বঙ্গ সফরের দু'দিনই আদিবাসী ও মতুয়া পরিবারের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজন সেরেছেন অমিত শাহ। যা নিয়ে যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যেয়র তোপের মুখে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদের কটাক্ষ, তফসিলি ও সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলিকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করছেন শাহ।
শুক্রবার টুইটে অমিত শাহকে বিঁধে অভিষেক লিখেছেন, ' তফসিলি ও সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলিকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এমনকী ওই পরিবারগুলোর সঙ্গে একবারও কথা বলারও প্রয়োজন বোধ করা হয়নি। এটাই অমিত শাহের মধ্যাহ্নভোজনের নেপথ্যের বাস্তব। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী- আপনি কি শুধু ছবি তুলতে এখানে এসেছেন?'
দলীয় কর্মসূচিতে দু'দিনের সফরে বাংলায় এসেছেন অমিত শাহ। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ায় গিয়ে আদিবাসী এর পরিবারের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ করেন শাহ। শুক্রবারও কলকাতায় মতুয়া এক পরিবারের বাড়িতে দুপুরের খাওয়ার খান তিনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শাহের হাত ধরেই রাজ্যে ফের শুরু হল ‘মধ্যাহ্নভোজন রাজনীতি’।
বছর তিন আগে তৎকালীন সর্বভারতীয় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকে নিজের হাতে রান্না করে খাইয়েছিলেন নকশালবাড়ির আদিবাসী চা শ্রমিক গীতা মাহালি। কিন্ত তারপর থেকেই বিজেপির কোনও নেতা মাহালি পরিবারের খবর নেননি বলে অভিযোগ। রীতিমত রাজনৈতিক দড়ি টানাটানির শিকার হন মালালিরা। শাহের সফরের মধ্যেই বৃস্পতিবার সেই গীতা মাহালিকে হোমগার্ডে চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছে রাজ্য সরকার।
এবারও সেই উপেক্ষার কথাই আফশোসের সুরে ফুটে উঠেছে বাঁকুড়ার আদিবাসী বিভীষণ হাঁসদার কথায়। এই বিভীষণের বাড়িতেই বৃস্পতিবার মধ্যাহ্নভোজন সেরেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। খাওয়া-দাওয়ার পাশাপাশি বাড়ির সদস্যদের নিয়ে গ্রুপ ছবি তোলেন। চারিদিক থেকে ক্যামেরার ঝলকানির শব্দে তখন মুখরিত আদিবাসী পাড়া। সব মিটতেই বিভিষণ হাঁসদা বলেন, “সময় আর কোথায়! কথাই হল না তো। চাইবার তো ছিল। এখন আর বলে কী হবে।”
গত লোকসভায় এ রাজ্যে আদিবাসী, দলিতের ভোটে প্রভাব ফেলেছিল বিজেপি। লোকসভার সেই ধারা বজায় রাখতে মরিয়া শীর্ষ এই বিজেপি নেতা। কিন্তু, প্রতিপক্ষের 'চাণক্য'র মধ্যাহ্নভোজন যে আসলে লোক দেখানো এ দিন সেই বার্তাই তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন তৃণমূল যুব সভাপতি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন