Advertisment

নাগেরবাজারে বিস্ফোরণ নিয়ে চাপান-উতোর শুরু শাসক-বিরোধীদের মধ্যে

গ্রাম-বাংলায় বিস্ফোরণের ঘটনা সয়ে গিয়েছে সাধারণ মানুষের। কিন্তু এবার বিস্ফোরণ ঘটলো একেবারে খাস কলকাতার গায়ে, জনবহুল এলাকায়। মৃত্যু হল আট বছরের শিশুর। দায় কার?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
nagerbazar blast

বিষ্ফোরণস্থলে তদন্ত করছে পুলিশ। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ফটো

বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণ ঘটেছিল ২ অক্টোবর, ২০১৪, আজ থেকে ঠিক চার বছর আগে। নাগেরবাজারের কাজিপাড়ায় বিস্ফোরণ ঘটল ২ অক্টোবর, ২০১৮। অভিযোগ ছিল, খাগড়াগড়ে দোতলা বাড়ির নীচে ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়। এখানে পাশে রয়েছে তৃণমূলের ওয়ার্ড অফিস। বিস্ফোরণের সময়টাও কাছাকাছি। কাকতালীয় মনে হলেও দুটি বিস্ফোরণে কিছু মিল রয়ে গিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস আজকের ঘটনার দায় চাপিয়েছে আরএসএস-বিজেপির ওপর। এদিকে কংগ্রেস, সিপিএম, এবং বিজেপি এই বিস্ফোরণের ঘটনায় তৃণমূলকেই কাঠগড়ায় তুলেছে। এমনকি বিজেপি এই ঘটনার জন্য় এনআইএ তদন্তের দাবি করেছে।

Advertisment

খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের পিছনে ছিল জঙ্গীদের চক্র। পরবর্তীতে ওই ঘটনায় জড়িত জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন জঙ্গি ধরাও পড়ে। তারপরও এ রাজ্য়ের নানা প্রান্তে বিস্ফোরণ ঘটে চলেছে। এবং তা নিয়ে রাজনৈতিক চাপান-উতোর চলছে। আদপে তদন্তে কী উঠে আসছে তাও কেউ জানতে পারছে না। সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়নগড়ে, এবং তারপর বীরভূমে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয় উড়ে গিয়েছে বিস্ফোরণে। এখনও ওই ঘটনাগুলির তদন্ত শেষ হয়নি। তারই মধ্য়ে একেবারে কলকাতা সংলগ্ন দমদম চত্বরেই শাসকদলের অফিসের পাশের ফলের দোকানের সামনে বিস্ফোরণ ঘটে গেল। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় আট বছরের এক শিশুর মৃত্য়ু হয়েছে। জখম হয়েছেন ১০ জন।

আরও পড়ুন: Explosion in Kolkata Nagerbazar: নাগেরবাজারে বিস্ফোরণ, মৃত আট বছরের শিশু

রাজ্য়ের মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর অভিযোগ, "এই ঘটনার পিছনে হাত রয়েছে আরএসএস ও বিজেপির। তারাই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।" অন্য়দিকে স্থানীয় পুরপ্রধান পাঁচু রায়ের দাবি, "আমার ওপর হামলা করতেই এই বিস্ফোরক মজুত করা হয়েছিল। এই দিন গান্ধীজিকে হত্য়া করা হয়েছিল। আমাকেও খুন করার চক্রান্ত হচ্ছিল।"

রাজ্য়ের সমস্ত বিরোধী দলই অবশ্য এই ঘটনার পিছনে তৃণমূল কংগ্রেসেরই হাত দেখছে। তাদের মতে, তৃণমূল নিজেদের দায় অন্য়দের ওপর চাপাচ্ছে মাত্র। বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু বলেন, "বাংলার মানুষ তৃণমূলের অফিসের পাশ দিয়ে বা ব্রিজের ওপর দিয়ে যেতে ভয় পাচ্ছেন। বারুদের স্তুপের এপর দাঁড়িয়ে রয়েছে রাজ্য়। যেকোন সময় যেকোন ঘটনা ঘটতে পারে। তৃণমূলের এক গোষ্ঠী আর এক গোষ্ঠীর মানুষকে মারতে চাইছে। মরছেন সাধারন মানুষ।" অন্য়দিকে আরএসএসের দক্ষিণ বঙ্গের সাধারন সম্পাদক জিষ্ণু বসু বলেন, "তৃণমূলের অবস্থা শেষের দিকে এসে গিয়েছে। পাগলের মত বকছে। তবে (IED) আইইডি বিস্ফোরক হলে এনআইএ তদন্ত হওয়া উচিত।"

publive-image নাগেরবাজারে বিস্ফোরণে আহত শুভম দে'র মা শোভা দে। ছবি: পার্থ পাল

সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তীর মতে, বাংলা জতুগৃহে পরিণত হচ্ছে। এসবের পিছনে তৃণমূলই রয়েছে।" তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, "পুর্নেন্দু বসু এক কথা বলছেন, পুরপ্রধান পাঁচু রায় আরেক কথা বলছেন। তাহলে ধরে নিতে হবে তাঁরা বিষয়টা জানেন। পুলিশের উচিত ওই দুজনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা।" কাজিপাড়ার মত জনবহুল এলাকায় এই ঘটনা ঘটছে। সুজনবাবুর প্রশ্ন, "বাংলার নিরাপত্তা কোথায়? কলকাতাকে লন্ডন না বানিয়ে সুস্থ নিরাপদ বাংলা দিতে পারবেন কি মুখ্য়মন্ত্রী?"

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, "বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী মানুষের ওপর সন্ত্রাস বন্ধ করবেন কী করে? তিনি নিজের দলের মধ্যেই সন্ত্রাস বন্ধ করতে পারেন না। আর কোথাও সন্ত্রাস হলেই এর-ওর কাঁধে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। মুখ্য়মন্ত্রীর দায়িত্ব দোষ চাপানো না, দোষীকে খুঁজে বের করা। দায়িত্ব পালন না করতে পারলে সাধারন মানুষের টাকায় অপদার্থ পুলিশ প্রশাসনকে পুষে লাভ কী?" কংগ্রেস মনে করছে. এই বিস্ফোরণ শুধু নাগেরবাজার নয়, রাজ্য় জুড়ে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে বা নেতার বাড়িতে ঘটছে।

bomb blast west bengal politics
Advertisment