অযোধ্যা মামলার শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার জন্য নাম না করে 'তিন বিচারপতি'কে বেলাগাম ভাষায় তুলোধনা করলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) নেতা ইন্দ্রেশ কুমার। তাঁর দাবি, অযোধ্যা মামলায় দেরি করানোর জন্য এই 'তিন বিচারপতিকে জনতা ভাল করেই চিনে রেখেছে'। গেরুয়া শিবিরের এই নেতার আরও দাবি, রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ বিতর্কের অবসান ঘটাতে বিল আনার ব্যাপারে পরিকল্পনা করে ফেলেছে মোদী সরকার। কিন্তু, একাধিক রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের জন্য আদর্শ আচরণবিধি জারি রয়েছে বলেই এক্ষেত্রে ধীরে চলো নীতি গ্রহণ করতে হচ্ছে কেন্দ্রকে।
পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে যোশী ফাউন্ডেশন আয়োজিত 'রামজন্মভূমিতে অন্যায় কেন' শীর্ষক আলোচনা সভায় যোগ দিয়ে প্রথম থেকেই দেশের 'তিন বিচারপতি'কে নিশানা করেন ইন্দ্রেশ কুমার। রামজন্মভূমির বিষয়ে কেন্দ্র আইন পাশের পরিকল্পনা করেছে, এ কথা বলার পরই তিনি বলেন, "আবার যদি এই আইনকে চ্যালেঞ্জ করে কেউ সুপ্রিম কোর্টের শরণাপন্ন হয়, তাহলে হয়ত প্রধান বিচারপতি স্থগিতাদেশ জারি করে বসবেন"।
পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনাসভায় ইন্দ্রেশ কুমার। এক্সপ্রেস ফটো: কমলেশ্বর সিং।
নভেম্বরের গোড়াতে সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যা মামলার শুনানি পিছিয়ে দিয়ে ২০১৯-এর জানুয়ারিতে করে দেয় এবং জানায় যে এটি তাদের অগ্রাধিকারের তালিকায় নেই। সেই প্রসঙ্গই এদিন ইন্দ্রেশ বলেন, "আমি নাম বলছি না, কারণ ১২৫ কোটি মানুষ তাঁদের নাম জানে...তিন বিচারপতির বেঞ্চ...তাঁরাই দেরি করেছেন...তাঁরাই অস্বীকার করেছেন, তাঁরাই অসম্মান করেছেন"। আর এরপরই বক্তৃতার ঝাঁঝ বাড়িয়ে তিনি সরাসরি বলেন, 'দেশ কি এতটাই পঙ্গু' যে 'দু'-তিন জন' বিচারপতি আমাদের "বিশ্বাস, গণতন্ত্র এবং মৌলিক অধিকারকে গলা টিপে মেরে চলে যাবে...আর আপনি-আমি কি শুধুই অসহায়ভাবে দেখে যাব? কেন, কী জন্য"?
ইয়াকুব মেমনের মৃত্যুদণ্ড রোধের আবেদনে মধ্য রাতে আদালতে এজলাস বসানোর ঘটনাকে সমালোচনা করেও এদিন বিচারপতিদের এক হাত নিয়েছেন ইন্দ্রেশ কুমার। তাঁর দাবি, যাঁরা এ কাজ করেছিলেন, তাঁরা কি শান্তির আদর্শকে অপমানিত করেননি বা তা নিয়ে রসিকতা করেননি? এদিনের আলোচনা সভায় ইন্দ্রেশের দাবি, 'দু'-তিন জন' বিচারপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে। তিনি চড়া সুরে বলেন, "সবাই বিচারের আশায় তাকিয়ে রয়েছে। এখনও তাদের আস্থা আছে (আদালতের উপর)...কিন্তু, বিচার ব্যবস্থা, বিচারপতিরা ও বিচারের দর্শন অপমানিত হচ্ছে কেবল দু'-তিন জন বিচারপতির জন্য...এই মামলা আরও দ্রুত শুনানি করা উচিত ছিল। এক্ষেত্রে সমস্যাটা কোথায়? প্রশ্ন এখানেই উঠছে। কারণ, হয় তাঁরা বিচার করুক, আর না পারলে পদত্যাগ করুক"।
Read the full story in English