বাংলার মুখ্যসচিব আইএস আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে তলব করল কেন্দ্র। কেন্দ্রের তরফে চিঠিতে জানানো হয়েছে ৩১ মে-র মধ্যে নয়া দিল্লির নর্থ ব্লকে কর্মিবর্গ মন্ত্রকে তাঁকে হাজিরা দিতে হবে। ওই দিনই তাঁর কর্মজীবনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। যদিও কোভিড পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের কাছে তাঁর কর্মজীবনের মেদা বৃদ্ধির আবেদন জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই আর্জি মেনে নেয় মোদী সরকার। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মজীবনের মেয়াদ ৩ মাস বাড়ানো হয়েছিল। ফলে মুখ্যসচিব হিসাবে কাজ চালিয়ে যেতে কোনও বাধা ছিল না তাঁর।
কিন্তু, আলাপনবাবুকে জরুরি ভিত্তিতে মধ্যে নয়া দিল্লির নর্থ ব্লকে হাজিরার নির্দেশ জল্পনা বাড়ালো। এই দিন কর্মিবর্গ মন্ত্রকে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে আন্ডার সেক্রেটারি অংশুমান মিশ্র আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছেন, ক্যাবিনেট কমিটি অফ অ্যাপয়েন্টমেন্ট আপনার কর্মস্থল পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় অ্যাডমেনিস্ট্রিটিভ সার্ভিস রুল অনুযায়ী এই পদক্ষেপ করা হয়।
উল্লেখ্য, শুক্রবার কলাইকুণ্ডা বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ডাকা ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনা বৈঠকে হাজির থাকার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু দু'জনের কেউই ওই বৈঠকে যোগ দেননি। মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকের আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিপর্যয়ে ক্ষয়ক্ষতির খতিয়ান পেশ করেন। এর কয়েকঘণ্টার মধ্যে আলাপনবাবুকে দিল্লিতে তলব করল কেন্দ্র।
প্রশ্ন উঠছে করোনা-ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের জোড়া বিপর্য়য়ে সঙ্গে যখন লড়ছে রাজ্য, তখনই কেন রাজ্যের মুখ্যসচিবকে দিল্লিতে ডেকে নিল কেন্দ্র।
আরও পড়ুন- বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন মমতা
এরফলে কেন্দ্র রাজ্য সংঘাত ফের মাথাচাড়া দিল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। ইতিমধ্যেই তৃণমূলের তরফে কেন্দ্রীয় এই পদক্ষেপকে 'রাজনৈতিক প্রতিহিংসা' বলে দাবি করা হয়েছে। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'ভোটে হারার পরে যত রকম ভাবে নোংরামো করা যায় ওরা সেটাই করছে।' পাল্টা বিজেপির রাজ্য সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, 'আইএস অফিসাররা আদতে কেন্দ্রের অধীনেই কাজ করেন। এই বিষয়টির প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।'
এখন দেখার কেন্দ্রীয় নির্দেশ মেনে রাজ্য সরকার আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছেড়ে দেয় কিনা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন