উনিশের নির্বাচনী ধাক্কা সামলে একুশের বিধানসভা ভোটে ঘুরে দাঁড়াতে আম জনতার মন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তৃণমূল। তৃণমূলস্তরে পৌঁছোতে অভিনব কায়দায় ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি শুরু করেছে মমতা বাহিনী। জনসংযোগ বাড়াতে ৯১৩৭০৯১৩৭০ ফোন নম্বর এবং ওয়েবসাইট- www.didikebolo.com চালু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ অনুযায়ী প্রত্যন্ত গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পাত পেরে খেয়ে গল্পগুজব করছেন দলের বিভিন্ন স্তরের নেতারা। আর এ দৃশ্য দেখেই এবার তৃণমূলকে বিঁধতে আসরে নেমেছে গেরুয়াবাহিনী। বিজেপিরই সাংগঠনিক কৌশল চুরি করে তৃণমূলের প্রচার চলছে বলে দাবি করেছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক রাহুল সিনহা। যদিও রাজ্যের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন অনুকরণের প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের দয়াতেই মমতা আজ রাজনীতিতে আছেন, বিস্ফোরক মুকুল
এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেছেন, ‘‘অমিত শাহ যখন লোকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খেয়েছিলেন তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর লোকেরা কী ধরনের কথা বলেছিলেন তা একবার স্মরণ করুন। এই কারণে খাওয়ার ব্যাপার নিয়ে নানা কুৎসা ও মন্তব্য করেছিলেন। তৃণমূলের লোককে দেখলেই লোকেরা এখন আতঙ্কিত হচ্ছেন। তাঁরা ভাবছেন যে আমার বাড়িটা দেখতে এসেছে, কাটমানি খেতে এসেছে’’। বিজেপি নেতার দাবি, ‘‘মানুষ তৃণমূলকে বিশ্বাস করে না। মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ হওয়ার কোনও রাস্তা আর নেই’’
আরও পড়ুন: বৈশাখীর ‘চাকরি খেলেন’ মমতা! শোভনের পাশে বসে কাঁদতে কাঁদতে ইস্তফা ঘোষণা
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ বাংলার কয়েকটি বাড়িতে পাত পেরে খেয়েছিলেন। সেটাই ছিল বাংলায় বিজেপির প্রচার কৌশল। তখন সমালোচনা করেছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। রাহুলবাবুর দাবি, ‘‘চুরি বিদ্যায় বাইরে থেকে শিক্ষক এনে অন্য সংগঠনের সাংগঠনিক কৌশল চুরি করেছে তৃণমূল। এভাবে কিছু দিন এগোনো যায়। কিন্তু সবই তো বিজেপির নকল করে প্রচার করছে তৃণমূল’’। এ প্রসঙ্গে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে তোলাবাজি, দুর্ব্যবস্থা নিয়ে বলুক, একদিনে এক লক্ষ ফোন হতে পারে কখনও! গিমিক না খড়কুটো কি বলব জানি না। গ্রামে গেলে কত ধানে কত চাল বুঝতে পারবে’’।
আরও পড়ুন: বৈশাখীর কথায় ‘ব্যথা’ পেলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়
বিজেপির প্রচার কৌশল অনুকরণ করছে তৃণমূল কংগ্রেস? এই প্রশ্নের জবাবে রাজ্যে মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সরকার বলেছেন, ‘‘আমি চাই না ভাল কাজে সেরকম কোনও প্রসঙ্গ তুলুক। ভাল কাজটা নষ্ট হয়।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ফোন নম্বর ২ টোয় উদ্বোধন হয়েছে, বিকেল চারটের মধ্য়ে দেড় লক্ষ ফোন এসেছে। প্রথমে সার্ভিস প্রোভাইডারে সমস্যা ছিল। এখন কোনও সমস্যা নেই’’। তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেছিল একদিনে এক লক্ষ ফোন এসেছিল, এবার মন্ত্রী বললেন ২ ঘণ্টায় দেড় লক্ষ ফোন! এই নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে গেরুয়া হাওয়া টের পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ফল প্রকাশের পর সেদিন কোনও মন্তব্য করেননি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরবর্তীতে ভোটগুরু প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে চুক্তি হয় তৃণমূলের সঙ্গে। তারপর থেকে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব একাধিকবার বৈঠক করেছে দলের বিধায়ক ও জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন দলীয় নেতৃত্ব।