২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে এরাজ্যে আসন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিজেপি। এবার শুধু মুুখের ভাষণ নয়, একেবারে হাতে-নাতে ভোটের “টেকনিক’’ শিখতে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন এখানকার বিজেপি নেতা-কর্মীরা। এদিন একদল নেতা-কর্মী গিয়েছেন প্রশিক্ষণ নিতে। বিজেপি শাসিত রাজ্যেই তাঁরা যাচ্ছেন নির্বাচনে জয়ের কৌশল শিখতে। এদিন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, "২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাঁদের প্রশিক্ষণ নিতে বিহার, ঝাড়খন্ড, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানাসহ অন্যান্য বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে পাঠানো হচ্ছে। ৮৫ জনের একটি দল এদিন প্রশিক্ষণ নিতে রওনা দিয়েছে।"
সাম্প্রতিক কালে ছোট রাজ্য হলেও বিজেপি বড় জয় পেয়েছে ত্রিপুরায়। রাজনৈতিক ভাবে মাণিক সরকারের নেতৃত্বে ত্রিপুরায় শক্তিশালী সিপিএমকে পরাজিত করা খুব সহজ কাজ ছিল না। এমনিতে ওই রাজ্যে সিপিএমের বিরোধী কংগ্রেস না তৃণমূল তা বুঝতেই সময় চলে যাচ্ছিল। সেই সময় কয়েক মাসের মধ্যেই তেড়েফুঁড়ে উঠে রাজ্যে পালাবদল ঘটিয়ে দিয়েছে পদ্মশিবির। ত্রিপুরায় বিপুল জয়ে রাজনৈতিক বোদ্ধারা হবাক হননি যে তা নয়। কাজেই সেই রাজ্যে রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ নেওয়া খুব জরুরী বলে মনে করে বিজেপি।
আরও পড়ুন: এনডিএ-র ভেতরেই অনেকে চাননা, মোদী আবার প্রধানমন্ত্রী হোন, বললেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী
এমনভাবেই উত্তর প্রদেশে মায়াবতী ও অখিলেশ যাদবদের যে ভাবে লোকসভা ও বিধানসভা দুটো নির্বাচনেই ল্যাজেগোবরে করে ছেড়়েছে গেরুয়া শিবির, তাতে বিজেপি মনে করছে তাদের শাসিত রাজ্যে নির্বাচনের কৌশল শিখে এলে এরাজ্যের নির্বাচনে দল লাভ পাবে। ২০১৯ লোকসভা ভোটে ওই প্রশিক্ষণ কাজে লাগবে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, “আগামী লোকসভা নির্বাচনে শাসকদলের বিরুদ্ধে কীভাবে লড়াই করতে হবে। মূলত সেই কৌশল আয়ত্ব করতে কর্মীদের বিজেপি শাসিত রাজ্যে পাঠানো হচ্ছে।’’
২০১৯ লোকসভা নির্বাচন বিজেপির কাছে কেন্দ্রে ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার প্রেস্টিজ। বেশ কিছু রাজ্যে দলের আসন কমবে, সে বিষয়ে অনেকটাই নিশ্চিত দল। তাই এবার বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে পশ্চিম বঙ্গকে। অমিত শাহ বারে বারে জোর দিয়ে বলেছেন ২২টির বেশি আসন চাই এরাজ্য থেকে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের মত শক্তিশালী সংগঠনের সঙ্গে লড়াই করার মত শক্তি এখনও নেই বিজেপির। তা বেশ জানেন দলের কেন্দ্র এবং রাজ্য নেতৃত্ব। তাই এবার নানা কৌশল অবলম্বন করতে মরিয়া বিজেপি। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বিজেপি শাসিত রাজ্যে সেখানকার নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা শুনতে গিয়েছেন এরাজ্যের নেতা-কর্মীরা। সংগঠনের কলেবর বৃদ্ধি না পেলে বাংলার রাজনীতিতে তা কতটা ফলপ্রসু হবে তা বলা মুশকিল।
আরও পড়ুন: মৃত্যু মিছিলের বিরাম নেই পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনেও, কিন্তু দায় কার!
শুধু বাইরের রাজ্যে প্রশিক্ষণ নয়, এবার ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজেও জোর দিচ্ছে দল। এদিন রাজ্য দপ্তরে দলীয় নির্বাচন কমিটির সদস্যদের নিয়ে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এবার জেলাগুলোতেও নির্বাচন কমিটি নিয়ে এই ধরনের কর্মশালার আয়োজন করবে গেরুয়া শিবির। নির্বাচনে ভোটার তালিকা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিজেপি ভুয়ো ভোটার বাদ দেওয়ার ওপর জোর দিচ্ছে। গেরুয়া শিবিররে মতে, এরাজ্যে প্রচুর ভুয়ো এবং মৃত ভােটারের নাম তালিকায় রয়েছে। সেই ভুয়ো ভোটারদের চিহ্নিত করতে রাজ্য বিজেপি নির্দেশ দিয়েছে দলের বুথ কমিটিগুলেকে। জানা গিয়েছে, এই কারণে ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য বুথ ভিত্তিক এজেন্ট নিয়োগ করবে দল।