তৃণমূল নেত্রীর কংগ্রেসকে আক্রমণের পালা অব্যাহত। গোয়ার পর কলকাতার কালীপুজো উদ্ধোধনের মঞ্চ থেকেও দেশের প্রাচনীতম রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাফ বললেন, 'কংগ্রেসের বর্তমান নেতৃত্ব বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা করেছে। দেশবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করছে।' হাত শিবিরের নেতৃত্বের কাছে তাঁর পরামর্শ, 'অন্যদের দোষারোপ না করে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে হয় নিজেদের ঘর পোক্ত করুন, না হলে যাদের লড়াইয়ের ক্ষমতা ও ইচ্ছা রয়েছে তাদের জায়গা ছেড়ে দিন।'
শনিবার গোয়ায় তৃণমূল সুপ্রিমো কংগ্রেসকে নিশানা করেছিলেন। বলেছিলেন যে, 'কংগ্রেস সংঝোতা করে।' সেই রেশই বজায় রাখলেন সোমবারের আক্রমণে। বললেন, 'কংগ্রেসের বর্তমানে নেতৃত্ব উপরে উপরে বিজেপির বিরোধিতা করবে আর মাঝখানে সমঝোতা করবে। তাই এদের উপর কোনওভাবেই নির্ভর করা যাবে না। আমি বিজেপিকে জায়গা ছেড়ে দিতে পারি না। তাই আমাদেরই দেশের সর্বত্র যেতে হচ্ছে।'
কেন 'সমঝোতা' আক্রমণ? এর ব্যাখ্যাও দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, 'আমি যখন গোয়ায় তখন কংগ্রেসের এক সর্বভারতীয় নেতা ওি রাজ্যে গেলে। কিন্তু, তাঁর কোনও পোস্টার ছেঁড়া হল না, গোর্ডিংয়ে রং লাগানো হল না, এমনকী রাস্তায় গো-ব্যাক স্লোগানও কেউ দিলো না। আর আমার ছবি দেওয়া পোস্টার, ব্যানার ছিঁড়ে দেওয়া হল, কালো কালী দেওয়া হল। রাস্তা আটকে বললো গো-ব্যাক।'
ভবানীপুর উপনির্বাচন ছাড়া বাংলার সব ভোটেই প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস। দলের বঙ্গ নেতারা তীব্র বিঁধেছেন তৃণমূলকে। জোটের আবহে যা বড় ইস্যু। এই বিষয়টি তুলেও এ দিন হাত শিবিরকে কড়া কথা শুনিয়েছেন মমতা, কার্যত প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেসের বিজেপি বিরোধী জোটের স্বদিচ্ছা নিয়ে। মমতা বলেন, 'ওরা বাংলায় সর্বত্র আমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। আর ভাববে অন্যত্র আমি ওদের সহযোগিতা করব। এটা হতে পারে না। মানুষের রায়ে আমরা এখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গায় এসেছি। আমরাও কংগ্রেস করতাম। কিন্তু ছেড়ে দিয়েছিলাম। কংগ্রেস আমাদের সঙ্গেও প্রতারণা করেছে।'
এদিন ঘাস-ফুলের টুইটারেও দেশের সর্বপ্রাচীন দলকে আক্রমণ করা হয়েছে। টুইটারে লেখা হয়েছে, 'কংগ্রেসের বর্তমান নেতৃত্ব বিজেপির সবচেয়ে বড় বীমা! ২০০১ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গে আমরা লড়াই করছি এবং বিজেপিকে সাফল্যের সঙ্গে পরাজিত করেছি। অন্যকে দোষারোপের আগে কংগ্রেস বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে নিজেদের ঘর পোক্ত করক, নয়তো এই লড়াইয়ে জাতীয়স্তরে যাদের ইচ্ছা রয়েছে ও সক্ষম তাদের জায়গা দিক।'
তৃণমূলের নজরে ২০২৪। লক্ষ্য বিজেপিকে পরাস্ত করা। কিন্তু, সেই লড়াইয়ে জোটের নামে কংগ্রেসকেও শক্তিশালী করতে নারাজ বাংলার শাসক দল। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, উল্টে ক্রমাগত কংগ্রেসকে বিঁধে বিজেপির বিরুদ্ধে একমাত্র লড়াকু বিরোধী হিসাবে তৃণমূলকে তুলে ধরে নিজেদের অবস্থানকে পোক্ত করতে মরিয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন- ‘নাবালক অথচ মোটা গোঁফ, এরকম পদার্থ আমি বড় একটা দেখিনি’, তথাগতর নিশানায় রাজীব
ইন্ডিয়ানএক্সপ্রেসবাংলাএখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন