Advertisment

চ্যালেঞ্জ ২০২৪, তার আগেই বেসামাল বঙ্গ বিজেপি, দলে কলহ প্রকট

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনকে যখন তৃণমূল কংগ্রেস পাখির চোখ করে এখন থেকেই ঘর গোছাচ্ছে তখন বাংলায় ঘর ভেঙেই চলেছে বিজেপির।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
west bengal bjp announces new state committee leaders name

শেষ পর্যন্ত কলকাতা পুরভোটে ভরাডুবির পর সংগঠনের শীর্ষ পদে ব্যাপক বদল করল বঙ্গ বিজেপি।

বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর বঙ্গে বিজেপির সাংগঠনিক হাল কোন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে তা ক্রমশ প্রকট হচ্ছে। একের পর এক রথী-মহারথী গেরুয়া শিবির ত্যাগ করছেন। প্রবীণ নেতা মুকুল রায়ের পর এবার দল ছাড়লেন বাবুল সুপ্রিয়। নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকে দলের ভিতরে-বাইরে নেতৃত্বের কাঁদা ছোড়াছুড়ি অব্যাহত থাকলেও নীচুতলার কর্মীরা বিপদে পাশে কাউকে পাননি। তা নিয়েও দলের নীচুতলার কর্মীরা ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনকে যখন তৃণমূল কংগ্রেস পাখির চোখ করে এখন থেকেই ঘর গোছাচ্ছে তখন বাংলায় ঘর ভেঙেই চলেছে বিজেপির।

Advertisment

সম্প্রতি বঙ্গ বিজেপি গোষ্ঠী কলহ নিয়ে জেরবার। নেতৃত্বের প্রতি প্রকাশ্যে বিষোদ্গার চলেছে। দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে তুলোধুনা করেছেন অনেকেই। দলীয় নীতি না মেনে নানা বিষয়ে বিদ্রোহ হয়েছে। তবে সেভাবে কারও বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারেনি বিজেপি। রাজনৈতিক মহলের মতে, সব বিষয়ে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতেও নেতৃত্ব একপ্রকার ব্যর্থ। বাবুল সুপ্রিয় ফেসবুক পোস্টে স্বীকার করে নিয়েছেন যে তিনি দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের কাজ করেছেন। অভিজ্ঞ মহল মনে করছে, দলের রাজ্য সভাপতি মুখে যতই গর্জন করুক না কেন দলের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেননি। এমনকী পরিস্থিতি আয়ত্বে আনতেও নেতৃত্ব ব্যর্থ।

বাবুল দেখিয়ে দিয়েছিলেন এই বাংলায় লড়াই করে লোকসভা আসনেও জয় পাওয়া যায়। অবশ্যই ২০১৪-তে আসানসোল কেন্দ্রে বিজেপির জয় এরাজ্যে রাজনৈতিক প্রক্ষপটে যথেষ্ট গুরুত্ব দাবি করে। ২০১৪ নির্বাচনে বাংলায় ২ টি আসনে জয় পেয়েছিল বিজেপি। পাহাড়ের আসনে জয় নিয়ে বিজেপির কোন সাংগঠনিক কৃতিত্ব ছিল না। আসানসোল আসনে জয়ের কৃতিত্বের মূল দাবিদার বাবুল সুপ্রিয় নিজেই। তিনিও এবার সরে যাচ্ছেন। সূত্রের খবর, বাবুলের সঙ্গে দলীয় নেতৃত্বের বিবাদ লেগেই ছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মেদিনীপুরের অনুষ্ঠানে দলের অন্য নেতৃত্বকে বিবদমান দুই পক্ষকে ধরে সরাতে হয়েছিল বলে দলে গুঞ্জন রয়েছে।

আরও পড়ুন: বাবুলের নিশানায় দিলীপ-কুণাল! রুচিবোধের প্রশ্নে ঝাঁঝালো আক্রামণ

বাবুল সুপ্রিয় ফেসবুকে লিখেছেন, "আরেকটা কথা.. ভোটের আগে থেকেই কিছু কিছু ব্যাপারে রাজ্য নেতৃত্বের সাথে মতান্তর হচ্ছিল - তা হতেই পারে কিন্তু তার মধ্যে কিছু বিষয় জনসমক্ষে চলে আসছিলো|)। তার জন্য কোথাও আমি দায়ী (একটি ফেসবুক পোস্ট করেছিলাম যা পার্টির শৃংখলাভঙ্গের পর্যায়েই পড়ে) আবার কোথাও অন্য নেতারাও ভীষণভাবে দায়ী, যদিও কে কতটা দায়ী সে প্রসঙ্গে আমি আজ আর যেতে চাইনা - কিন্তু Senior নেতাদের মতানৈক্য ও কলহে পার্টির ক্ষতি তো হচ্ছিলই, 'গ্রাউন্ড জিরো'-তেও পার্টির কর্মীদের মনোবলকে যে তা কোনোভাবেই সাহায্য করছিলো না তা বুঝতে 'রকেট বিজ্ঞান'-এর জ্ঞানের দরকার হয়না | এই মুহূর্তে তো তা একেবারেই অনভিপ্রেত তাই আসানসোলের মানুষকে অসীম কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা জানিয়ে আমিই সরে যাচ্ছি |"

ঘটনা বিস্তারিত খোলসা না করলেও বাবুল স্পষ্ট বলেছেন, "নেতৃত্বের মতবিরোধ ও কলহেই ক্ষতি হয়েছে দলের।" যার জন্য দলের নীচুতলার কর্মীরা অসহায় তা-ও স্বীকার করেছেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ। বিধানসভা নির্বাচনে আদি বিজেপির একটা বড় অংশ টিকিট না পেয়েও কোনওপ্রকার বিদ্রোহ করেননি। অভিজ্ঞ মহলের মতে, এরাজ্যে সাংগঠনিক খোলনলচে না বদলালে বিরোধী দলের তকমা হয়তো থাকবে তবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কতটা লড়তে পারবে তা নিয়ে সন্দেহ আছে। বিশেষত ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে এরাজ্যে জয়ী ১৮টি আসন ধরে রাখাই পদ্মশিবিরের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Babul Supriyo Bengal BJP mukul roy bjp
Advertisment