মঞ্চে গান গাইতে গাইতে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী কেকে। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। যদিও, কেকে-র মৃত্যু নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। শুরু হয়েছে বিতর্ক। সেই বিতর্কেই ঘি ঢাললেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। তাঁর দাবি, 'বদ্ধ ঘরে দম বন্ধ করে মৃত্যুর দিকে ঠেলা হল কেকে-কে। আয়োজকদের গ্রেফতার করা উচিত।'
বুধবার ফেসবুক পোস্টে অনুপম লিখেছেন, 'একজন অসাধারণ সঙ্গীত-শিল্পী কে একটি বদ্ধ ঘরে দম বন্ধ করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার জন্য, অনুষ্ঠানের আয়োজকদের arrest করা উচিত!!! যদিও সেটা হবে না, এটা পশ্চিমবঙ্গ!!!'
কেকে-র মৃত্যুর পরই শুরু হয়েছে মৃত্যুর নানা দিক নিয়ে চুলচেড়া বিশ্লেষণ। অভিযোগ উঠেছে কনসার্টের আয়োজকদের বিরুদ্ধেও। আসন সংখ্যার তুলনায় অনেক বেশি অনুরাগী মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল বলে দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের। প্রায় আড়াই হাজারের দর্শক আসনে ওই সন্ধ্যায় ৭ থেকে ৮ হাজার উৎসাহী নজরুল মঞ্চে হাজির ছিলেন বলে খবর। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের দাবি, প্রেক্ষাগৃহটিতে বাতানুকূল হলেও অতিরিক্ত ভিড় পরিস্থিতিকে বেগতিক করেছে। বুধবার সংবাদমাধ্যমে ফিরহাদ বলেছেন, 'প্রেক্ষাগৃহে ক্যাপাসিটি-র (আসন সংখ্যার) থেকে বেশি লোক ছিল। (কেকে-র অনুষ্ঠানে) মানুষের উচ্ছ্বাস আটকানো যায়নি। তবে এসি ঠিক ছিল।'
আরও পড়ুন- ঘেমে-নেয়ে স্টেজ ছাড়েন বিধ্বস্ত KK, ভিডিও পোস্ট করে উদ্যোক্তাদের তোপ নেটিজেনদের
এই প্রেক্ষিতে কেকে-র মৃত্যু নিয়ে অনুপম হাজরার 'বদ্ধ ঘরে দম বন্ধ করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার' অভিযোগটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। কেন ধারণ ক্ষমতার বেশি দর্শক মঞ্চে প্রবেশ করার ছাড়পত্র দেওয়া হল সেই প্রশ্ন তুলে আয়োজকদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন এই বিজেপি নেতা। সঙ্গে তাঁর আশঙ্কা, পশ্চিমবঙ্গে এই ধরণের অপরাধের ক্ষেত্রে কোনওভাবেই গ্রেফতার হয় না। অর্থাৎ, তৃণমূল পরিচালিত প্রশাসনকেই দুষেছেন তিনি।
আরও পড়ুন- KK-র মৃত্যুর পরই খুনের হুমকি! তড়িঘড়ি থানায় ছুটলেন রূপঙ্কর
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, অনুষ্ঠানের মাঝে মঞ্চে থাকা স্পটলাইট বারবার বন্ধ করতে বলেছিলেন কেকে। তাঁর শরীরে যে একটা অস্বস্তি হচ্ছিল, সেটা অনেকেই দেখেছেন। কেকের অনুষ্ঠানের পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কেউ কেউ বলছিলেন, ‘এদিন মঞ্চে প্রচণ্ড ঘামছিলেন গায়ক। কিছুটা অস্বস্তিও বোধ করছিলেন’। তারপরই শো’ শেষে হোটেলে ফেরার পথেই গাড়িতে শীত শীত ও অনুভব করেন কেকে। গাড়িতে হোটেলে ফেরার পথে গাড়ির এসিও বন্ধ করতে বলেন তিনি। হোটেলে ফিরে যাওয়ার পরই খানিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। সিএমআরআই হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।