বদলে গেল বিজেপির কর্মসূচি। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার পরিবর্তে সফরে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ৫ ও ৬ নভেম্বর মেদিনীপুর ও বর্ধমানে সাংগঠনিক বৈঠক করার কথা রয়েছে অমিত শাহর। বিস্তারিত কর্মসূচি তৈরি করতে বৈঠকে বসেছে বিজেপি নেতৃত্ব।
পুজোর আগে উত্তরবঙ্গে আসার কথা ছিল প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর। শারীরিক অসুস্থতার কারণে সেই সফর বাতিল হয়ে যায়। উত্তরবঙ্গে সাংগঠনিক বৈঠক করতে আসেন জেপি নাড্ডা। ফের নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দক্ষিনবঙ্গ সফরে আসার কথা ছিল জেপি নাড্ডার। নাড্ডার সফরের প্রস্তুতি বৈঠক করতে শুক্রবার বর্ধামানে গিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সহসভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। তারপরই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছে নাড্ডা নয় বঙ্গে আসবেন অমিত শাহ।
কেন্দ্রীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা থাকলেও কেন অমিত শাহ? বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, নাড্ডা সভাপতি হলেও বঙ্গ বিজেপির সংগঠনকে হাতের তালুর মত চেনেন অমিত শাহ। দলের ছোট-বড়-মাঝারি নেতৃত্বের কর্ম পদ্ধতি তিনি অন্যদের থেকে অনেকটাই বেশি জানেনও। তাছাড়া বিজেপির বাংলা অভিযানের ক্ষেত্রেও অমিত শাহর ভূমিকা রয়েছে। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের রণকৌশলের কাণ্ডারি ছিলেন দলের তৎকালীন সভাপতি। রাজনীতিতে অমিত শাহ অনেকটাই আক্রমনাত্মক। বিজপি সূত্রে খবর, ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের কৌশল রচনা করবেন স্বয়ং অমিত শাহ।
বিজেপির রাজ্য সধারাণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, "দলের সভাপতি জেপি নাড্ডার বদলে ৫ ও ৬ নভেম্বর রাজ্যে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমতি শাহ। শারীরিক অসুস্থতার কারণেই তাঁর এরাজ্যে আসার ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছিল। সাংগঠনিক বৈঠক করবেন তিনি।"
আরও পড়ুন- লগ্নির লক্ষ্যে লক্ষ্মীপুজোতেই বাংলায় শিল্প সম্মেলনের ঘোষণা বিজেপির
রাজ্য বিজেপির একাংশের বক্তব্য, সম্প্রতি সাধারণ সম্পাদক(সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে অমিতাভ চক্রবর্তীকে নিয়ে আসা। দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক নেতা শিবপ্রকাশজির সক্রিয়তা বেড়েছে এই রাজ্যে। এমনকী রটনা শুরু হয়ে যায় রাজ্য সভাপতি পদত্যাগ করতে পারেন। তারওপর দলের অপর নেতৃত্বের রাজ্যে শিল্প সম্মেলন ঘোষণা করা। রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁয়ের সঙ্গে যুব সংগঠনের কমিটি নিয়ে প্রকাশ্যে দিলীপ ঘোষের বিরোধ। তৃণমূল বিরোধী আন্দোলন জারি থাকলেও রাজ্য বিজেপিতে নানা ধরনের বিভ্রান্তি রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা।
অভিজ্ঞ মহলের মতে, রাজ্যে বিজেপির এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে অমিত শাহর। রাজ্য নেতাদের কোথায় খামতি আছে না আছে তিনি অবগত রয়েছেন। তাছাড়া তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ভোকাল টনিক দেওয়ার টেকনিকও তাঁর জানা। যখন রাজ্যে বিজেপি সাংগঠনিক ভাবে এখনকার মত শক্তিশালী ছিল না তখন তিনি বলেছিলেন, "মমতা সরকারকো উখারকে ফেক দেনা চাহিয়ে।" তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গেলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে তা সার বুঝেছে বিজেপির কেন্দীয় নেতৃত্ব। শেষমেশ তাই নাড্ডার বদলে অমিত শাহ আসছেন রাজ্যে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন