Advertisment

দিলীপ বলেন হ্যাঁ, কৈলাস বলেন না, ত্রিশঙ্কু অমিত শাহের সভা

ব্যাপারটা দাঁড়াল এই, দলের রাজ্য সভাপতি বলে গেলেন, আদালতের রায় ছাড়াও সভা হবে। কিন্তু দলের কেন্দ্রীয় নেতা জানিয়ে দিলেন, আদালতের রায় মেনেই সব হবে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

কোচবিহারে দলের বৈঠক থেকে বেরিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়ে দিলেন, সে শহরে 'গণতন্ত্র বাঁচাও' রথযাত্রা এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সভার সব প্রস্তুতি সম্পূর্ণ। তারপরই দিলীপবাবু বলেন, "নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী সভা তো হবেই, আদালত যদি রায় দেয় তাহলে রথযাত্রাও হবে। পুলিশ কেন অনুমতি দেবে না, সেটা তো জানা কথা।" দিলীপবাবু আরও বলেন, "এই রথযাত্রা ও সভার জন্য ইতিমধ্যে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে।"

Advertisment

মেজাজের মাথায় রাজ্য সভাপতি এই ঘোষণা করে বেরিয়ে যাওয়ার পরই কিন্তু সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয় জানিয়ে দেন, আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের ওপর নির্ভর করবে রথযাত্রা ও সভা। তাছাড়া, অমিত শাহ আদৌ আসবেন কী না, সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বিজয়বর্গীয়। আগামীকাল সকালে ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের দিকে তাকিয়ে রয়েছে বিজেপি, জানিয়ে দেন ওই কেন্দ্রীয় নেতা।

publive-image দিলীপ ঘোষের ওপর আক্রমণের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ছবি: শশী ঘোষ

বিজয়বর্গীয় বলেন, "কেন্দ্রে আমাদের সরকার আছে, বেশ কিছু রাজ্যেও রয়েছে। আদালতের রায় আমাদের মানতেই হবে। প্রশাসনের সমস্ত স্তরে আবেদন করে সাড়া না পাওয়ায় আমরা আদালতে গিয়েছি। কাল আদালতের রায়ের পর ফের আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।" অর্থাৎ ব্যাপারটা দাঁড়াল এই, দলের রাজ্য সভাপতি বলে গেলেন, আদালতের রায় ছাড়াও সভা হবে। কিন্তু দলের কেন্দ্রীয় নেতা জানিয়ে দিলেন, আদালতের রায় মেনেই সব হবে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টে যাবে দল।

আরও পড়ুন: কোচবিহারে দিলীপ ঘোষের গাড়ির ওপর হামলা, উত্তপ্ত শহর

এদিন আদালতের রায়ের পর কোচবিহারে এক হোটেলে জরুরি বৈঠকে বসেন বিজেপি নেতৃত্ব। বৈঠকে ছিলেন বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়, দিলীপ ঘোষ। রাজনৈতিক মহলের মতে, বিজেপির মধ্যেই এই সভা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। অন্যদিকে, দিলীপ ঘোষ এবং তাঁর কনভয়ের ওপর হামলার প্রতিবাদে কোচবিহারে মশাল মিছিল করে বিজেপি। ওই ধিক্কার মিছিলে ছিলেন বিজয়বর্গীয় এবং দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা।

মুকুলবাবুর দাবি, "একটি রাজনৈতিক কর্মসূচিকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ এই সরকার। রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পারছেন না তাঁরা। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এই সরকারে বিরুদ্ধে ১৫৫ ধারা জারি করা উচিত।"

publive-image দিলীপ ঘোষের কনভয়ের ওপর হামলার প্রতিবাদে কোচবিহারে বিজেপির মশাল মিছিল। ছবি: শশী ঘোষ

রাজনৈতিক চড়াই উতরাইয়ের পাশাপাশি দিনভর চলল ধর্মীয় ভাবাবেগের স্রোত। কোচবিহারের কুলদেবতা মদনমোহন। সেই মদনমোহনের রথে চাপা নিয়ে সারা কোচবিহার ব্যানার, ফেস্টুনে ছেয়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। কোচবিহারের মানুষের আবেগের প্রতি আবেদন স্পষ্ট। অন্যদিকে, রাসযাত্রার এই শহরকে কেন্দ্র করেই উত্তরবঙ্গে লোকসভা নির্বাচনী প্রচারে ঝড় তুলতে চাইছে গেরুয়া শিবির। কোচবিহারের রাস্তার যেদিকে তাকানো যায়, সেখানেই তৃণমূল ও বিজেপির পতাকায় ছয়লাপ। এ যেন ফেস্টুন ও ব্যানারের প্রতিযোগিতা চলছে শহরে। বিশেষ করে মদনমোহনকে সঙ্গে নিয়ে রথ বিরোধিতার প্রচারে জোর দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। পাশাপাশি গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রার প্রতিবাদে মিছিলও করেছে তারা।

এদিকে বুধবার ঝিনাইডাঙ্গা সভাস্থল পরিদর্শনে যান কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়, দিলীপ ঘোষ। দলের সাধারন সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় তো বেশ কয়েকদিন ধরেই কোচবিহারে ঘাঁটি গেড়ে বসে রয়েছেন।

bjp dilip ghosh west bengal politics north bengal
Advertisment