সিবিআই-এর দুই শীর্ষকর্তার লাঠালাঠি প্রকাশ্যে এসে যাওয়ার পর গভীর রাতে সিবিআই ডিরেক্টরকে পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। সকাল হতে না হতেই এ নিয়ে সারা দেশে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ফলে কেন্দ্রকে মাঠে নামাতে হয়েছে ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট টিম। দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, রবিশংকর প্রসাদ এবং অরুণ জেটলি এদিন সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন।
সিবিআইয়ের আভ্যন্তরীণ যুদ্ধকে অভূতপূর্ব আখ্যা দিয়ে জেটলি বলেন, ‘‘তদন্ত সংস্থার স্বচ্ছতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।’ জেটলি বলেছেন, "সরকার সিবিআই-এর বিরুদ্ধে তদন্ত করতে পারে না। সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশনের কাছে এ মামলাগুলি সম্পর্কে সমস্ত তথ্য রয়েছে। যেসব ফাইল হাতবদল হয়েছে, তাও রয়েছে কমিশনের কাছে। এই দুই অফিসার এ মামলার তদন্ত করতে পারবেন না। স্বচ্ছ তদন্তের স্বার্থে এবং অন্তর্বর্তী বন্দোবস্ত হিসেবে এই দুই অফিসারের আওতাধীন নয় এমন একটি তদন্ত দল এ ব্যাপারে তদন্ত করবে।"
আরও পড়ুন, সিবিআই ডিরেক্টরের পদ থেকে রাতারাতি অপসারণ, সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ আলোক ভার্মা
বৈঠকে অরুণ জেটলি বলেন, অভূতপূর্ব পরিস্থিতির জেরে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে সরকার। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশন গতকাল সন্ধেয় বৈঠকে বসেছিল। বিরোধীদের দিকে অভিযোগের আঙুল উঁচিয়ে জেটলি বলেছেন, যদি সরকার দ্রুত ব্যবস্থাগ্রহণ করে তাহলে কথা ওঠে যে তাড়াহুড়ো করা হচ্ছে, আর যদি ধীরে ধীরে ব্য়বস্থা নেওয়া হয় তাহলে তাকে নীতি পঙ্গুত্ব নামে ডাকা হয়। তিনি বলেন, সিভিসি-র সুপারিশ এবং সরকারের পদক্ষেপ সিবিআইয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা বাঁচিয়ে তোলার জন্য।
বিরোধী দলের অভিযোগকে রাবিশ বলে উড়িয়ে দিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ’‘কয়েকজন অফিসার গত কয়েকদিনে ভারতের তদন্ত সংস্থাকে যেভাবে হাসির পাত্র করে তুলেছেন, তা হতে দেওয়া যায় না। যদি ওই অফিসাররা নির্দোষ হন, তবে তাঁদের ফের কাজে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।’’
এদিকে সিবিআই-এর অন্তর্দ্বন্দ্বের বিষয়টি নিয়ে সরকারকে এক হাত নিয়েছে বিরোধীরাও। কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা রাফালে কেলেঙ্কারি নিয়ে তদন্তে আগ্রহের জন্যই অলোক ভার্মাকে সরিয়ে দেওয়া হল কি না জানতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জবাবদিহি দাবি করেছেন। টুইটারে সরজেওয়ালা বলেছেন, সিবিআই-এর স্বাধীনতার ওপর শেষ পেরেক পুঁতে দিল মোদী সরকার।
বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। টুইটারে তিনি সিবিআই-কে ‘বিজেপি ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।