ফের ভাঙন বঙ্গ বিজেপিতে? উত্তরটা স্পষ্ট না হলেও ইঙ্গিতটা কিন্তু রয়েই গেল। পদ্ম শিবির ছাড়ার আগে ঠিক যেভাবে দিন কয়েক লাগাতার তৃণমূল-স্তুতি শোনা যেত অর্জুন সিংয়ের মুখে, তেমনই এবার সেই পথই ধরেছেন বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়ও। পূর্ব মেদিনীপুরে গিয়ে রাজ্য সরকারের কাজের ঢালাও প্রশংসা হিরণের মুখে। তবে কি অভিনেতার জোড়াফুলে প্রত্যাবর্তন শুধুই সময়ের অপেক্ষা? জোর চর্চা রাজনৈতিক মহলে।
একটা একুশের ভোট সব হিসেব ওলোট-পালোট করে দিয়েছে। গত বছর বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে এরাজ্যে গেরুয়ার ঘর ভাঙা শুরু। সেই ট্রেন্ড এখনও অব্যাহত। এরাজ্যে সর্বশেষ বিজেপি ছেড়েছেন অর্জুন সিং। এবার কি পদ্মে মোহভঙ্গ হিরণেরও? খড়গপুরের বিজেপি বিধায়ক হিরণের মুখে তৃণমূল নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের ঢালাও প্রশংসা যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বৃহস্পতিবার ঠিক কী বলেছেন হিরণ? যাগত কয়েক বছরে একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে পর্যটন নির্ভর পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন প্রান্তে বহু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এলাকাগুলির পুনর্গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরে গিয়ে রাজ্য সরকারের সেই কাজেরই ভূয়সী প্রশংসা হিরণের মুখে।
তাঁর কথায়, ''রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা ও জেলাশাসকের যুদ্ধকালীন তৎপরতায় জেলায় আগের অবস্থা ফিরে এসেছে। পর্যটনকেন্দ্রগুলিকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।'' রাজনীতি ভুলে বাংলার উন্নয়নের জন্য সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বানও জানিয়েছেন বিজেপির এই তারকা বিধায়ক।
আরও পড়ুন- KK-কে নিয়ে কুমন্তব্য, রূপঙ্করকে ‘গুঁতো’য় সবক শেখালেন অনুপম
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছরে একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিধ্বস্ত হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্ত। সৈকতনগরী দিঘা থেকে শুরু করে মন্দারমণি, তাজপুর, মহিষাদল, তমলুক, কাঁথির বিভিন্ন এলাকায় বহু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এরপরেই জেলার পর্যটেনকেন্দ্রগুলির পুনর্গঠনে বাড়তি উদ্যোগ নেয় রাজ্য সরকার। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে পুনর্গঠনের কাজ করা হয়।
রাজ্য সরকারের সেই কাজেই যথেষ্ট খুশি বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়। তবে হিরণের মুখে তৃণমূল নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের এহেন প্রশংসায় অন্য ইঙ্গিত পাচ্ছে রাজনৈতিক মহল। তবে কি পদ্ম ছেড়ে জোড়াফুলে মন মজেছে বিজেপি নেতার? অর্জুন সিংও কিন্তু ঠিক একইভাবে পাট শিল্পের উন্নতি নিয়ে রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়ে টানা কয়েকদিন ধরে সওয়াল তুলে গিয়েছিলেন। শেষমেশ গেরুয়া শিবির ছেড়ে তৃণমূলে ফিরেছেন অর্জুন। অর্জুনের পথেই কি এগোচ্ছেন হিরণ? উত্তরটা স্পষ্ট না হলেও ইঙ্গিতটা কিন্তু রয়েই গেল।