'আলবিদা, চললাম', এই দুটি শব্দেই শনিবাসরীয় দুপুরে রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা করেছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। কিন্তু কোথায় চললেন? যা নিয়ে কৌতুহল ছিল। অবশ্য নিজের ওই পোস্টেই তার জবাব দিয়েছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। জানিয়েছিলেন, ‘অন্য কোনও দলে যাচ্ছি না। তৃণমূল, কংগ্রেস, সিপিএম কোথাও নয়। কনফার্ম করছি। কেউ আমায় ডাকেওনি, আমিও কোথাও যাচ্ছি না।’ যদিও বাবুলের পোস্টটি থেকে কিছুক্ষণের মধ্যেই অন্য দলে যোগ না দেওয়ার লাইনগুলো উধাও হয়ে যায়। ফলে শুরু হয় জল্পনা। তাহলে কী বিজেপি ছেড়ে অন্য দলেই যোগ দিচ্ছেন আসানসোলের সাসংদ? গেরুয়া শিবিরের অন্দরেও তখন চাপা গুঞ্জন।
কিন্তু, গভীর রাতে ফের ফেসবুকে পোস্ট করলেন বাবুল। বিভ্রান্তি দূর করতে তিনি লেখেন, 'আমি সাংসদ পদ থেকেও ইস্তিফা দিচ্ছি, এই লাইনটা জুড়তে গিয়ে, অরিজিনাল লেখাটা থেকে একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ লাইন মুছে গেছিলো !! তা থেকে অনেক বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে !! তাই আলাদা করে ওই লাইনটা আবার পোস্ট করছি | আমি লিখেছিলাম, সারাজীবন একটাই দলকে সাপোর্ট করেছি মোহনবাগান, একটাই দল করেছি ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) | এটাও স্পষ্ট করে দিতে চাই যে আমি অন্য কোনোও রাজনৈতিক দল জয়েনও করছিনা।'
আরও পড়ুন- রাজনীতিকে ‘আলবিদা’ বাবুল সুপ্রিয়র, ছাড়ছেন সাংসদ পদও
কিন্তু প্রথম পোস্টে অন্য দলে যোগ না দেওয়া সংক্রান্ত পোস্টটির সঙ্গে পরের পোস্টটির ফারাক ঘিরেই প্রশ্ন উঠছে। প্রথম পোস্টে এপ্রসঙ্গে বাবুল সুপ্রিয় লিখেছিলেন যে, 'তৃণমূল, কংগ্রেস, সিপিএম, কোথাও নয় – Confirm করছি, কেউ আমাকে ডাকেওনি, আমিও কোথাও যাচ্ছি না।' পরের পোস্টটিতে অবশ্য কোনও দলের উল্লেখ নেই।
আরও পড়ুন- ধূমকেতুর মতো উত্থান, সাত বছরেই ‘পতন’ বাবুলের, এক নজরে তাঁর রাজনৈতিক জীবন
রাজনীতির ছাড়ার ঘোষণা করলেও প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সর্বভারতীয় বিজেপি সভাপতির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন আসানসোলের সাসংদ। কিন্তু, একুশের বিধানসভা ভোটের আগে থেকেই রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর বিরোধ প্রকাশ্যে এসেছিল। অনেক ক্ষেত্রে বাবুল নিজেই তা সামনে এনেছিলেন। শুক্রবার দুপুরের পোস্টে যার উল্লেখ করেছেন তিনি। পাশাপাশি জানিয়েছেন, দলের ভিতরকার কোন্দল সামনে এসে পড়ায় বিজেপি কর্মীদের মনোবলে আঘাত লেগেছিল।
আরও পড়ুন- “উনি কি ইস্তফা দিয়েছেন? খোঁজ নিন”, বাবুল প্রসঙ্গে প্রশ্নে বিরক্ত দিলীপ
তবে রেখে-ঢেকে নয়, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সোজাসাপটাই জানিয়েছেন যে, মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়ার সঙ্গে তাঁর রাজনীতি ছাড়ার বিষয়টি সম্পর্কযুক্ত। সঙ্গে জুড়ে দেন, ২০১৪-র থেকে ২০১৯ সালের দলের অনেক ফারাক। বিজেপির অভ্যন্তরে যে তিনি কোণঠাসা ও নতুনরা জায়গা পাকা করে নিয়েছেন সেকথা ইঙ্গিতে বুঝিয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়।
তবে, বাবুলের এই পোস্টে আমল দিতে রাজি নন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর সাফ জবাব, ‘কে কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন, কখন রাজনীতি করবেন, কখন করবেন না, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। এই নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন