বিজেপির উপর চাপ বাড়িয়ে ৫০-৫০ ফর্মুলায় মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবিতে অনড় শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। অন্যদিকে, মোদি-অমিত শাহ চান মুখ্যমন্ত্রী হোন দেবেন্দ্র ফড়নবিশই। রবিবারও হুুঙ্কার ছেড়েছেন শিবসেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত। সামনায় তিনি লিখেছেন 'জোটের রিমোট কন্ট্রোল' রয়েছে তাদের হাতেই।
বৃহস্পতিবার ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই মহারাষ্ট্রে বিজেপি-শিবসেনা তরজা অব্যাহত। শনিবার শিবসেনা বিধায়কদের বৈঠকেও কাটল না জট। গতকাল উদ্ধব ঠাকরে নিজের বাসভবন ‘মাতশ্রী’তে বিধায়কদের জরুরি তলব করেছিলেন। সেখানেই ঠিক হয় রাজ্যের ৫০-৫০ ফর্মুলায় মুখ্যমন্ত্রী পদ আড়ই বছর করে ভাগ করে নেবে বিজেপি ও সেনা।
আরও পড়ুন: আজই মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ খট্টরের, উপমুখ্যমন্ত্রী দুষ্মন্ত চৌটালা
উপ-মুখ্যমন্ত্রীত্বের পদকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না উদ্ধব ঠাকরেরা। শিবসেনা বিধায়ক প্রতাপ সারনায়েকের কথায়, 'আমরা উপ-মুখ্যমন্ত্রীত্ব নিয়ে ভাবছি না। ওই পদ আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমরা ৫০-৫০ ফর্মুলায় মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবি করছি।' ইতিমধ্যেই সেনা বিধায়করা একটি রেজলিউশনও পাস করিয়েছেন। যেখানে বলা হয়েছে, বিজেপির সঙ্গে সম্পূর্ণ দরকষাকষির বিষয়টি স্থির করবেন দলের প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। সরকার গঠনের বিষয়টি কৌশলে আপাতত মোদী-শাহ জুটির উপরই ছেড়ে দিয়েছে সেনা শিবির।
গেরুয়া শিবির দাবি না মানলে বিকল্প পথের ইঙ্গিত দিয়েছেন শিবসেনা বিধায়ক প্রতাপ সারনায়েক। তবে সেটা কি? তা খোলসা করতে চাননি। শিবসেননার হাতে রয়েছে ৫৬ বিধায়ক। সেক্ষেত্রে সরকার গড়ার জন্য এনসিপি’র সঙ্গে জোট বাঁধতে পারেন তারা উদ্ধব ঠাকরেরা।
উল্লেখ্য, ২৮৮ আসনের মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভোটে জোট বেঁধে লড়াই করেছে বিজেপি-শিবসেনা। স্বভাবতাই ১৫০ আসনে লড়ে ১০৫টি আসন পেয়েছে বিজেপি। শিবসেনার দখলে ৫৬ আসন সরকার গঠনে প্রয়োজন ১৪৫। ফলে জোট ছাড়া কোনওভাবেই সরকার গড়তে পারবে না বিজেপি। আর সেই সেই সুযোগটাই ভোটের পর কাজে লাগাতে মরিয়া শিবসেনা।
আরও পড়ুন: হরিয়ানা-মহারাষ্ট্রে জয়ের গড় ব্যবধানে এগিয়ে কংগ্রেস, পিছিয়ে বিজেপি
বিজেপির কোনও কেন্দ্রীয় নেতা অবশ্য প্রকাশ্যে এনিয়ে মুখ খুলছেন না। তারা সময় নিয়ে পুরো বিষয়টি লক্ষ্য করছেন। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের এক পদাধিকারী জানান, 'কোন দল কটা আসন পেয়েছে তার উপর নির্ভর করেই স্থির হয় সরকারে অংশীদারিত্ব। ফলে মুখ্যমন্ত্রী পদ ছেডে় দেওয়ার কোনও কারণই থাকতে পারে না।' তবে সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে মিটে যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
শুক্রবার ফলপ্রকাশের পরই উদ্ধব ঠাকরে ঘোষণা করেছিলেন, 'অমিত শাহকে আসতে হবে। রাজ্য নেতাদের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন না। জোট হয়েছিল ৫০-৫০ ক্ষমতার বণ্টনের ভিত্তিতে। সেই কথা রাখার সময় এসে গিয়েছে। আলোচনার পর মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।' বিজেপির উপর প্রকাশ্যে চাপ বাড়াতে তারপরই আদিত্য ঠাকরেকে ভাবী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে ওরলি কেন্দ্রে পোস্টার পড়ে। শুক্রবার শিব সেনার মুখপত্র ‘সামনা’তেও দেবেন্দ্র ফড়ণবিসকে নাম না করে খোঁচা দিয়ে দাম্ভিক বলা হয়েছে। এবং শরদ পওয়ারকে বেশি শক্তিশালী হিসাবে প্রশংসা করা হয়েছে।
Read the full story in English