সর্বভারতীয়স্তরে সংগঠনের রদবদলে পদ খুইয়েছেন রাহুল সিনহা। বেজায় ক্ষব্ধ বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি। সোশাল মিডিয়ায় ভিডিও বার্তায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। বিজেপিতে সাংগঠনিকস্তরে রদবদল ঘিরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছায়া প্রকট হচ্ছে। দলের মধ্যেই নানা জল্পনা। কিন্তু, দলের অন্যতম শীর্ষ পদ পেয়েই বিতর্ক ধাপাচাপা দিতে আসরে নামলেন মুকুল রায়। কেন্দ্রীয় শাসক দলের সহসভাপতি জানিয়ে দিলেন, 'বাংলায় বিজেপির মুখ রাহুল সিনহা।'
দলীয় কাজে বাঁকুড়া থেকে পুরুলিয়ায় যাওয়ার পথে বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি মুকুল রায় বলেন, 'রাহুল সিনহা বাংলার মুখ। দীর্ঘদিন ধরে বিজেপি করছেন। দু-একটা কথা যদি বলে থাকেন তা থেকে কোনও ধারণা করা উচিত হবে না। বাংলার মানুষ আমাদের পাশে রয়েছেন। সর্বশক্তি দিয়ে একযোগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে হবে।'
আরও পড়ুন- করোনা হলে জড়িয়ে ধরবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে, বললেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা
শনিবারই বিজেপির সর্বভারতীয়স্তরে সাংগঠনিক কার্যকর্তাদের নাম ঘোষণা করা হয়। দলের সহসভাপতির পদ মুকুল রায় পেলেও কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ পড়েন রাহুল সিনহা। ওই পদ পয়েছেন তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা অনুপম হাজরা। রদবদল ঘোষণা কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ভিডিও বার্তায় রাহুল সিনহা বলেন, 'চল্লিশ বছর ধরে বিজেপির একজন সৈনিক হিসাবে দলের সেবা করে এসেছি। জন্মলগ্ন থেকে বিজেপির সেবা করার পুরস্কার এটাই যে একজন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা আসছেন, তাই আমায় সরতে হবে। এর চেয়ে বড় দুর্ভাগ্যের কিছু হতে পারে না। কী করব, আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে জানাব।' দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির এহেন মন্তব্যই অস্বস্তি বাড়ে পদ্ম শিবিরে। রাহুল কী দল ছাড়তে পারেন- শুরু হয় জল্পনা।
এর মাঝেই আবার বারুইপুরে অনুপম হাজরার গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির কিছু কর্মী। তৃণমূল থেকে যাঁরা বিজেপিতে আসছেন তাঁদের বেশি সম্মান দেখানো হচ্ছে বলে ক্ষোভ উগরে দেন বিক্ষুব্ধরা। এর প্রেক্ষিতে অনুপম বলেছেন, 'রাহুল দা হতাশা থেকে ওইরকম বলেছেন। আমি এর রদবদল করিনি, বা এর পিছনে আমার হাত নেই। পরে আমি এই বিষয়ে রাহুল সিনহার সঙ্গে কথা বলব। আসা করি সব মিটে যাবে।'
আরও পড়ুন- তিনবারের সিপিএম বিধায়ক যোগ দিলেন বিজেপিতে
বসিরহাটেও বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠক ঘিরে সংঘর্ষ হয়। চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়ি হয়। জেলা সভাপতি তারক ঘোষ তৃণমূলের হয়ে কাজ করছেন বলে অভিযোগ দলের একাংশের। অভিযোগ প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি তারক ঘোষ।
২১শে বাংলার ক্ষমতা দখলের প্রশ্নে বিভোর গেরুয়া শিবির। কিন্তু, তৃণমূলের সঙ্গে লড়াইয়ের পাশাপাশি এখন বঙ্গ বিজেপির বড় চ্যালেঞ্জ দলের অন্দরের ক্ষোভ-বিক্ষোভ প্রশমণ। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ মুকুল রায় এসব ভালই বুঝেছেন। তাই তৃণমূলের বিরুদ্ধে একযোগে লড়াইয়ের বার্তা যেমন দিচ্ছেন মুকুল, তেমনই 'বিক্ষুব্ধ' রাহুল সিনহাকে মুখ হিসাবে তুলে ধরে বিতর্কে জল ঢালার চেষ্টা করছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন