Advertisment

গেরুয়াঝড়ের হাওয়াতেই কি কাজলকে কাছে টানলেন অনুব্রত?

"দলের সংগঠন নিয়ে আলোচনা হয়েছে, জেলা সভাপতি ডেকেছিলেন তাই এসেছি। আমার মনে হয় না কোনও দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। কেষ্টদার সঙ্গেই ছিলাম, আছি।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
anubrata mondal, kajan sheikh, অনুব্রত মণ্ডল, কাজল শেখ

অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখ।

লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় গেরুয়া ঝড়ে ‘তছনছ’ হয়েছে তৃণমূল। মমতার দলে ভাঙন ধরিয়েছে বিজেপি। সেইসঙ্গে মোদীর ৪০ বিধায়ক ভাঙানোর হুঁশিয়ারি তো রয়েইছে। সব মিলিয়ে এখন দলের দুর্গ রক্ষা করাই চ্যালেঞ্জ ঘাসফুল শিবিরের। বঙ্গে বিজেপির ‘দৌরাত্ম্য’ রুখতে তাই কি এবার ‘ঘরোয়া কোন্দল’ মিটিয়ে হাতে হাত ধরছেন অনুব্রত মণ্ডল-কাজল শেখরা? ভোট মিটতেই বীরভূমের নানুরে তৃণমূলের দাপুটে নেতা কাজল শেখকে ডেকে পাঠালেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। দলের সভাপতির ডাকে অনুব্রতর বাড়িতে গিয়ে সোমবার বৈঠকও করেছেন কাজল শেখ। সূত্র মারফৎ এমনটাই জানা যাচ্ছে। আর এ খবর ঘিরেই চর্চা শুরু হয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে। তবে কি শেষপর্যন্ত অনুব্রত ও কাজলের মধ্যে ‘তিক্ত’ সম্পর্ক ‘মধুর’ হল?

Advertisment

আরও পড়ুন: অনুব্রত মণ্ডল কি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন? অনুপমের বিস্ফোরক মন্তব্যে জল্পনা

সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, সোমবার কাজল শেখকে বাড়িতে ডেকে পাঠান অনুব্রত মণ্ডল। তৃণমূলের জেলা সভাপতির ডাকে সাড়া দিয়ে অনুব্রতর বাড়িতে যান কাজল। দুই নেতার মধ্যে এদিন বৈঠক হয়েছে। ভোটের আগেও অনুব্রত-কাজলের মধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে বলে খবর। কাজল শেখের নামে একাধিক মামলা ঝুলছে। সেই মামলা থেকে অব্যাহতি পেতেই কাজল অনুব্রতর দ্বারস্থ হয়েছেন বলে দাবি আরেক সূত্রের। অন্যদিকে, কাজল শেখকে দলে কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হতে পারে বলেও জানা গিয়েছে।

এদিনের বৈঠক প্রসঙ্গে কাজল শেখ বলেন, "দলের সংগঠন নিয়ে আলোচনা হয়েছে, জেলা সভাপতি ডেকেছিলেন তাই এসেছি। আমার মনে হয় না কোনও দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। কেষ্টদার সঙ্গেই ছিলাম, আছি। দাদা নির্দেশ দিয়েছেন মানুষকে ফের বোঝাতে, আবার বোঝাব।"

প্রসঙ্গত, বীরভূম অনুব্রতর এলাকা হলেও নানুরে অনুব্রতর কোনও ‘প্রভাব’ খাটে না। বীরভূমের এই এলাকার বেতাজ বাদশা কাজল শেখই। চতুর্থ দফার লোকসভা নির্বাচনের সকালে তুলকালাম পরিস্থিতি তৈরি হয় নানুরে। তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে সেদিন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কাজল শেখের গড়। বাঁশ-লাঠি নিয়ে তাণ্ডব করতে দেখা যায় গ্রামবাসীদের একাংশকে। এ ঘটনায় এক বিজেপি সমর্থকের হাত ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত এক মহিলার বাড়ির সামনেও এদিন লাঠি-বাঁশ নিয়ে চড়াও হন গ্রামবাসীদের একাংশ। ক্ষুব্ধ এই গ্রামবাসীরা নিজেদের বিজেপি কর্মী-সমর্থক বলে দাবি করেন। কিন্তু ভোটের মুখে কাজল শেখের কার্যত কোনও হদিশই পায় নি সংবাদমাধ্যম। ভোটের আগে বেশ কয়েকদিন ধরে বেপাত্তা ছিলেন কাজল। ঘটনাবলী দেখলেই নানুরে কাজলের আধিপত্য এবং অনুব্রতর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের রসায়ন টের পাওয়া যায়। ভোট মেটার পর এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর বৈঠক ঘিরে জোর চর্চা রাজ্য রাজনীতিতে।

অন্যদিকে, অনুব্রত মণ্ডলের দাপটে বীরভূম নিয়ে বরাবরই নিশ্চিন্তে থাকেন দলীয় নেতৃত্ব। কিন্তু এবারের নির্বাচনে বীরভূমের দুই লোকসভা কেন্দ্র নিজেদের দখলে রাখলেও 'আশানরূপ' ফল হয়নি তৃণমূলের। বিধানসভা ভোটের ফলাফলের নিরিখে অনেকটাই ভাল ফল করেছে বিজেপি। লাল মাটির রাজ্যে বিজেপির এই ‘বাড়বাড়ন্ত’ নিয়েই কপালে ভাঁজ পড়েছে তৃণমূলের কেষ্টর। সে কারণেই সব দ্বন্দ্ব দূরে সরিয়ে কাজল শেখকে কাছে টেনে নিলেন অনুব্রত, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

anubrata mondal tmc
Advertisment