বাংলা ভেঙে পৃথক রাজ্যের দাবিতে সরব বিজেপির একের পর সাংসদ। পাল্টা পদ্ম শিবিরের বিরুদ্ধে বঙ্গবঙ্গের অভিযোগ তুলেছে শাসক তৃণমূল। অস্বস্তি বাড়ছে বঙ্গ বিজেপি নেতাদের। এই ইস্যুতে দুই সাংসদের মন্তব্যকে আগেই 'ব্যক্তিগত' বলে দূরত্ব বাড়ানোর চেষ্টা করেছে গেরুয়া বাহিনী। দিলীপ ঘোষকে বলতে হয়েছে 'বিজেপি অখণ্ড বাংলার উন্নয়নের পক্ষে'। কিন্তু জন বার্লা ও সৌমিত্র খাঁ-য়ের দাবি ঘিরে বিতর্ক মিটছে না। তাই এবার বঙ্গভঙ্গের পাল্টা 'বঞ্চনা'র তত্ত্বকেই কৌশলে হাতিয়ার করছে বাংলার বিজেপি নেতৃত্ব। মঙ্গলবার রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের কথাতেই তা স্পষ্ট হচ্ছে।
কী বলেছেন দিীলীপ ঘোষ?
গত সপ্তাহেই পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি তুলেছিলেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা। এই দাবিকে সমর্থন করেছেন ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়। রাজ্য রাজনীতিতে যা ঘিরে বিতর্ক মাথাচাড় দিয়েছে। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই ফের বাংলা ভাগের দাবি করেছেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। জঙ্গলমহলকে কেন্দ্র শাসিত রাজ্য করার পক্ষে তিনি। উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহলের দীর্ঘ বঞ্চনার ভিত্তিতেই পৃথক রাজ্যের দাবি এই দুই গেরুয়া সাংসদের। সেই বঞ্চনার কথা এবার শোনা গেল দিলীপ ঘোষের মুখেও।
আরও পড়ুন- বার্লার পথেই সৌমিত্র, এবার পৃথক জঙ্গলমহল রাজ্যের দাবি
মঙ্গলবার রাজ্য বিজেপি সভাপতি বলেছেন, 'বঙ্গভঙ্গের দাবি কেউ করেনি। কলকাতা ও সংলঙ্গ অঞ্চকে বাদ দিয়ে পশ্চিবঙ্গের সর্বত্র বঞ্চনা হয়েছে। তাই বিরোধিরা ভোট পেয়েছে। তৃণমূলের প্রতি আস্থা নেই বোঝা যাচ্ছে। সরকার এই দিকে নজর দিয়ে উন্নয়ন করুক। ভোটের আগে উন্নয়নের ছিঁটেফোঁটা দিয়ে বাংলার আদিবাসী, জনজাতি সহ বাংলার মা বোনেদের মন জয়ের চেষ্টা করলে চলবে না। স্থানী উন্নয়ন চাই।' দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, 'ভোটের আগে বাংলার মা, বোনেদের ৫০০ টাকা করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, কয়েকজনের অ্যাকাউন্টে সেই টাকা পড়েছে। কিন্তু ভোট মিটতেই মুখ্যমন্ত্রী বলছেন কোষাগারে টাকা নেই। তাই ওই অর্থ দেওয়া যাচ্ছে না। এ ধরণের প্রতারণা কেন করা হবে?'
আরও পড়ুন- বঙ্গভঙ্গের জল মাপা চলছে, উত্তাপ বাড়ছে উত্তরবঙ্গে
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পৃথক রাজ্যের দাবি বাঙালি আবেগকে ধাক্কা দিতে পারে। এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে প্রচারে মাইলেজ পাওয়ার চেষ্টা করবে তৃণমূল। চাপ বাড়বে বিজেপির। যার রেশ পড়তে পারে ২০২৪-র লোকসভায়। তাই কেন পৃথক রাজ্যের দাবি- বঙ্গবঙ্গের প্রসঙ্গ এড়িয়ে সেই কারণটিকে জোর দিয়ে সামনে আনতে মরিয়া দিলীপবাবুরা। এছাড়া তৃণমূলের ভিন রাজ্যে বিস্তারের পরিকল্পনা রুখে দিতেই বঞ্চনার তত্ত্বকেই কৌশলে হাতিয়ার করছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা।
অবশ্য, বিজেপির পৃথক রাজ্যের দাবিকে বাঙালি বিরোধী বলে এখনই সুর চড়াচ্ছে তৃণমূল। এদিন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, 'ভোটে হেরে গিযে এখন বাংলা ভাগের চেষ্টা করছে বিজেপি। কিন্তু ভোটের ফলাফলই বলে দিয়েছে বাংলার মানুষ তৃণমূলের পক্ষে, রাজ্য ভাগের বিপক্ষে। ওরা মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন