উত্তাল উত্তর চব্বিশ পরগনা। ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়া-জগদ্দলের অশান্তির মধ্যেই আমডাঙায় ফের মৃত্যুকে ঘিরে থমথমে গোটা এলাকা। শুক্রবার রাতে আমডাঙ্গার বহিচগাছিতে নাজিমুল করিম নামের এক যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ করেছে বিজেপি। পদ্ম শিবিরের দাবি, নিহত যুবক তাঁদের সমর্থক। শনিবার বিকেলে নাজিমুল করিমের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ (আমডাঙা ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের অন্তর্গত) অর্জুন সিং। সেখান থেকেই এদিন মমতা এবং তৃণমূল সরকারকে তীব্র ভাষায় কটাক্ষ করে অর্জুন সিং বলেন, "এই যে ৬ মাসের সরকার আছে, সেটা কীভাবে আরও তাড়াতাড়ি চলে যায় তার ব্যবস্থা আমরা করছি"।
এদিন রাজ্যের পুলিশের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দেন একদা তৃণমূলের বাহুবলী নেতা অর্জুন সিং। হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, "এখানকার পুলিশের বিরুদ্ধে আমরা নোটিস নিয়ে আসব। এরা মানুষকে মানুষ বলে মনেই করছে না। শুধু রঙ দেখে মানুষ খুন করছে"। উল্লেখ্য, ভাটপাড়ার অশান্তির ঘটনায় প্রথম দিন থেকেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। ভাটপাড়ায় পুলিশের গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন অর্জুন। এই ঘটনায় সরাসরি পুলিশ প্রশাসনকে দায়ী করে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের অফিসও ঘেরাও করে অর্জুন এবং তাঁর বাহিনী।
আরও পড়ুন- ‘পুলিশ কেন নিরীহদের লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ল’? প্রশ্ন ভাটপাড়ায় নিহতদের পরিবারের
এদিন বিকালে আমডাঙা থেকে কেবল পুলিশ-প্রশাসনকেই নয়, খোদ মুখ্যমন্ত্রী তথা তাঁর একদা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও হুঁশিয়ারি দেন অর্জুন। তিনি এদিন সরাসরি বলেন, "নন্দীগ্রামে সিপিএম শেষ হয়েছিল। এবার আরেকটা নন্দীগ্রাম হওয়া দরকার। রাষ্ট্রপতি শাসনের রাস্তা খুলে দিচ্ছে এই সব ঘটনা। আমরা চাই রাজ্যপাল এসে একবার এলাকা পরিদর্শন করুন। রানাঘাট, সন্দেশখালির মতো ভাটপাড়াতেও খুনের রাজনীতি করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এখানে কোনও গণতন্ত্র নেই"।
আরও পড়ুন- অগ্নিগর্ভ ভাটপাড়ায় জোড়া মৃতদেহ নিয়ে মিছিলে বিজেপি-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ
বিজেপি কি এ রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করতে চাইছে, অর্জুনের মন্তব্যে ফের এই প্রশ্নটিই এদিন সামনে চলে এল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। এর আগে মকুল রায়-দিলীপ ঘোষরা বারবার বলেছেন, রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে 'শহিদ' হওয়ার সুযোগ দেবেন না। কিন্তু, তারপরও এদিন বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল ঘুরে যাওয়ার পর অর্জুন সিং-এর সরকার ফেলে দিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার এমন স্পষ্ট বার্তা এক রকম বিভ্রান্তি তৈরি করছে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।