"দলের নেতা-মন্ত্রী-সাংসদদের কাজ করতে দিচ্ছে না তৃণমূল সরকার। বরং করোনা পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছাতে গেলে বাধা দিচ্ছে পুলিশ। পরিস্থিতি ডামাডোলের দিকে এগোচ্ছে।" এভাবেই তোপ দাগলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ। বঙ্গ বিজেপির শীর্শ নেতার হুঁশিয়ারী, "এখন পুলিশকে পেটাচ্ছে, এরপর নেতাদের পেটাবে।"
করোনা মোকাবিলায় লকডাউন ঘোষণার পর থেকে ঘোর বিপদে পড়েছে সাধারণ মানুষ। প্রথম ও দ্বিতীয় দফার লকডাউন মিলিয়ে ২৩ দিন পার হয়ে গিয়েছে। একে মানুষের হাতে অর্থ নেই, নেই নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীও। তারওপর রেশন নিয়ে রাজ্যব্যাপী বিস্তর গন্ডগোল শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবারই খাদ্য দফতরের প্রধান সচিবকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষদের আরও সাহায্য করা প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। পদ্মশিবিরের অভিযোগ, "তাঁদের দলের নেতা-কর্মীরা অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে চাইলেও পারছেন না। কারণ, তাঁদের পুলিশ দিয়ে বাধা দেওয়া হচ্ছে।"
আরও পড়ুন- “তৃণমূল সরকার মানুষের পাশে থাকতে দিচ্ছে না”, বাংলার দুই সাংসদ আটকের পর গর্জন বিজেপির
বঙ্গ বিজেপির সভাপতি এদিন তাঁরই এক দলীয় সতীর্থের নাম করে তোপ দাগেন পুলিশের বিরুদ্ধে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে তিনি বলেন, "আমাদের এক মন্ত্রীর বাড়িতে জোর করে কোয়ারেন্টাইনের নোটিস দিয়েছে। ব্য়ারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং-কে দু'দিন আটকেছে। বিধায়ক সব্যসাচী দত্তকেও আটকেছে। বাঁকুড়ার সাংসদ ডাঃ সুভাষ সরকারের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে। উত্তরবঙ্গে ঝড় বৃষ্টিতে বেশ কিছু জায়গায় বাড়ি ভেঙে গিয়েছিল। স্থানীয় জেলা সভাপতি দেখতে গিয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধেও এফআইআর হয়েছে। এর আগে বুলবুলিতে ত্রাণ সামগ্রী বিলি করতে দেয়নি। দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ও দেবশ্রী চৌধুরীকে হেনস্থা করেছে। উত্তরবঙ্গে দুই সাংসদকে গৃহবন্দি করে রেখেছে। এটাই রাজনীতি, নিজেরা পারে না কিছু করতে...।"
আরও পড়ুন- রাজ্যজুড়ে রেশন নিয়ে অভিযোগের মুখে সরলেন বাংলার খাদ্যসচিব
ইতিমধ্য়ে রাজ্য়ের বিভিন্ন জায়গায় রেশন নিয়ে বিক্ষোভ দানা বেঁধেছে। দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, "রেশন দিন, তা-ও দিচ্ছেন না। কেউ দিতে গেলে তাঁকে দিতে দেবেন না। সব ভেঙে পড়বে। সরকার কোথায়? প্রশাসনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ওদের পার্টি সব করছে। রেশন ডিলারদের কাছ থেকে ভয় দেখিয়ে চাল নিয়ে নিজেরাই বিতরণ করছে। মানুষ ক্ষতিগ্রহস্ত হচ্ছে। পুলিশকে পেটাচ্ছে। একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। এটা মানুষের ক্ষোভ।" ক্ষোভের কারণ প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, "বাড়িতে বন্দি আছে। কাজ নেই, খাবার নেই। গরিব লোকেরা খাবে কী?"
ইতিমধ্যে রাজ্যের কয়েকটি হাসপাতালের কিছু ওয়ার্ডে অন্য রোগীদের চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। হাসাপাতাল বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা। করোনার খবর চেপে যাওয়া হচ্ছে বলে ইতিমধ্যে বঙ্গ বিজেপি রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছিল। এদিনও মেদিনীপুরের সাংসদ অভিযোগ করেন, "মৃত্যু বা সংক্রমণের সঠিক খবর বলছে না (রাজ্য)। তাতে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে। হাসপাতাল আউট অব অর্ডার। একেবারে ডামাডোলের দিকে যাচ্ছে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে আমার তো মনে হয় অন্য দেশে কমতে শুরু করবে, এখানে বাড়বে। সামলাতে পারবে না।" এরপরই দিলীপের হুঙ্কার, "কী ধরনের রাজনীতি হচ্ছে? পুলিশকে পেটাচ্ছে, এবার নেতাদের পেটাবে। সাধারণ মানুষ খেপে যাচ্ছে।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন