শাসক-বিরোধী বাদুনাবাদে মঙ্গলবার প্রথম থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন। এদিন বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণের উপর জবাবি ভাষণ দেন বিধায়করা। বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অধিবেশন শুরু করতেই বিরোধী দলের তরফে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব আনার আর্জি জানানো হয়। তবে, অধ্যক্ষ সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেন। এর পরই বিধানসভার অন্দরে বিজেপি বিধায়করা বিক্ষোভ শুরু করেন।
'মুখ্যমন্ত্রী হেরেছেন-দল জিতেছে', গেরুয়া বিধায়করা এই মন্তব্য করতেই হইচই বাঁধে অধিবেশন কক্ষে। প্রতিবাদে মুখর হন তৃণমূল বিধায়করা। তখনই অধ্যক্ষের কাছে গিয়ে হস্তক্ষেপের দাবি করেন আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। এরপরই বিষয়টিকে 'বিচারাধীন' বলে মন্তব্য করেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই অধিবেশন বয়কট করে বিজেপি। সাংবাদিকদের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'স্পিকার দলদাসে পরিণত হয়েছেন। এরকম আগে দেখিনি।'
কী বলেছেন শুভেন্দু?
এদিন অধিবেশনের শুরু থেকেই শাসক শিবিরকে নিশানা করেন বিজেপি বিধায়করা। 'মুখ্যমন্ত্রী হেরেছেন-দল জিতেছে' বলে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। তৃণমূল প্রতিবাদ করেলে বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। আইনমন্ত্রী স্পিকারের কাছে গিয়ে কিছু বলেন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, 'তখন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন এটা বিচারাধীন বিষয়।' যা দলদাসের মতো আচারণ বলে দাবি করেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর কথায়, 'এরকম দলদাস স্পিকার আগে দেখিনি। স্পিকার শাসক দলের প্রতি দুর্বলতা দেখাচ্ছেন।'
এরপরই রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সরব হন বিরোধী দলনেতা। বলেন, 'ভোটের পরও রাজ্যজুড়ে হিংসা জারি রেখেছে তৃণমূল। ক্ষমতার সন্ত্রাস দেখাচ্ছে তৃণমূল। বিরোধী কণ্ঠস্বর বিধানসভার অন্দরেও আক্রান্ত।'
অধ্যক্ষের এই বক্তব্যের পরই ভাষণ শেষ করে অধিবেশন থেকে ওয়াক আউট করেন শুভেন্দু-সহ বিজেপি বিধায়করা।
আরও পড়ুন- Suvendu Adhikari: চেয়ারম্যান শুভেন্দুকে অপসারণের দাবি, কাঁথি সমবায় ব্যাংকে অনাস্থা জমা
শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, তিনি অধিবেশনে বলা শুরু করতেই তাঁর বাবা শিশির অধিকারীর প্রসঙ্গ তোলেন তৃণমূলের নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক। ইতিমধ্যেই দলত্যাগ বিরোধী আইনে মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের জন্য অধ্যক্ষকে চিঠি দিয়েছেন বিরকোধী দলনেতা। অভিযোগ সেই প্রসঙ্গই তোলেন পার্থ ভৌমিক। শুভেন্দুর দাবি, তৃণমূল বিধায়ক তাঁকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন যে, 'দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করতে বিরোধী দলনেতা বাবাকে বলো।’
উল্লেখ্য, নন্দীগ্রাম বিধানসভায় ভোট গণনায় কারচুপির অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে ফলাফল পুনর্গণনার মামলা করেছেন ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে ওই মামলাটি ওঠে। তবে বিচারপতি চন্দের সঙ্গে বিজেপি যোগের অভিযোগে সরব তৃণমূল। এরপর ওই মামলা বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাস থেকে সরানোর আর্জি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামিকাল, বুধবার ওই মামলার শুনানি রয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন