Advertisment

চরম ক্ষুব্ধ বৈশাখী! 'বিজেপিতে আর পা-ই রাখতাম না, শুধু শোভনবাবুর জন্যই আসছি'

‘‘যে কাজ করার মানসিকতা নিয়ে নতুন দলে এসেছিলাম, তাতে কোথাও তাল কাটল। এই দলে আমার পথচলা আজই শেষ হবে না কি আগামী দিনে এই দলে কাজ করতে পারব, সেটা আগামী দিন বলে দেবে’’।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
বৈশাখীকে ‘চরম হেনস্থা-গালিগালাজ’, কলেজে ধুন্ধুমার

বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিজেপি-তে যোগ দিতে না দিতেই দল ছাড়ার ইঙ্গিত দিলেন অধ্যাপিকা তথা শোভন চট্টোপাধ্যায়ের 'বান্ধবী' বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের উপর ‘চরম ক্ষুব্ধ’ বৈশাখী মঙ্গলবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে জানান, ‘‘যে কাজ করার মানসিকতা নিয়ে নতুন দলে এসেছিলাম, তাতে কোথাও তাল কাটল। এই দলে আমার পথচলা আজই শেষ হবে নাকি আগামী দিনে এই দলে কাজ করতে পারব, সেটা আগামীই বলে দেবে’’।

Advertisment

আরও পড়ুন: মমতাকে তৈরি করতে সব নষ্ট করে জীবন দিয়েছিলাম, আর উনিই রাজনীতি করলেন: শোভন

কেন ক্ষুব্ধ বৈশাখী?

শোভন চট্টোপাধ্যায়কে মঙ্গলবার রাজ্য বিজেপির তরফে সংবর্ধনা দেওয়া হবে, এই মর্মে দুটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরমধ্যে একটি সোমবার রাতে এবং অন্যটি আরেকটা ১২ ঘণ্টা পর অর্থাৎ এদিন। কিন্তু, এই দুটি বিজ্ঞপ্তির কোথাও বৈশাখীর নামোল্লেখ করা হয়নি। অনুষ্ঠানে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণও জানানো হয়নি। আর এতেই ‘ব্যথিত’ হয়েছেন বৈশাখী। মিল্লি আল আমিন কলেজের অধ্যক্ষার পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া বৈশাখী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বলেন, ‘‘শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আমার কাছে নিঃসন্দেহে আনন্দের। কিন্তু আমি দীর্ঘদিন ওয়েবকুপার জেনারেল সেক্রেটারি থাকাকলীন একটা জিনিস অনুভব করেছি, সেটা হল আমায় কেউ কখনও অসম্মান করেননি। কখনও নিজেকে আনওয়ান্টেড মনে হয়নি। ধাক্কা লেগেছে এ ধরনের আমন্ত্রণপত্রে’’। এরপরই বৈশাখী বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টি শোভনবাবুকে জানাই। ওঁরও খারাপ লেগেছে। উনি বিষয়টি তদারকি করেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানাই বিষয়টি। এরপরই মনে হয়, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছে। এরপরই রাজ্য নেতৃত্বের তরফে জয়প্রকাশ দা' (মজুমদার) বলেন, এটা অনিচ্ছাকৃত ভুল। যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে ভুল হয়, সে ক্ষেত্রে ক্ষমা করা আমার কর্তব্য। ইচ্ছাকৃত হলে, এটার কোনও প্রয়োজনীয়তা ছিল না’’। সামগ্রিকভাবে এই 'স্বীকৃতিহীনতা' থেকেই ক্ষুব্ধ ও 'ব্যথিত' হন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন: শোভন-বৈশাখী ‘ভাত-ডাল’, মত দিলীপের! মানে বুঝলেন না ‘অসন্তুষ্ট’ বৈশাখী

baisakhi banerjee, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: টুইটার।

এ প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে বৈশাখী বলেন, ‘‘যখন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সংবর্ধনা, সেখানে আমার আসার দরকার আছে বলে মনে করিনা। সেজন্য না আসার সিদ্ধান্ত নিই। পরে তালিকা থেকে আমার নাম বাদ যাওয়া নিয়ে জয়প্রকাশদা বলেন অনিচ্ছাকৃত ভাবে ভুল হয়েছে, তাই এসেছি। আমার গোঁসা ধরে রেখে বসে থাকা শোভনদার সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ম্লান হয়ে যেতে পারত, তাই এসেছি’’।

এর আগে মঙ্গলবার রাজ্য বিজেপি দফতরে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যাওয়া প্রসঙ্গে বৈশাখী বলেছিলেন, ‘‘যে অসম্মানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে নতুন দলে এসেছিলাম, তাতে কোথাও তাল কেটেছে। এটা নিশ্চয় আমায় পীড়া দিচ্ছে। আমি অত্যন্ত মর্মাহত। আমায় অনেকে বলেছেন, শোভন চট্টোপাধ্যায় আমার জন্য সব ছেড়েছেন। তাহলে আমি কতদূর কী ছাড়তে পারি, আমার নিজের কাছেই প্রশ্ন এটা। আজ বুঝতে পারলাম, আমার একমাত্র সম্বল ছিল আত্মসম্মান। সেই আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে আজ যেতে হচ্ছে কারণ শোভনবাবুর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান নষ্ট হোক তা আমি চাই না। আমার যা মানসিকতা, তাতে এই দলে আর পা-ই রাখতাম না, তবু আজ শোভনবাবুর জন্যই আসছি’’। এরপরই বৈশাখী বলেন, ‘‘যে কাজ করার মানসিকতা নিয়ে নতুন দলে এসেছিলাম, তাতে কোথাও তাল কাটল (প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নাম না থাকায়)। এই দলে আমার পথ চলা আজই শেষ হবে না কি আগামী দিন এই দলে কাজ করতে পারব, সেটা আগামীই বলে দেবে’’।

আরও পড়ুন: বৈশাখীর ‘চাকরি খেলেন’ মমতা! শোভনের পাশে বসে কাঁদতে কাঁদতে ইস্তফা ঘোষণা

এদিন বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের উপর ক্ষোভপ্রকাশ করে বৈশাখী বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটা দলে শেষ কথা, যেখানে গণতন্ত্র নেই বলে অনেকে বলেন। আর এখানে (বিজেপিতে) সাধারণ পদাধিকারীরা আক্রমণ করেন। এটা দলের পক্ষে শুভ নয়। আমাকে দেখে এখন যাঁরা বিজেপিতে আসতে চাইবেন, তাঁরাও পিছিয়ে যাবেন। আমার সঙ্গে যা হয়েছে, তা আর যেন কারও সঙ্গে না হয়’’।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ জল্পনার পর গত ১৪ অগাস্ট দিল্লিতে বিজেপিতে যোগ দেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে, সকলকে চমকে দিয়ে দিল্লিতে বিজেপি সদর দফতরে উপস্থিত হন রায়দিঘির তৃণমূল বিধায়ক তথা টলিউড নায়িকা দেবশ্রী রায়। তবে সেদিন তিনি বিজেপিতে যোগ দেননি। তবে, শোভন-বৈশাখীর বিজেপিতে যোগদানের সেখানে দেবশ্রী রায়ের উপস্থিতি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

bjp
Advertisment