২০২১ বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তী হিংসায় ভাটপাড়ার ইস্ট ঘোষপাড়ার বিজেপি কর্মী জয়প্রকাশ যাদব নিহত হয়েছিলেন। দুষ্কৃতীরা তাঁর মাথা লক্ষ্য় করে বোমা ছুড়েছিল। এই ঘটনার পর এখনও চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটছে জয়প্রকাশ যাদবের পরিবারের। দুই সন্তানকে নিয়ে কোনওরকমে সংসার টেনে চলেছেন জয়প্রকাশের স্ত্রী সঙ্গীতা যাদব। ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন এই খবর শুনে খুবই দুঃখ পেয়েছেন সঙ্গীতা দেবী। আদপে তিনি বুঝতে পারছেন না এবার তাঁর লড়াইয়ের কী হবে। আদৌ তিনি অর্জুন সিংয়ের কাছ থেকে আর সাহায্য পাবেন কীনা।
৭ বছরের অনুজ ও ৫ বছরের অনুষ্কাকে নিয়ে লড়াই চালাচ্ছেন জয়প্রকাশ যাদবের স্ত্রী সঙ্গীতা যাদব। শ্বশুরের সামান্য রোজগার ও চেয়ে-চিন্তে সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন সঙ্গীতা। একই বাড়িতে থাকেন জয়প্রকাশের বাবা মিশ্রিলাল ও মা রাজমতী যাদব। জয়প্রকাশ যাদব খুন হওয়ার পর দলের অন্য নেতাদের সঙ্গে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন অর্জুনপুত্র ভাটপাড়ার বিধায়ক পবন সিং। সঙ্গীতাদেবীর পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন পবন সিংও। বিজেপি করতে গিয়ে স্বামী খুন হয়েছেন অথচ দলীয় সাংসদ অর্জুন সিং এখন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় মানসিক ভাবে মেনে নিতে পারছেন না সঙ্গীতা।
আরও পড়ুন- ভাটপাড়া থেকে দিল্লি, অর্জুনের চমকপ্রদ রাজনৈতিক ক্যারিশ্মা, দেখুন একনজরে
বছর আটাশের সঙ্গীতা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, 'সাংসদ অর্জুন সিং তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন এই খবরে আমি ভীষণ দুঃখ পেয়েছি। সাংসদের সঙ্গে আমি দেখা করব। জানি না তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পর তিনি আমার কাজ করবেন কীনা। তবে তিনি তো বলেছেন দল বদলালেও কাজ করবেন।' তাঁর প্রশ্ন, 'অর্জুন সিং তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। কী আর করব। আমাদের পিছনে তো কেউ নেই। বিজেপি থেকে অন্য দলে যাওয়ার পর তিনি কি পাশে দাঁড়াবেন? আপনি বলুন।' তিনি নিশ্চিত হতে পারছেন না বিজেপি সাংসদ তৃণমূলে গিয়ে তাঁর পাশে দাঁড়াবেন কীনা।
আরও পড়ুন- অভিষেকের অফিসে ঢুকলেন অর্জুন, আজই ফুলবদলের জোরাল সম্ভাবনা
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের পর নির্বাচন পরবর্তী হিংসা নিয়ে সোচ্চার হয়েছে বিজেপি। রাজ্যের বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক হিংসার ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চলছে। এদিকে হঠাৎ পাটচাষীদের হয়ে অর্জুন সিং গলা ফাটানো শুরু করায় রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়ে যায়। তারপর একবার দিল্লি একবার কলকাতা যাতায়াত শুরু করেন অর্জুন। পুরভোটের মুখে অর্জুনের ডান হাত ভাটপাড়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৌরভ সিং তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। মুখে মমতা বন্দনাও শুরু করে দেন তৃণমূলের প্রাক্তনী। তখন থেকেই সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করে ব্যারাকপুরে অঞ্চলে নির্বাচন পরবর্তী হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত বিজেপি কর্মীরা।
অভিজ্ঞ মহলের মতে, রাজনৈতিক হিংসার শিকার হতে হয় সাধারণ দলীয় কর্মীদের। রাজনীতি করতে গিয়ে সংসার তছনছ হয়ে যায়। নেতৃত্বস্থানীয়রা জার্সি বদল করার সময় লড়াকু কর্মী সমর্থকদের কথা মাথায় রাখে না।