আর শুধু অভিযোগ নয়। এবার কোভিড-১৯ মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে সমীক্ষা শুরু করল বঙ্গ বিজেপি। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য সরকার ব্যর্থ বলে ইতিমধ্যেই একাধিকবার তোপ দেগেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু সেখানেই থামতে রাজি নন তাঁরা। এই ইস্যুতে রাজ্যবাসীর কী মতামত তা জেনেই আগামীতে মমতা সরকার বিরোধী প্রচার কৌশলের রূপরেখা তৈরিতে মরিয়া গেরুয়া দল।
বাংলায় করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্য়া ঘিরে প্রথম থেকেই কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্ব রয়েছে। কেন্দ্রীয় রিপোর্টকে হাতিয়ার করে মুরলীধর সেন লেনের নেতাদের অভিযোগ, করোনা মোকাবিলায় পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। রোগীরা ঠিকমতো চিকিৎসা পাচ্ছেন না। হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো নেই। করোনার তথ্য লুকনো ও মৃতদেহ গোপনে শেষকৃত্য করা হচ্ছে বলে নবান্নের বিরুদ্ধে সরব দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহারা। এছাড়াও, রয়েছে লকডাউনে রেশন দুর্নীতির অভিযোগও।
আরও পড়ুন- ‘তথ্য লুকনো বন্ধ করুন’, মমতাকে টুইট-কটাক্ষ রাজ্যপালের
এই পরিস্থিতিতে করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের ভূমিকা কীরকম, তা নিয়ে সমীক্ষা করতে ময়দানে বিজেপি। সমীক্ষার জন্য চারটি প্রশ্ন রাখা হয়েছে। এক, পশ্চিমবঙ্গ সরকার করোনা নিয়ে তথ্য লুকোচ্ছে কি না? দুই, কেন্দ্র সরকার বিনামূল্যে চাল ও ডাল রাজ্যে পাঠানো সত্ত্বেও সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে না, এর জন্য কে দায়ী? তিন, রাজ্যের বিশেষ কিছু এলাকার মানুষ লকডাউন মানছে না। এর জন্য কি মুখ্যমন্ত্রীর তোষণ নীতি দায়ী? চার, পশ্চিমবঙ্গে করোনা পরীক্ষার হার দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর ফলে কি করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে না?
বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, 'প্রথম থেকেই আমরা বলে আসছি রাজ্য সরকার করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থ। করোনা আক্রন্তদের প্রকৃত সংখ্যা চেপে যাওয়া হচ্ছে, রাতের অন্ধকারে সংক্রমমণে মৃতদের দেহ শেষকৃত্য করে দিচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রেশন দুর্নীতি। কেন্দ্র চাল, ডাল দেওয়া সত্ত্বেও দুর্নীতির ফলে বহু মানুষ খাদ্যপণ্য পাচ্ছেন না। এই ধরনের সমীক্ষার ফলে রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে মানুষ তাঁদের মতামত জানাতে পারবেন।'
আরও পড়ুন- সালারের পথেই মুর্শিদাবাদের একাধিক ডিলারের বিরুদ্ধে রেশন নিয়ে বিক্ষোভ
লকডাউনের জেরে এলাকায় গিয়ে মানুষের মতামত জানতে পারছেন না বিজেপি নেতৃত্ব। তাই করোনা ইস্যুতে রাজ্য সরকারের তথা শাসকদলের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে অনলাইনে মতামত সংগ্রহ আদতে গেরুয়া শিবিরের কৌশল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
পদ্ম শিবিরের অনলাইনে মতামত প্রসঙ্গে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল অবশ্য কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
প্রসঙ্গত, করোনায় মৃতদের কারণ নির্ধারণে রাজ্য সরকার নিযুক্ত অডিট কমিটির আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টে গত বৃহস্পতিবারই জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন দিলীপ ঘোষ। সিসিইউ ও আইসিইউ-তে মোবাইলের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। সেই সিদ্ধান্ত নিয়েও জনস্বার্থ মামলায় প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন