"আজ কোথাও যাইনি বলে কাল সেখানে যাব না, তা কিন্তু নয়," এই মন্তব্য করে বিজেপিতে তাঁর যোগদান নিয়ে জল্পনা জিইয়েই রাখলেন প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়-ঘনিষ্ঠ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে তাঁর বিজেপিতে যোগদান প্রসঙ্গে বুধবার এক সাংবাদিক বৈঠকে বৈশাখী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, "আমি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি না। আপাতত কোনও রাজনৈতিক দলে যাচ্ছি না। আমার বিজেপিতে যোগদান নিয়ে স্রেফ গুজব তৈরি হয়েছে।" এরপরই বৈশাখী বলেছেন, "আজ কোথাও যাইনি বলে কাল সেখানে যাব না, তা কিন্তু নয়। সবসময়েই সম্ভাবনা খোলা থাকে।"
একইসঙ্গে তৃণমূলে যোগদানের সম্ভাবনার কথাও শোনা গিয়েছে বৈশাখীর গলায়। তিনি বলেছেন, "যদি দেখি, তৃণমূল যেসব দুঃখ দিয়েছে, পীড়া দিয়েছে, সেসব আর নেই, তবে আগামী দিনে তৃণমূলেও যোগ দিতে পারি।" অন্যদিকে, ভোটে লড়ার প্রসঙ্গেও জল্পনা বাড়িয়েছেন বৈশাখী। তাঁর কথায়, "এখনও অনেক ভোট রয়েছে। পুরসভা ভোট রয়েছে, বিধানসভা ভোট রয়েছে, তারপর আবার লোকসভা ভোট রয়েছে। আগামী দিনে ভোটে লড়তেই পারি।"
আরও পড়ুন, West Bengal Lok Sabha Elections 2019 LIVE Updates: বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি না: বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়
শোভন চট্টোপাধ্যায় কি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন? এ প্রশ্নের সরাসরি কোনও জবাব না দিলেও বৈশাখী বলেছেন, "রাজনৈতিক ক্ষেত্রে শোভনবাবু যথেষ্ট প্রাজ্ঞ। উনি কী সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটা উনিই ঠিক করবেন।"
লোকসভা ভোটে প্রার্থী হওয়ার জন্য বৈশাখীকে প্রস্তাব দিয়েছে বিজেপি, একথা স্বীকার করেছেন শোভনের বান্ধবী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "গত ২ মার্চ বিজেপির এক নেতা আমায় ফোন করে জিজ্ঞেস করেন, আমি কেন সক্রিয় রাজনীতিতে আসছি না। উনি ভোটে লড়ার কথাও বলেছেন। এর আগেও এমন প্রস্তাব দিয়েছেন। ভেবে দেখব বলে জানিয়েছি। আমার মাধ্যমে ওঁকেও (শোভন) প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।"
আরও পড়ুন, ইডিতে হাজিরা শোভনের, পাশে বৈশাখী
মুকুল রায়, কৈলাশ বিজয়বর্গীর সঙ্গে গোপন বৈঠক হয়েছে কি? এ প্রসঙ্গে বৈশাখীর সাফ কথা, "কথা হতেই পারে। এখন তো কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নই। তাহলে তো সবার সঙ্গেই কথা বলতে পারি, স্বাধীনভাবে দেখা করতে পারি। আমাদের শিক্ষামন্ত্রী নিদান দেন নি যে অন্য কোনও দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন না।"
তৃণমূলের প্রচারে কি দেখা যাবে বৈশাখীকে? জবাবে তিনি বলেন, "না, তৃণমূলের সঙ্গে গত বছর সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।"
প্রসঙ্গত, কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা তৃণমূল বিধায়ক শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে গত এক বছর ধরে ক্রমশ দূরত্ব বেড়েছে দলের। তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে সম্পর্ক এতটাই তলানিতে এসে ঠেকে যে, নিজেই মেয়র পদে ইস্তফা দেন শোভন। পাশাপাশি মন্ত্রিত্ব থেকেও সরে দাঁড়ান মমতার একদা প্রিয় 'কানন'। বৈশাখী-শোভনের সম্পর্ক রাজ্য রাজনীতিতে বহু আলোচিত। সম্প্রতি তাঁদের বিজেপিতে যোগদান ঘিরে জল্পনা ছড়ায়।