Advertisment

একটিতে জামানত জব্দ-অন্যটিতে বড় হার, ভয়ঙ্কর তলানীতে গেরুয়া ভোট, অশনি সংকেত বিজেপির

এবার আসানসোলে প্রায় ৩ লক্ষ ভোটের ব্যবধানে বিজেপিকে তৃণমূলের কাছে হারতে হল। বালিগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনে শুধু তৃতীয় হয়নি জামানত জব্দ হয়েছে বিজেপি প্রার্থীর।

author-image
Joyprakash Das
New Update
bjps vote share has declined sharply in asansol anf ballyginge by-elections

শুভেন্দু অধিকারী, অগ্নিমিত্রা পাল, কেয়া ঘোষ সুকান্ত মজুমদার

২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে ১৮টি আসনে জয় পেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল বঙ্গ বিজেপি। তারপর ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনকে লক্ষ্য রেখে বাংলায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। প্রচারে রীতিমতো ঝড় তুলেছিল গেরুয়া শিবির। যদিও ৭৭ আসনে আটকে গিয়েছিল বিজেপি। এবার আসানসোলে প্রায় ৩ লক্ষ ভোটের ব্যবধানে বিজেপিকে তৃণমূলের কাছে হারতে হল। বালিগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনে শুধু তৃতীয় হয়নি জামানত জব্দ হয়েছে বিজেপি প্রার্থীর।

Advertisment

আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ভোট পেয়েছিল ৫১.১৬ শতাংশ। তৃণমূলের থেকে বিজেপির জয়ের ব্য়বধান ছিল প্রায় ২ লক্ষ। বাবুল সুপ্রিয় সাংসদ পদ থেকে পদত্যাগ করায় আসানসোল আসনটি ফাঁকা হয়। এবার শিল্পাঞ্চলের ওই আসনে বিজেপি পেয়েছে ৩০ শতাংশ ভোট। তৃণমূলের কাছে পরাজিত হয়েছে প্রায় ৩ লক্ষ ভোটের ব্য়বধানে। বালিগঞ্জ বিধানসভায় ১৩ হাজারের কিছু বেশি ভোট পেয়ে জামানত খুইয়েছে বিজেপি। শতাংশের হিসাবে ১৩ শতাংশ ভোট পেয়েছে। অগ্নিমিত্রা পাল সন্ত্রাসের কথা বললেও পাশাপাশি পরাজয়ের পর্যালোচনার কথা বলেছেন। একইসঙ্গ এতটা ব্যবধানে হারবেন তা অনুমান করতে পারেননি বলেও তিনি জানিয়েছেন। সন্ত্রাসকে ছাপিয়ে লড়াইয়ের কথা বলেছেন অগ্নিমিত্রা পাল। তবে এমন হারে বিজেপির সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বিধানসভা নির্বাচনের পর বিজেপির নয়া রাজ্য কমিটি গঠিত হয়েছিল। তারপর বিজেপির গৃহবিবাদ একেবারে প্রকাশ্যে চলে আসে। দলের বিক্ষুব্ধ অংশ নানা জায়গায় পৃথক বৈঠক করতে থাকে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর জানিয়ে দেন, দল যা কিছু সিদ্ধান্ত নিক তিনি বিক্ষুব্ধ অংশের সঙ্গে বৈঠক করে যাবেন। আদি বিজেপির ওই অংশ দলে নিস্ক্রিয় হতে থাকে। এমনকী ওই অংশ দাবি করে, দল এভাবে চললে ভোট শতাংশ কোন স্তরে যেতে পারে তা ভবিষ্যতে বিজেপি নেতৃত্ব টের পাবে। এমনই সময়ে দলের প্রাক্তন রাজ্য সহসভাপতি সাসপেন্ডেন্ট জয়প্রকাশ মজুমদার তৃণমূলে যোগ দেন। তারপরও কিন্তু দলের একটা অংশ সক্রিয় হননি। আসানসোলের জয়ী আসনে যে ভাবে বিজেপি পর্যদুস্ত হয়েছে তাতে সাংগঠনিক দুর্বলতাও একটা বড় কারণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

এদিকে বালিগঞ্জ কেন্দ্রে জামানত খোয়াতে হয়েছে বিজেপিকে। সিপিএম দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। নির্বাচনের ক্ষেত্রে মহানগর কখনও বিজেপিকে খুশি করেনি। লোকসভা বা বিধানসভা কোনও ক্ষেত্রেই একটি আসনেও জয় পায়নি বিজেপি। কর্পোরেশন ভোটেও তাই। যদিও পুরভোটে ব্যাপক ছাপ্পা ও রিগিংয়ের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এবার বালিগঞ্জের উপনির্বাচনে পরাজয়ের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিজেপি নেতৃত্ব সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা বলে দাবি করেছে। শতাংশের হিসাবে ৭ শতাংশ ভোট কমে গিয়েছে বিজেপির। বরং সিপিএম বিজেপিকে পিছনে ফেলে বালিগঞ্জে একধাক্কায় অনেকটা ওপরে উঠে এসেছে।

আনিস খুন থেকে বগটুই গণহত্য়া, হাঁসখালি কাণ্ডসহ সাম্প্রতিক নানা বড় ইস্য়ু ছিল রাজ্য়ে। অভিজ্ঞ মহলের মতে, প্রধান বিরোধী দল হিসাবে সেই সব ইস্য়ুকে ব্য়বহার করতে পারেনি বিজেপি। প্রচারে সেভাবে ঝড়ও তুলতে পারেনি গেরুয়া শিবির। সাধারণত উপনির্বাচনে শাসকদলের একটা অ্য়াডভান্টেজ থাকে। কিন্তু আসালসোল ও বালিগঞ্জে যে ভাবে পরাজিত হয়েছে বিজেপি, তাতে গেরুয়া শিবিরে অশনি সংকেত দেখছে রাজনৈতিক মহল।

Suvendu Adhikari Sukanta Majumder bjp
Advertisment