শান্তিপুরের উপনির্বাচনের ফলাফল কি নতুন করে পথ দেখাল সিপিএমকে? তাহলে কি সিপিএম একলা চলো নীতিতেই চলবে? মঙ্গলবার বাংলার চার কেন্দ্রের ফল ঘোষণার পর রাজ্য-রাজনীতিতে এই চর্চাই ছিল সব থেকে বড় বিষয়।
শান্তিপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ৬ মাস আগে বিধানসভা নির্বাচনে জোটের প্রার্থী ছিলেন কংগ্রেসের ঋজু ঘোষাল। ওই নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী ভোট পেয়েছিলেন ৪.৪৮ শতাংশ। সিপিএম কোনও প্রার্থী দেয়নি। কার্যত সিপিএম-কংগ্রেসের মিলিত জোটও ওই ভোটে জামানত বজায় রাখতে পারেনি। এবার কিন্তু একা লড়ে হেরে গিয়েও বাজিমাত করেছে বামপ্রার্থী।
৬ মাস পর এই নির্বাচনে পৃথকভাবে লড়াই করেছে কংগ্রেস ও সিপিএম। কংগ্রেস প্রার্থী রাজু পাল পেয়েছেন ১.৪১ শতাংশ ভোট। অন্যদিকে সিপিএম প্রার্থী সৌমেন মাহাতোর ঝুলিতে গিয়েছে ১৯.৫৭ শতাংশ ভোট। ২৩.২২ শতাংশ ভোট পেয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে বিজেপিকে। বাংলাদেশের ইস্যু কোনও সীমান্ত লাগোয়া জেলায় কোনও কাজে আসেনি। অভিজ্ঞ মহলের মতে, মোদ্দা কথা শতাংশের হিসাবে সিপিএমকে অনেকটাই স্বস্তি দিয়েছে শান্তিপুর।
সিপিএম ও বামেদের জোট নিয়ে অতীতে নানা কথা উঠেছে। ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনের পর বামশরিকরা দাবি করেছিল তাদের কর্মী-সমর্থকরা কংগ্রেস প্রার্থীকে ভোট দিলেও হাতশিবির থেকে তারা কোনও ভোট পাচ্ছেন না। আদতে লাভ হয়েছে কংগ্রেসের। তা সত্বেও নানা টালবাহানা সত্বেও চলতি ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনেও জোট করেই ভোটে যায় বাম-কংগ্রেস। অধিকাংশ কেন্দ্রে জামানত বাজেয়াপ্ত হয় জোটপ্রার্থীদের। কিন্তু উপনির্বাচনে কয়েকটি কেন্দ্রে পৃথক প্রার্থী দেয় কংগ্রেস ও বামেরা।
এবার একমাত্র শান্তিপুর কেন্দ্রেই সিপিএম প্রার্থী মুখরক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই ফলাফলের কারণেই এবার একলা চলো নীতি নিয়ে সরব হবে বামেদের একপক্ষ। জোট করে যদি চার শতাংশ ভোট পায়, অন্যদিকে উপনির্বাচনে যেখানে একতরফা তৃণমূলের জয়জয়কার সেখানে প্রায় ২০ শতাংশ ভোট সিপিএমকে নতুন করে অক্সিজেন দেবে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। শান্তিপুর মডেলই হয়তো সিপিএমের হাতিয়ার হতে চলেছে।
চার কেন্দ্রের মধ্যে খড়দহে চার শতাংশ ভোট কমেছে সিপিএমের। দিনহাটায় ফরোয়ার্ড ব্লক শতাংশের হারে প্রায় একই ভোট পেয়েছে। যৎসামান্য বেড়েছে। তিন শতাংশের নীচেই রয়েছে। গোসাবায় ২ শতাংশ ভোটও জোটেনি বামেদের আরেক শরিক আরএসপির। মোটের ওপর সিপিএমের সম্মান রেখেছে শান্তিপুর বিধানসভা কেন্দ্র। অভিজ্ঞ মহলের মতে, আপাতত সিপিএমের লাভ উপনির্বাচনে শান্তিপুরের ভোটপ্রাপ্তি। যেখানে নোটার সঙ্গে তুলনা টানা হচ্ছিল বামেদের সেখানে এই ভোট তাদের কাছে নতুন দিশা দেখাতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন