Advertisment

নবান্ন নয়, লালবাজারে বিজেপি-রাজ্য রথ বৈঠক

আদালতের দ্বারস্থ হয়ে বিজেপির দুই প্রতিনিধি মুকুল রায় এবং জয়প্রকাশ মজুমদারের নামে আপত্তি জানিয়েও কোনও সুরাহা না হওয়াতেই 'অগত্যা' লালবাজারকে বেছে নেওয়া বলে মনে করা হচ্ছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
lalbazar

বৈঠকে সরকারের তরফে অংশ নেবেন মুখ্যসচিব মলয় দে, স্বরাষ্ট্র সচিব অত্রি ভট্টাচার্য, পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র এবং বিজেপির পক্ষ থেকে মুকুল রায়, জয়প্রকাশ মজুমদার এবং প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়।

গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা তথা রথযাত্রা নিয়ে বিজেপি-রাজ্য সরকার বৈঠক হবে লালবাজারে। বিশেষ সূত্র মারফত এমনটাই খবর। বৃহস্পতিবার কলকাতা পুলিশের সদর দফতরে এই বৈঠকে সরকারের তরফে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যসচিব মলয় দে, স্বরাষ্ট্র সচিব অত্রি ভট্টাচার্য, পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র এবং বিজেপির পক্ষ থেকে মুকুল রায়, জয়প্রকাশ মজুমদার এবং প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, বিজেপির এই কর্মসূচির সঙ্গে কলকাতা পুলিশের কোনও সম্পর্ক না থাকলেও, হঠাৎ লালবাজারকে কেন বৈঠকস্থল হিসাবে বেছে নেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে সংশ্লিষ্ট মহলে।

Advertisment

সাধারণত, আদালতের নির্দেশে এ ধরনের উচ্চপর্যায়ের বৈঠক রাজ্য সচিবালয়েই অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। কিন্তু, এ ক্ষেত্রে কোনও এক 'অজ্ঞাত কারণে' এই বৈঠক কলকাতা পুলিশের সদর দফতরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে সূত্রের দাবি। রাজ্য যে বিজেপির মনোনীত দুই প্রতিনিধি তথা একদা তৃণমূলের দু'নম্বর মুকুল রায় ও সংবাদ মাধ্যমে তৃণমূল বিরোধিতায় পরিচিত মুখ জয়প্রকাশ মজুমদারের সঙ্গে বৈঠকে অনিচ্ছুক, তা স্পষ্ট ভাষায় জানানো হয়েছে আদালতে। তারপরও রাজ্যের আবেদন খারিজ করে আদালত বৈঠকের নির্দেশ দেওয়ায় সরকারও এখন নিরুপায়। ফলে, বৈঠক করলেও তা যেন কিছুতেই মুখ্যমন্ত্রীর অফিস তথা রাজ্য সচিবালয়ে না হয়, সে বিষয়ে মনস্থির করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ‘হার-জিত জীবনের অঙ্গ’, গেরুয়া শিবিরে ধস নামার পর মোদীর টুইট

প্রসঙ্গত, বিজেপির মোট তিন প্রতিনিধির মধ্যে দুই প্রতিনিধিকে নিয়ে আপত্তি ছিল সরকারের তরফে। সোমবার আদালতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, মুকুল রায় ও জয়প্রকাশ মজুমদারের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা রয়েছে। তাই রাজ্য সরকার তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায় না। কিন্তু সোমবার রাজ্যের আবেদন গ্রহণ করলেও আদালত জানিয়ে দিয়েছিল, রাজ্যের উচ্চপদস্থ আমলাদের বিরুদ্ধেও অনেক মামলা রয়েছে, তাতে কিছু প্রমাণ হয় না।

এরপর মঙ্গলবার শুনানির দিন ধার্য করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ, এবং এদিন রাজ্যের আপত্তি খারিজ করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি বৈঠকের দিন ও আদালতে আলোচনার বিষয়বস্তু জানানোর দিনও এক দিন করে বাড়িয়ে দেন বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার ও বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।

উল্লেখ্য, বিজেপির গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা হাইকোর্টের রায়ের ফলে স্থগিত রাখতে হয়েছে। এর আগে আদালত নির্দেশ দেয়, বিজেপির তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রাজ্য সরকারকে আলোচনায় বসতে হবে। রাজ্য সরকারের পক্ষে আলোচনায় বসার কথা রয়েছে মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেলের। আলোচনার মাধ্যমে গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রার কর্মসূচি নির্ধারণ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত, যাতে রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা জনিত কোনও সমস্যা না হয়।

আরও পড়ুন: রথযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা ‘গ্রহণযোগ্য’ নয়, বুধবার বিজেপির সঙ্গে শীর্ষ প্রশাসনিক কর্তাদের বৈঠকের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের

তবে গতকাল পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলের পর অনেকটাই মনমরা রাজ্য বিজেপি। সেক্ষেত্রে গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা সফল করতে মরিয়া হয়ে উঠতে বাধ্য গেরুয়া শিবির। কোচবিহারে ৭ ডিসেম্বর গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রার সমস্ত প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করে ফেলেছিল বিজেপি। হাজির ছিলেন রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কিন্তু আদালতের রায়ের ফলে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর সভা ও যাত্রার সূচনা কর্মসূচি বাতিল করতে হয়েছিল বিজেপিকে। এবার তাই অত্যন্ত সাবধানে পা ফেলতে চায় পদ্ম শিবির।

bjp government of west bengal
Advertisment