাথ দাবী করছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফেই অখিলেশকে আটকানোর আবেদন জানানো হয়েছে।
ঘটনার প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বহুজন সমাজ পার্টির প্রধান তথা সমাজবাদী পার্টির জোট-সঙ্গী মায়াবতী টুইটারে বলেছেন, এই পদক্ষেপের দ্বারা বিজেপি সরকার তাদের একনায়কতন্ত্র এবং অগণতান্ত্রিক মনোভাবের পরিচয় দিল। অখিলেশ জানিয়েছেন, "যদি সত্যিই কোনও সমস্যা থাকত, সেখানকার পুলিশ আপত্তি জানাত, বা আমার শিডিউল পাল্টাতে বলত। মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বা জনগণের সম্পত্তির সুরক্ষার ব্যাপারটা আমি খুব ভালমতো বুঝি। কখনোই এমন কিছু করব না, যার দ্বারা এই দুটি জিনিস বিপন্ন হয়।" তিনি আরও বলেন, "আমি উত্তর প্রদেশের যুব সমাজের পাশে রয়েছি, তাঁরাও আমার পাশে রয়েছেন। আজ আমি আবেদন জানাচ্ছি, সবাই এগিয়ে এসে হাতে হাত মেলান। কাউকে ভোটে হারাতে নয়, কিন্তু সেই আদর্শকে হারাতে, যা আমাদের দেশের সুন্দর নকশাকে ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে।"