শনিবার পুরুলিয়ার বলরামপুর থানা অঞ্চলে ফের উদ্ধার হল এক বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত মৃতদেহ। দুলাল দাস নামক এই দলীয় কর্মীর দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় বলরামপুরের দাভা গ্রামের এক হাই-টেনশন বৈদ্যুতিক খুঁটিতে। প্রসঙ্গত, ঠিক তিনদিন আগেই পাওয়া গেছিল ত্রিলোচন মাহাতো নামক ১৮ বছর বয়সী যুবকের ঝুলন্ত দেহ। উল্লেখ্য, ত্রিলোচনও বিজেপি যুবগোষ্ঠীর সদস্য ছিলেন। ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, "দুলাল দাসের মৃতদেহ ইতিমধ্যেই পোস্ট মর্টেমের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে তবেই এই বিষয়ে আমরা বিশদে জানাতে পারব।"
বিজেপির জাতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা এই ঘটনার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসকে দায়ী করে সিবিআই তদন্তের দাবী জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "রহস্যজনকভাবে, ত্রিলোচন মাহাতোর মতই আজ আরও একজন বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা এই দুটি ঘটনার নিরপেক্ষ নিষ্পত্তির জন্য সিবিআই তদন্তের দাবী জানাচ্ছি।" এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) অনুজ শর্মা জানিয়েছেন এই দুটি ঘটনার জন্য ইতিমধ্যেই সিআইডি তদন্তের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: পুরুলিয়ায় ঝুলন্ত মৃতদেহ, বিজেপি-তৃণমূল চাপানউতোর
সূত্রের খবর, দুলাল শুক্রবার রাত থেকেই নিঁখোজ ছিল। স্থানীয় বিজেপির দাবী, দলের একটি প্রতিবাদ র্যালিতে অংশ নেওয়ার জন্যই তৃণমূল কর্মীরা দুলালকে খুন করেছে। ঘটনা প্রসঙ্গে এক স্থানীয় বিজেপি কর্মী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, "ত্রিলোচন মাহাতো হত্যার প্রতিবাদ মিছিলে দুলালও ছিল। মিছিল শেষে বাড়ি ফিরবার পর ব্যক্তিগত কাজে সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেনি। ওর মোবাইলে বারবার ফোন করলে তা কেটে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় কিছু মানুষ একটি পুকুরপাড়ে দুলালের মোটরবাইকটি পড়ে থাকতে দেখেন এবং সকাল ৫.৪৫ নাগাদ ওর ঝুলন্ত মৃতদেহ শনাক্ত করে।"
এই ঘটনার পরপরই মুকুল রায়-সহ বিজেপির বেশ কিছু রাজ্যস্তরের নেতা বলরামপুর পাড়ি দিয়েছেন। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এই জোড়া খুনকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়েছেন। তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন এপ্রসঙ্গে ট্যুইট করে লেখেন, "আমরা এই নৃশংস হত্যা দুটির তীব্র নিন্দা করছি এবং পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের দাবী জানাচ্ছি। এই ঘটনা দুটিতে ঝাড়খন্ড সীমান্ত, বজরং দল, মাওবাদী এবং বিজেপির ভূমিকা কতখানি তা জানতে অনেকেই বেশ আগ্রহী।"
প্রসঙ্গত, গত বুধবার ত্রিলোচন মাহাতোর রহস্যমৃত্যুর পর সেদিন সন্ধ্যায় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ ট্যুইট করে বলেন, "বর্তমান সরকারের (তৃণমূল) রাজ্যজুড়ে সন্ত্রাস বাম জমানাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে।"