ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে দলের সাংগঠনিক বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারীর যোগ দেওয়ার আগে দলীয় সভাপতির বিরুদ্ধে পোস্টার নিয়ে বিতর্ক ছড়ালো। স্থানীয় বিজেপি সাংসদ দল ছাড়ার পর এই ধরনের পোস্টারে ধোঁয়াশা বেড়েছে। বিজেপি সভাপতি সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে অর্জুন সিংয়ের এজেন্ট বলে দাবি করা হয়েছে পোস্টারে। তবে সন্দীপবাবুর স্পষ্ট জবাব, 'একাজ বিজেপির কর্মীরা করেনি। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব বিজেপির সংগঠনে গন্ডগোল পাকাতে এই পোস্টার মেরেছে।' অর্জুন চলে যাওয়ায় সংগঠনের দীর্ঘস্থায়ী কোনও ক্ষতি হবে না বলে দাবি করেছেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সভাপতি।
২০১৯-এর ১৪ মার্চ বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন ভাটপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিং। তারপর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে ব্যারাকপুর কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদীকে পরাজিত করে সাংসদ নির্বাচিত হন অর্জুন। গত রবিবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে ফিরে যান তিনি। এই পরিস্থিতিতে ব্যারাকপুরে বিজেপির সংগঠনে সাময়িক সমস্যা হতে পারে বলে মনে করছে বিজেপি নেতৃত্ব। তবে দীর্ঘস্থায়ী কোনও ক্ষতি হবে না বলে জানিয়ে দিলেন সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
ব্যারাকপুর বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, 'এই ধরনের নেতা যাওয়া-আসায় সংগঠনে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পড়ে না। সাময়িক সমস্যা হতে পারে, তবে বিজেপি অনেক বড় দল। সেখানে একজন ব্যক্তির ওপর সংগঠন চলে না। সংগঠন সংগঠনের নিয়মে ঘুরে দাঁড়াবে। শক্তিশালী সংগঠন আমাদের আছে। আমরা আগামী লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে সেটা আরও মজবুত করার চেষ্টা করব। তার জন্য আজ বৈঠক করতে আসছেন শুভেন্দু অধিকারী।' অর্জুন সিং-এর দলবদলের পর গতকালই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ব্যারাকপুরে সংগঠনের বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন- কংগ্রেস ছাড়লেন কপিল সিব্বল, সপা-র হয়ে রাজ্যসভায় মনোনয়ন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর
অর্জুনের এজেন্ট উল্লেখ করে জেলা সভাপতি সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাতে হবে এই মর্মে এদিন শ্যামনগরে পোস্টার পড়ে। তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে রীতিমতো বিতর্ক শুরু হয়েছে। সন্দীপবাবু বলেন, 'আমার মনে হয় না ভারতীয় জনতা পার্টির কেউ এই কাজ করবে। কারও নাম দেওয়া নেই। সাহস থাকলে নাম দিয়ে করত। স্থানীয় তৃণমূল কোনও বিরম্বনা থেকে এই ধরনের পোস্টার ছড়িয়ে সংগঠনের মধ্যে গন্ডগোল তৈরি করার চেষ্টা করছে।' যদিও তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যামরে বক্তব্য, 'তৃণমূল কেন পোস্টার মারবে? ব্যাপারটা আমার জানাও নেই'।
এদিকে সাংসদ অন্য দলে চলে যাওয়ায় বিভ্রান্তিতে পড়েছে আক্রন্ত বিজেপি পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের পাশে কারা দাঁড়াবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে নিহত বিজেপি কর্মী জয়প্রকাশ যাদবের পরিবার। এই প্রসঙ্গে সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে পাশে থাকবে দল। তাছাড়া দলের জন্য যাঁরা শহিদ হয়েছেন তাঁদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক কর্তব্য।'