তৃণমূলের অন্দরে নয়া মাত্রা পেল কাটমানিকাণ্ড। কাটমানি নেওয়ার অভিযোগে পদ খোয়ালেন হুগলির তৃণমূল জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত। কাটমানি ফেরত সংক্রান্ত দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিস্ফোরক ঘোষণার দিন কয়েক পরই তপন দাশগুপ্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ সামনে আসে। এরপরই তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে হুগলিরই তৃণমূল নেতা তথা উত্তরপাড়া-কোতরং পুরসভার চেয়ারম্যান দিলীপ যাদবকে জেলা সভাপতির পদে নিয়ে আসা হয়েছে।
আরও পড়ুন- কাটমানি ইস্যুতে কোণঠাসা তৃণমূল, বিশেষ ‘উদ্যোগী’ বিজেপি
তপন দাশগুপ্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সরকারি প্রকল্পের নাম করে অর্থের অপব্যবহার করা হয়েছে এবং এসব প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে কাটমানি নিয়েছেন তিনি। গত সপ্তাহের শুক্রবার তপন দাশগুপ্তের ফুলপুকুরের বাড়ি ঘেরাও করে 'কাটমানি'র ফেরতের দাবি জানায় 'পাওনাদাররা'। সিপিএমের তরফেও তপন দাশগুপ্তের নামে কাটমানি নেওয়া এবং সরকারি প্রকল্পের তহবিল তছরূপের অভিযোগ করা হয়েছে। তবে এইসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের এই বিধায়ক তথা হুগলির প্রাক্তন জেলা সভাপতি। উল্লেখ্য, সম্প্রতি একাধিকবার দলের নেতাকর্মীদের ‘কাটমানি’ নেওয়া নিয়ে সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, "কাটমানি নেওয়া যাবে না, যারা যারা কাটমানি নিয়েছেন তারা তা অবিলম্বে ফেরত দিন"। তৃণমূল সুপ্রিমোর এহেন মন্তব্যর পরই রাজ্য জুড়ে বেনজির অস্বস্তির মুখে পড়ে রাজ্যের শাসকদল।
আরও পড়ুন, কাটমানির রেটকার্ড: বাড়ি বানাতে ২৫ হাজার, শেষকৃত্য ২০০ টাকা!
সূত্রের খবর, লোকসভা নির্বাচনে হুগলিতে বিজেপির প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের জয়ের পরই তপন দাশগুপ্তকে বহিষ্কার করার ভাবনা ছিল তৃণমুলের অন্দরে। তবে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে সদ্য পদ হারানো এই তৃণমূল নেতা বলেন, "আমাকে দলের মধ্যে কোণঠাসা করে দেওয়া হয়েছে এই তথ্যটি সম্পূর্ণই ভুল। দলে নতুনদেরও সুযোগ পাওয়া উচিত। দিলীপ আর আমি একসঙ্গেই কাজ করব। দিদি চেয়েছেন ওকে এই পদে আসীন করতে। বাকি সব কথাই গুজব"। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা 'কাটমানি'র যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে তপন বলেন, "এরকম কোনও অভিযোগ নেই আমার বিরুদ্ধে। আমি কোনও কাটমানি নিইনি। সবটাই গুজব"।
আরও পড়ুন, কাটমানি ইস্যু নিয়ে বিক্ষোভ রাজ্যে, চলছে ঘেরাও পর্ব
তৃণমূল সূত্রের খবর, তপন দাশগুপ্তকে নিয়ে খুব একটা খুশি নয় তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। সম্প্রতি দলীয় বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তপন দাশগুপ্তকে ডেকে ধমকও দেন। হুগলিতে লকেট চট্টোপাধ্যায় জেতার পর থেকেই এই কেন্দ্রটির ওপর বিশেষ নজর রেখেছিল দলনেত্রী। দিলীপ যাদবের পাশাপাশি হুগলিতে তৃণমূলের চেয়ারপার্সন পদে প্রক্তন সাংসদ রত্না দে নাগ এবং আহ্বায়ক হিসেবে চারজন তৃণমূল নেতাকে বহাল করা হয়েছে।
Read the full story in English