জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে দেওয়ার পিছনে অন্য রহস্য দেখতে পাচ্ছে প্রদেশ কংগ্রেস ও সিপিএম। পাশাপাশি তাদের বক্তব্য, সংসদে কোনও বিবৃতি নেই, কোথাও কোনও আলোচনা নেই, এভাবে একতরফা সিদ্ধান্তে নিয়ে গণতন্ত্র ধ্বংস করছে বিজেপি। কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করে, এই ধারা যোগ না হলে কাশ্মীর ভারতেই থাকত না। হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত কেন নিল বিজেপি, সেই প্রশ্ন তুলেছে প্রদেশ কংগ্রেস।
আরও পড়ুন: বাতিল ৩৭০ ধারা, জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল
রাতারাতি এমন একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম। পলিটব্যুরোর এই সদস্যের মতে, কেন সারা ভারতবর্ষ এই বিষয়ে অন্ধকারে রয়েছে। হঠাৎ কেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বোঝা যাচ্ছে না এর পিছনে কী রয়েছে। এর মধ্যে কিছু একটা রহস্যজনক ব্যাপার তো রয়েছেই। এই রহস্য তখনই খুলবে যখন আমরা একটা কিছু আবার দেখতে পাব। এই দুই ধারা খারিজ করে দেওয়ার আগে সংসদের দুই কক্ষে কোনও আলোচনা হয়নি। এ বিষয়ে মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘সংসদে কোনও বিবৃতি না দিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এটাও তো রহস্য। মানুষকে অন্ধকারে রেখে রাতারাতি হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেওয়া, এটা খুবই খারাপ ইঙ্গিত’’।
আরও পড়ুন: যুবা মোদীর ‘কথা রাখলেন’ প্রধানমন্ত্রী মোদী
কংগ্রেস মনে করছে একেবারে ফ্যাসিবাদী সিদ্ধান্ত। ধর্মীয় ভাবাবেগে মেরুকরণের রাজনীতি হচ্ছে। প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সাংবিধানিক ব্যবস্থাকে ১০ মিনিটের মধ্যে খারিজ করে দেওয়া হল। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে এর প্রতিবাদ করা উচিত। কোনও একটা ধর্মের মানুষকে আঘাত করা নয়। এটা দেশের গণতন্ত্রকে, ভারতের সংবিধানকে আঘাত করা’’।
আরও পড়ুন: ৩৭০ ধারা অবলুপ্তি রাষ্ট্রসংঘের সিদ্ধান্ত বিরোধী: পাকিস্তান
অমিতাভবাবুর বক্তব্য, ‘‘কাশ্মীর অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল ৩৭০ ও ৩৫ ধারা লাগু হওয়ায়। তা না হলে ভারতে থাকত না। কাশ্মীরকে রাখার জন্য এই ধারা লাগু করতে হয়েছিল। মানুষের মত নেওয়া, সংসদের বাইরে বিদ্বজনেদের মত নেওয়া। এগুলো দরকার ছিল। এভাবে একতরফা গণতন্ত্রকে হত্যা করল। এতে বিজেপির স্বরূপ প্রকাশ করলো। জানি না এরপর কী হবে। দেশের যুবকদের চাকরি নেই, কোষাগার ফাঁকা, বিনিয়োগ নেই, সেসবের জন্য দৃষ্টি ঘোরাতে চাইছে সরকার’’।
অন্যদিকে, জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘আজকের সোমবারের দিনটা কালো দিন। সংসদীয় গণতন্ত্রের জন্য কালো দিন আজ। সংবিধানের জন্য কালো দিন, রাজ্যসভার জন্য কালো দিন’’।