পাঁচদিনের উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে রবিবার শিলিগুড়িতে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে ফের রামপুরহাট হিংসার প্রসঙ্গ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামীকাল কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের অনুষ্ঠানে একাধিক সরকারি প্রকল্পের সূচনা করতে পারেন। তার আগে রামপুরহাটের ঘটনা নিয়ে ফের সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী।
Advertisment
এদিন মমতা বলেন, "এখানে একটা ঘটনা ঘটেছে, খুন হয়েছে তৃণমূলের লোক, আগুন লাগল তৃণমূলের লোকের ঘরে। আর রাজনৈতিক দলগুলি আমাকেই গালাগালি দিচ্ছে। পুলিশের ভুল ছিল, আমরা অ্যাকশন নিয়েছি। যাঁদের ক্ষতি হয়েছে তাঁদের এক লক্ষ টাকা দিতে চেয়েছিলাম। ওঁরা বলল এতে হবে না দিদি। ঘর সারানোর জন্য ২ লক্ষ করে দিয়েছি।"
এদিন সাধারণ মানুষকে আরও সজাগ হতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, "সাধারণ মানুষ নজর রাখুন। কোথাও কিছু খারাপ জিনিস দেখলেই পুলিশকে জানান। পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে আমাকেও জানাতে পারেন আমার নম্বরে। আমি তাঁর বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেব। সাধ্যমতো আমরা চেষ্টা করি, পাড়ায় পাড়ায় গন্ডগোল হল আমাকে গালাগালি দেবেন! এলাকায় যাতে গন্ডগোল না হয় তা দেখতে হবে। আর আমার নামে আর মুখে কালি লাগিয়ে সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি মিছিল করবে।"
রামপুরহাট কাণ্ডে সিবিআই তদন্তকে স্বাগত জানিয়েছেন এদিন মমতা। বলেছেন, "রামপুরহাটে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে তদন্ত হোক। সিবিআই হয়েছে ভালই হয়েছে। তদন্তে সত্যিটা বেরিয়ে আসুক, আমরা সবরকম সহযোগিতা করব। কিন্তু তার বদলে অন্য কোনও কাজ করলে, বিজেপির কথায় চললে আমরা কিন্তু রাস্তায় আন্দোলনে নামব। নোবেল চুরি থেকে নন্দীগ্রাম, নেতাই, সিঙ্গুরে তাপসী মালিক খুনে সিবিআই আজও বিচার করতে পারেনি। বরং সিট তদন্তে অনেকটা এগিয়েছিল।"
এদিন সংবাদমাধ্যমকেও একহাত নেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, "কোনও কোনও চ্যানেল ব্যবসার জন্য দিনভর রক্ত দেখিয়ে যাবে, টিআরপি বাড়ানোর জন্য। তাতে বাচ্চাদের মনে কী প্রভাব পড়ছে ভাবে না। টিআরপির আগুনে নিজেরাই পুড়ে যাবে। মানুষের মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। পেট্রল-ডিজেল রান্নার গ্যাসের দাম বাড়ছে, এগুলো চাপা দেওয়ার জন্য মিডিয়াকে দিয়ে শুধু এসব দেখাচ্ছে। যাতে শিল্প না হয়, চাকরি না হয়, মানুষ পেট্রল-গ্যাসের দাম বাড়লে প্রতিবাদ না করতে পারে তাই এসব হচ্ছে। দেউচা-পাঁচামি আটকাতে এই ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।"
এদিন মুখ্যমন্ত্রী নিজের দলের নেতা, জনপ্রতিনিধিদেরও হুঁশিয়ারি দেন। বলেন, "দুমাস সময় দেব, কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতি, খুনখারাপির অভিযোগ থাকে তাহলে অ্যাকশন নেব। তা সে য়ে রাজনৈতিক দলেরই হোক, অফিসারই হোক, বাইরের লোকই হোক। কোনও ঝামেলায় কেউ জড়াবেন না। ভাল ভাবে কাজ করুন। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলেই আমি কিন্তু ব্যবস্থা নেব। গন্ডগোল-ঝামেলা আমি পছন্দ করি না।"