বিজেপি সাংসদ জন বার্লার পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবি নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। তখনই আরও একবার বাংলা ভাগের বিতর্ক উস্কে দিলেন আরেক গেরুয়া সাংসদ। এবার পৃথক কেন্দ্র শাসিত জঙ্গলমহলের দাবি তুলেছেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। মুখ্যমন্ত্রীর তোলা বহিরাগত তত্ত্বের রেশ ধরেই পৃথক রাজ্যের দাবি উঠছে বলে মনে করেন এই বিজেপি সাংসদ। তাঁর দাবি, উত্তরবঙ্গের মতোই বঞ্চনার শিকার জঙ্গলমহলও। সেখানে রহিঙ্গারা চাকরি পাচ্ছেন। বেকারদের হতাশা বাড়ছে। তাই পৃথক রাজ্য না হলে সমস্যার সুরাহা সম্ভব নয়।
কী বলেছেন সৌমিত্র খাঁ?
উত্তরবঙ্গের বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরব হয়ে বাংলা ভাগের দাবি তুলে বিতর্ক তৈরি করেছেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা। পদ্ম শিবিরের অন্দরেও এই দাবি ঘিরে মতান্তর রয়েছে। অস্বস্তি বাড়ছে গেরুয়া দলে। রাজ্য বিজেপি সভাপতি সাফ বলেছেন, 'বিজেপি অখণ্ড বাংলার উন্নয়নে আগ্রহী।' এর মধ্যেই পৃথক জঙ্গলমহলের দাবি তুলে বিতর্ক আরও বাড়ালেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ।
গত দশ বছরে জঙ্গলমহলে প্রভূত উন্নয়ন হয়েছে বলে দাবি তৃণমূলের। এবার এই অঞ্চলে জোড়া-ফুল ভালো ফল করেছে। কিন্তু পাল্টা দীর্ঘ অনুন্নয়ন, কর্মসংস্থান, বঞ্চনাকে হাতিয়ার করেছেন সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। দাবি তুলেছেন কেন্দ্র শাসিত পৃথক জঙ্গলমহলের। তিনি বলেছেন, 'জঙ্গমহল উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। এখানকার কোনও যুবকের চাকরি হয় না। এখানকার সম্পদ নিয়ে যাওয়া হয় অন্যত্র। কিন্তু উন্নয়নের লেশমাত্র নেই। এখন পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম নিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবি উঠতেই পারে।'
আরও পড়ুন- Teachers Recruitment: পুজোর আগে-পরে ঢালাও শিক্ষক নিয়োগ রাজ্যে, ঘোষণা মমতার
শুধু বঞ্চনা, অনুন্নয়নই নয়, মুখ্যমন্ত্রীর তোলা বহিরাগত তত্ত্বের রেশ ধরেই পৃথক রাজ্যের দাবি উঠছে বলে মনে করেন এই বিজেপি সাংসদ। তাঁর যুক্তি, 'মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে প্রধানমন্ত্রীকে বহিরাগত বলে আখ্যা দেন, সেভাবে জঙ্গলমহলের ছেলেরাও মুখ্যমন্ত্রীকে বহিরাগত বলবে। বাংলা নয়, বাংলা কোনও দেশের নাম নয়, বাংলা বাংলা বলে পশ্চিমবঙ্গকে বাংলা করছেন। আমরা বলছি পশ্চিমবঙ্গ। বাংলা বলে নতুন দেশ তৈরির করার চেষ্টা করছেন। কারণ, ওঁর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার শখ। আমরা পৃথক কেন্দ্র শাসিত জঙ্গলমহল রাজ্যের দাবি জানাব।'
আরও পড়ুন- পদ্ম ছেড়ে ঘাস-ফুলে আলিপুরদুয়ারের গঙ্গাপ্রসাদ, ‘এটা পূর্বাভাস’- দাবি মুকুলের
ফেসবুকে ভিডিও বার্তায় সোমবার সৌমিত্র খাঁ বলেছেন, '১৮০৩ সালে জঙ্গলমহল জেলা ছিল। ১৮৮৬ সালে বাঁকুড়া নতুনভাবে গঠিত হয়। তাই আমরা সিংভূম, মানভূমের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। এই হিসাবেই উনি আমাদেরও বহিরাগত বলতেই পারেন। এখানে এখন রোহিঙ্গারা চাকরি পাচ্ছেন। অনুন্নয়ন মানবো না। জঙ্গলমহল বাং আমলের মতো তৃণমূল আমলেও অবহেলার শিকার। তাই এখানকার এক যুবক হিসাবে চাইবো জঙ্গলমহলল কেন্দ্র সাসিত অঞ্চল করা হোক।'
জন বার্লার দাবি 'ব্যক্তিগত' বলে জানিয়েছে বিজেপি। বাংলা ভেঙে এখন পৃথক রাজ্যের দাবিতে সরব আরও এক সাংসদ। মুখ খুলবে গেরুয়া নেতৃত্ব?
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন