রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জল্পনার মাঝেই এবার যদিও তাঁর অনুগামী দলীয় বিধায়ক, নেতাদের রাস্তায় নেমে লড়াইয়ের বার্তা দিলেন খোদ শুভেন্দু অধিকারী।
মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন। ইস্তফা দিয়েছেন হলদিয়া উন্নয়ন পর্যদ ও এইচআরবিসি-র চেয়ারম্যান পদ থেকেও। কিন্তু দল থেকে এখনও পদত্যাগ করেননি। তাঁকে দলে রাখতে মরিয়া শাসক শিবির। তৃণমূলের একাধিক শীর্ষ নেতৃত্ব জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীর জন্য আলোচনার দরজা এখনও খোলা রয়েছে।
শুভেন্দু অনুগামী এক তৃণমূল নেতার কথায়, 'দাদার হয়ে রাস্চায় নেমে প্রচারের জন্য আমরা প্রস্তুত। শুধু ওনার সবুজ সঙ্কেতের অপেক্ষা। গত ৬ মাস ধরে আমরা এর প্রস্তুতি নিয়েছি। দক্ষিণবঙ্গের প্রায় ৫ জেলায় পৃথক সংগঠনের তরফে দাদার হয়ে প্রচারে আমরা তৈরি।'
গত কয়েক মাস ধরেই 'আমরা দাদার অনুগামী' ব্যানারে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় মিটিং, মিছিল হয়েছে। অরাজনৈতিক একাধিক সভায় দেখা গিয়েছে শুভেন্দুকেও। যা নিয়ে দলের অন্দরে ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। তৃণমূল বিধায়কের নানা মন্তব্যেই স্পষ্ট হয়েছে দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বেড়েছে। সমস্যা সমাধানে সাংসদ সৌগত রায় এগিয়ে এলেও তাতে চিঁড়ে ভেজেনি। উল্টে মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন শুভেন্দু অধিকরারী।
নন্দীগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক দল ছাড়তেই খেজুরিতে শাসক দলের পার্টি অফিস দখলের অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। তার মাধেই আনুগামীদের রাস্তায় নেমে লড়াইয়ের নির্দেশ দিচ্ছেন তৃণমূলের দোর্দদণ্ডপ্রতাপ নেতা শুভেন্দু অধিকারী। কেন? রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ৭ই ডিসেম্বর মেদিনীপুরের তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা রয়েছে। তার আগেই দলীয় নেতৃত্বের কাছে নিজের শক্তির প্রমাণ দিতেই শুভেন্দুর এই কৌশল।
শুভেন্দু অধিকারীকে আদৌ তৃণমূলে থাকবেন? এখন এই প্রশ্নেই জোর চর্চা। জানা গিয়েছে, তৃণমূলের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব শুভেন্দুর বাবা সাংসদ শিশির অধিকারীকে ফোন করেছিলেন। বিধায়ক পুত্র শুভেন্দু যাতে কলকাতায় এসে নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেন তার জন্য শিশির অধিকারীকে বলা হয়েছিল। কিন্তু, শিশিরবাবুর স্ত্রী অসুস্থ থাকায় শুভেন্দুর পক্ষে এখন কলকাতায় যাওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন সাংসদ।
এই অবস্থায় আজ মহিষাদলে প্রয়াত স্বাধীনতা সংগ্রামী রণজিৎ কুমার বয়ালের স্মৃতিতে সভা রয়েছে। সেখানে উপস্থিত থাকবেন শুভেন্দু অধিকারী। অরাজনৈতিক সভায় নন্দীগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক সেখানে রাজনীতির কোনও প্রসঙ্গে উত্থাপন করেন কিনা সেদিকেই এখন নজর।
'দাদা'-ঘনিষ্ট এক নেতার কথায়, 'পৃথক ব্যানারে প্রচার চালিয়ে আত্মনির্ভর হওয়ার কথা বলা হয়েছিল। সেই কাজ গত কয়েকমাস ধরে চলেছে। দাদার জনভিত্তি আরও বেড়েছে। এবার সেটা ভোটবাক্সে রূপান্তরিত করতে হবে।'
এই পরিস্থিতি প্রশ্ন হল, শুভেন্দু অধিকারী কী তৃণমূলেই থাকবেন? তাঁর মত নেতা বেড়িয়ে গেলে তৃণমূলের অন্দরে সেই শূন্যস্থানপূরণ কে করবেন?
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন