মুকুল রায়ের ‘পরামর্শে’ই কি এবার আইনের পথে হাঁটলেন সব্যসাচী দত্ত? শুক্রবার সব্যসাচী বনাম তৃণমূল সংঘাত গড়াল হাইকোর্ট পর্যন্ত। বিধাননগরের মেয়রের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে তাঁরই দল তৃণমূল। সেই প্রস্তাবের ভিত্তিতে আগামী ১৮ জুলাই ভোটাভুটিতে অংশ নেবেন বিধাননগর পুরনিগমের কাউন্সিলররা। এমতাবস্থায় অনাস্থাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করলেন সব্যসাচী দত্ত। সোমবার বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে এ মামলার শুনানি।
উল্লেখ্য, এদিন আইনজ্ঞদের দ্বারস্থ হন বিধাননগরের মহানাগরিক তথা রাজারহাট-নিউটাউনের তৃণমূল বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে শুক্রবার বিধাননগরের মেয়র জানান, অনাস্থার বিষয় নিয়েই আইনজ্ঞদের পরামর্শ নিচ্ছেন তিনি। তবে কি দলের ডাকা অনাস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই মামলা করবেন সব্যসাচী? এই প্রশ্নের উত্তরে পোড় খাওয়া রাজনীতিকের সটান জবাব ছিল, ‘‘আইনজ্ঞরা যদি মনে করেন করা দরকার, তাহলে করব’’।
আরও পড়ুন: সব্যসাচীকে লড়াইয়ের কৌশল বাতলে দিলেন মুকুল রায়
উল্লেখ্য, নাগাড়ে দলের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় সম্প্রতি সব্যসাচীর ডানা ছেঁটেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। চলতি সপ্তাহেই বিধাননগরের মেয়রের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতি ‘ভাই’কে পরামর্শ দিতে বৃহস্পতিবার ফের সব্যসাচীর বাড়িতে যান মুকুল রায়। সব্যসাচী দত্তের বাড়ি থেকে বেরিয়ে মুকুল রায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘সব্যসাচীর সঙ্গে সম্পর্কটা অন্যরকম, চিরদিনের সম্পর্ক। ১৮ জুলাই ওঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হবে। কীভাবে কী হবে, তাই আলোচনা করতে এসেছি। লড়াইয়ের স্ট্র্যাটেজি বলে দিলাম’’। এর আগে গত রবিবার সব্যসাচীর পাশে বসে পরোটা-ফিশ কাটলেট খাওয়ার পর মুকুল বলেছিলেন, ‘‘সব্যসাচীকে উপদেশ দিতে এসেছি’’। এরপর আজকের এই ঘটনা প্রবাহ। ফলে, মুকুল রায়ের পরামর্শ মেনেই সব্যসাচী আইনজ্ঞদের দ্বারস্থ হলেন বলে মনে করছে রাজনীতির কারবারিদের একাংশ।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার সব্যসাচীর বিরুদ্ধে বিধাননগর পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তীর কাছে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেন ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়। সব্যসাচীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে সই করেছেন ৩৫ জন কাউন্সিলর। অনাস্থা প্রসঙ্গে বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত বলেন, ‘‘পুর আইন অনুযায়ী, অনাস্থা আনতেই পারে। অনাস্থা আনতে হলে এজেন্ডা অনুযায়ী মিটিং ডাকতে হবে। সেই চিঠি পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ করব’’। সব্যসাচী যে মেয়র পদ ছাড়তে নারাজ, তা স্পষ্ট করে তিনি বলেন, ‘‘যতদিন দায়িত্বে থাকব, ততদিন দায়িত্ব পালন করব’’।