সন্দেশখালিতে নিহত দুই বিজেপি কর্মীর দেহ কলকাতায় আনার চেষ্টাকে কেন্দ্র করে দিনভর ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল। দফায় দফায় পুলিশি বাধার মুখে শেষ পর্যন্ত মৃতদেহ সন্দেশখালিতে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন বিজেপি নেতারা।
বিজেপির অভিযোগ, পুলিশ বলপূর্বক নিহত দলীয় কর্মীদের দেহ কলকাতায় নিয়ে আসার পথে বাধা সৃষ্টি করেছে। হুগলির নবনির্বাচিত সাংসদ এবং দলের মহিলা মোর্চার নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়কে নিগ্রহ করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে বিজেপি।
সন্দেশখালির ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকাল, সোমবার ১২ ঘন্টার বসিরহাট বনধের ডাক দিয়েছে বিজেপি। পাশাপাশি কাল রাজ্যের সর্বত্র কালা দিবস পালন করবেন গেরুয়া শিবিরের নেতাকর্মীরা। বিজেপি-র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ মিছিল এবং অবস্থান করা হবে। আগামী ১২ জুন, বুধবার বড় জমায়েত করে লালবাজার অভিযান করবে বিজেপি। প্রশাসনের আশঙ্কা, কেন্দ্রের শাসকদলের ওই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তাল হতে পারে কলকাতা।
আরো পড়ুন: তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তাল সন্দেশখালি, নিহত পাঁচ
এদিন সকাল থেকেই দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায় সন্দেশখালি ও সংলগ্ন অঞ্চলে। সন্দেশখালিতে নিহত দুই দলীয় কর্মীর দেহ কলকাতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করেন বিজেপি কর্মীরা। গোলমালের আশঙ্কায় তাঁদের বাধা দেয় পুলিশ। এর প্রেক্ষিতে পুলিশের এদিন একাধিক জায়গায় দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ান গেরুয়া শিবিরের নেতাকর্মীরা।
বিজেপি-র সাতজন নেতা-সাংসদের প্রতিনিধি দল এদিন সন্দেশখালি পরিদর্শনে যান। প্রথমে বসিরহাট হাসপাতালে দুই নিহত বিজেপি কর্মীর দেহের ময়নাতদন্ত হয়। সেখান থেকে দুটি শববাহী গাড়িতে মৃতদেহ নিয়ে দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহা, অর্জুন সিং, লকেটরা কলকাতার দিকে রওয়ানা হন।
অভিযোগ, মালঞ্চ মোড়ের কাছে পুলিশ বিজেপি নেতাদের কনভয় আটকে দেয়। এরপরই পুলিশের সঙ্গে বিজেপি নেতাকর্মীদের তুমুল ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। পুলিশের তৈরি করা ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন বিজেপি কর্মীরা। কনভয় কলকাতার দিকে এগোতে থাকে। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরেই মিনাখাঁর বামনপুকুরে ফের পুলিশের বড় বাধার সামনে পড়েন বিজেপি নেতৃত্ব। রাস্তার উপর আড়াআড়ি ভাবে প্রিজন ভ্যান দাঁড় করিয়ে গেরুয়া শিবিরের কনভয় আটকে দেয় পুলিশ। এখানেও দফায় দফায় বিজেপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশকর্মীদের ধস্তাধস্তি হয়। গোলমাল চলাকালীন লকেট একবার ঘোষণা করেন, রাস্তার ওপরেই সম্পন্ন হবে কর্মীদের শেষকৃত্য। বিজেপি-র অভিযোগ, লকেট চট্টোপাধ্যায়কে হেনস্থা করেন পুলিশকর্মীরা।
দীর্ঘ চাপানউতোরের পর দেহ নিয়ে ফের সন্দেশখালির দিকে রওয়ানা দেন বিজেপি নেতৃত্ব। সায়ন্তন বসুর কথায়, "রাজ্য সরকার কতখানি অমানবিক এদিনের ঘটনায় তা প্রমাণ হল। আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাব।"