তৃণমূলের দোর্দন্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মন্ডলের গড়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর র্যালির ভিড় দেখে উৎসাহিত গেরুয়া শিবির। তৃণমূল নেতৃত্ব এক্ষেত্রেও বহিরাগত তত্ব খাঁড়া করেছে। তবে তা মানতে নারাজ বিজেপি। বরং গেরুয়া বাহিনীর দাবি, বীরভূম জেলার তৃণমূল নেতৃত্বের বিক্ষুব্ধদের একাংশ তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের পাঠিয়েছে এই র্যালিতে ভিড় বাড়াতে। সেক্ষেত্রে রাজ্যের এক মন্ত্রী, জেলা নেতৃত্বের একাংশ ও জেলার পুরসভাগুলির কয়েকজন কাউন্সিলরও রয়েছেন সেই তালিকায়। কাকার গড়ে ভাইপোর শক্তি প্রদর্শন নিয়ে চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে।
রবিবারের র্যালির জনজোয়ার নিয়েই যাবতীয় বিতর্ক বেধেছে। তৃণমূলের বহিরাগত তত্ব উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। এই কর্মসূচি রূপায়ণে বিশেষ দায়িত্বে ছিলেন বোলপুরের প্রাক্তন সাংসদ তথা দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। বিজেপির চানক্য কোথায় যাবেন, কী করবেন সবটাই সামলেছেন তিনি। পাঁচ দিন ধরে পড়েছিলেন বোলপুরে। তৃণমূলে থাকাকাললীন অনুব্রত মন্ডলের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল অনুপমের। সম্পর্ক ছিল 'কাকা-ভাইপোর'। পরে তৃণমূল অনুপমকে বহিস্কার করে।
আরও পড়ুন- এরকম রোড শো আগে দেখিনি, বিজেপিই এবার সরকার গড়বে : অমিত শাহ
বীরভূমে অমিত শাহর র্যালিতে জমায়েত করা বিজেপির কাছে ছিল রীতিমতো চ্যালেঞ্জিং। র্যালিতে ভিড় দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন স্বয়ং অমিত শাহ। বোলপুরের র্যালিতে ভিড় হবে কী না তা নিয়ে বিজেপি নেতৃত্ব প্রথমে একটু ধন্দেই ছিল। অবশেষে অনুব্রতর গড়ে জনস্রোত দেখে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। র্যালিতে জনজোয়ারের জন্য জেলার তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের একাংশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন অনুপম হাজরা।
আরও পড়ুন- ‘বহিরাগতদের এনে মিছিল করেছে বিজেপি’, দাবি অনুব্রতর
অনুপম হাজরা বলেন, "পাঁচ দিন ধরে মাটি কামড়ে পড়েছিলাম। চ্যালেঞ্জ তো ছিলই।" অনুপমের দাবি, "বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি এই র্যালিতে ভিড় জমিয়েছেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরাও। এই জেলার বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতৃত্ব নিজেরা আসতে না পারলেও তাঁদের অনুগামীদের পাঠিয়েছেন এই র্যালিতে। সেই তালিকায় রাজ্যের মন্ত্রী থেকে জেলার শীর্ষ স্তরের নেতৃত্বও যেমন রয়েছেন, আছেন তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলররাও। অমিতজি নিজেও বলেছেন এমন র্যালি কম দেখেছেন।" প্রাক্তন এই সাংসদের দাবি, "বোলপুরের বেশ কয়েকজন তৃণমূল কাউন্সিলর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন।
এবার দুদিনের বাংলা সফরে মেদিনীপুর ও বীরভূমকে বেছে নিয়েছেন দলের প্রাক্তন সভাপতি অমিত শাহ। মেদিনীপুরে জনসভা হয়েছিল শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে যোগদানকে কেন্দ্র করে। অন্য দিকে বীরভূমের বোলপুরকে বেছে নেওয়া হয়েছিল এক ঢিলে দুই পাখি মারতে। একদিকে বাঙালী বিরোধী তকমা ঝেড়ে ফেলার পাশাপাশি অনুব্রত মন্ডলের গড়ে ঝাঁকুনি দিতে। অমিত শাহর র্যালি দেখে বোঝার উপায় নেই বিধানসভা নির্বাচন এখনও ঘোষণা হয়নি। পুরোদস্তুর ভোটপ্রচার সারলেন অমিত শাহ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন