লোকসভা ভোটের মুখে নাগরিকত্ব বিল নিয়ে মোদী-শাহদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে শরিকরা। এই বিল নিয়ে উত্তর-পূর্বের বিজেপি শরিকদের অসন্তোষ প্রকাশ্যে এসেছে। এহেন অচলাবস্থা কাটাতে মরিয়া গেরুয়াবাহিনী। নাগরিকত্ব বিল নিয়ে শরিকি অসন্তোষ কাটাতে এবার জট কাটার রাস্তা খুঁজতে উদ্যোগী হল পদ্মবাহিনী।
এ প্রসঙ্গে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, ‘‘দলের পক্ষ থেকে আমরা ওদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছি। সরকারের পক্ষ থেকেও উত্তর-পূর্বের সরকারের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দল ও সরকার এই অচলাবস্থা কাটানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। আশা করছি কিছু না কিছু একটা উপায় বেরোবেই, যাতে সবাই সন্তুষ্ট হন।’’
নাগরিকত্ব বিল নিয়ে রাম মাধব আরও বলেছেন, ‘‘এটা আমাদের এমন প্রতিশ্রুতি যা আমরা আমাদের ইস্তেহারেও উল্লেখ করি। আমরা বলেছি যে, যাঁরা উৎখাত হয়ে ভারতে আসবেন, তাঁদের দায়িত্ব নেব আমরা...আশা করছি অন্য দলগুলো এই বিলকে সাদরে গ্রহণ করবে...।’’
আরও পড়ুন, নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে দল ছাড়লেন বিজেপি বিধায়ক
নাগরিকত্ব বিল নিয়ে জট কাটাতে উত্তর-পূর্বের রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে রাজনাথ সিংয়ের ঠিক কী কথা হয়েছে, তা অবশ্য বিশদে বলতে চাননি রাম মাধব। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি এ নিয়ে এখন বিশদে কিছু বলতে পারব না। উত্তর-পূর্বে আমাদের জোট শরিকদের অসন্তোষের দিকটি আমাদের শীর্ষ নেতৃত্ব খতিয়ে দেখছে। একইসঙ্গে আমাদের প্রতিশ্রুতির কথাটাও আমরা মাথায় রাখছি।’’
এদিকে, নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতা করে জোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছে অসম গণ পরিষদ(অগপ)। এরপরই রাজনাথ সিং জানান, উত্তর-পূর্বের সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে কেন্দ্র। উল্লেখ্য, লোকসভায় এই বিল পাশ হলেও, রাজ্যসভায় তা আটকে রয়েছে। আজ থেকেই শুরু হচ্ছে রাজ্যসভার বাজেট অধিবেশন। অগপ-র পাশাপাশি, নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতা জানিয়েছে, মেঘালয়ের ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, নাগাল্যান্ডের ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্র্যাটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টি, ত্রিপুরার আইপিএফটি, মিজোরামের মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট।
আরও পড়ুন, নাগরিকত্ব বিল নিয়ে আসামের বিক্ষোভকারীদের পাশে নীতিশ কুমার
উত্তর-পূর্বের শরিকদের পাশাপাশি বিহারে বিজেপির শরিক জেডিইউ-ও নাগরিকত্ব বিলে আপত্তি জানিয়েছে। নীতিশ কুমারের দল স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছে, এই বিলের বিপক্ষে ভোট দেবে তারা। এদিকে, বিল পাশ করার জন্য শরিকদের সমর্থন পাবেন বলেই আশাপ্রকাশ করেছেন রাম মাধব। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতা করবেন বলেই মত বিজেপি নেতৃত্বের। এ নিয়ে সম্প্রতি মালদহের সভায় মমতাকে বিঁধেওছেন শাহ।
অন্যদিকে, উনিশের ভোটের লড়াইয়ে উত্তর-পূর্বে ২০-২৫টি আসনে পদ্মফুল ফুটবে বলে আশাবাদী গেরুয়ানেতৃত্ব। ভোটের আগে সেখানে ঢুঁ মারতে পারেন স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ। ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহেই আসাম যেতে পারেন মোদী। অন্যদিকে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি আসামে সভা করতে পারেন অমিত শাহ।
Read the full story in English