জোড়া-ফুলের অন্দরে বাড়ছে বিদ্রোহের রেশ। এবার নেতৃত্বের প্রতি ক্ষোভ উগড়ে দিলেন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক তথা পশ্চিম বর্ধমানের আইএনটিটিইউসি-র সভাপতি বিশ্বনাথ পারিয়াল। তাঁর অভিযোগ 'স্বাধীনভাবে' কাজ করতে পারছেন না তিনি। দলেরই কিছু নেতার মদতে দিনের পর দিন এই বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে বলে দাবি বিশ্বনাথ পারিয়ালের।
মঙ্গলবার বিধায়ক বিশ্বনাথ পারিয়াল বলেন, 'আমি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছি না। যখনই ভাল কোনও কাজ করতে যাচ্ছি, ঠিক তখনই পিছন থেকে টেনে ধরা হচ্ছে। এইভাবে চলতে থাকলে দল সম্পর্কে জনগণের কাছে ভুল বার্তা যাবে।'
দুর্গাপুর পশ্চিমের কংগ্রেস বিধায়ক তথা পশ্চিম বর্ধমানের আইএনটিটিইউসি-র সভাপতি বিশ্বনাথ পারিয়াল।
বিবাদের সূত্রপাত স্থানীয় একটি গ্রাফাইট কারখানায় শ্রমিক নিয়োগ পক্রিয়াকে কেন্দ্রকে। কারখানায় বহিরাগত শ্রমিকদের নিয়োগ করা হচ্ছে বলে আন্দোলন করছেন স্থানীয়রা। তাতেই সমর্থন জানিয়েছে জেলা আইএনটিটিইউসি। কিন্তু শাসক দলের শ্রমিক সংগঠনের হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও সমস্যার এখনও সমাধান হয়নি। এ প্রসঙ্গেই জেলা আইএনটিটিইউসি সভাপতি তথা বিধায়ক বলেছেন, 'যদি শ্রমিক সংগঠনে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারতাম, তাহলে শ্রমিক নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে শ্রমিক স্বার্থ সম্পর্কিত যাবতীয় সমস্যা মিটিয়ে দিতে পারতাম।'
এরপরই বিশ্বনাথ পারিয়াল বলেন, 'সমস্যা জিইয়ে রেখে দেওয়া হচ্ছে। দলের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে সব বলেছি। কিন্তু কাজের কাজ এখনও হয়নি। যাঁরা এই ধরণের বাধা দিচ্ছেন তাঁরা আসলে দলের ক্ষতি করছেন।' এর প্রভাব ২১-এর নির্বাচনে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিধায়ক। দলকেও ইতিমধ্যে সে কথা বলেছেন বলে দাবি বিশ্বনাথ পারিয়ালের।
উল্লেখ্য, ২০১৬-র নির্বাচনের আগে তৃণমূল থেকে কংগ্রেস যোগ দিয়েই নির্বাচন লড়েন বিশ্বনাথ পারিয়াল। কয়েকমাসেই মধ্যেই অবশ্য জোড়া-ফুলের শ্রমিক সংগঠনের হয়ে কাজ করতে থাকেন বিধায়ক। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বনাথ পারিয়াল এখনও কংগ্রেসেরই বিধায়ক।
শুভেন্দু অধিকারী থেকে শীলভদ্র দত্ত, মিহির গোস্বামীদের মত বিধায়ক-নেতারা ইতিমধ্যেই তৃণমূলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। দল বদলে গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন কোচবিহারের বিধায়ক মিহির গোস্বামী। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলেন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক তথা পশ্চিম বর্ধমানের আইএনটিটিইউসি-র সভাপতি বিশ্বনাথ পারিয়াল।
বিধায়কের ক্ষোভ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেছেন, 'ক্ষোভ থাকতেই পারে। আমরা আলোচনার মাধ্যমে তা মিটিয়ে নেব। বিশ্বনাথবাবুর যে দাবি তাতে দলের সমর্থন রয়েছে।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন