দু'বছর আগের উত্তর-পূর্ব দিল্লি দাঙ্গা মামলায় জামিন পেলেন না জেএনইউয়ের প্রাক্তন ছাত্রনেতা উমর খালিদ। মঙ্গলবার তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। আবেদন বাতিলের ফলে আপাতত জেলেই থাকতে হবে এই প্রাক্তন ছাত্রনেতাকে। মঙ্গলবার বিচারপতি সিদ্ধার্থ মৃদুল, বিচারপতি রজনীশ ভাটনগরের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, তাঁরা কাশ্মীরের এই ছাত্রনেতাকে জামিন দেওয়ার কারণ খুঁজে পাচ্ছে না।
নিম্ন আদালত আগেই জানিয়েছিল, খালিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিক ভাবে সত্য। সেই নির্দেশ কার্যত দিল্লি হাইকোর্টও বহাল রাখল। কারকারদুমা জেলা আদালতের অতিরিক্ত সেশন বিচারক অমিতাভ রাওয়াত খালিদের জামিনের আবেদন বাতিল করে দিয়েছিলেন। চলতি বছরের মার্চে সেই নির্দেশের বিরুদ্ধেই দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন উমর খালিদ। কিন্তু, দিল্লি হাইকোর্টও তাঁর পাশে থাকল না।
মঙ্গলবার তার ৫২ পাতার রায়ে দিল্লি হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, 'সেশন বিচারক তাঁর রায়দানের ক্ষেত্রে কোনও খুঁত রাখেননি। তিনি রীতিমতো লড়াই করে তাঁর রায়দান করেছেন। জামিনের মত ক্ষেত্রে সেই রায়দান ভুল হতে পারে না। সেশন বিচারক শুধুমাত্র ছোটখাটো বিচার হিসেব ব্যাপারটাকে দেখেননি। প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তিনি রায় দান করেছেন।'
হাইকোর্ট জানিয়েছে, এই দাঙ্গার আগে দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা অবরোধ করা হয়েছিল। প্রতিবাদের নামে পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। যা হিংসায় উসকানি দিয়েছে। পরিস্থিতি দাঙ্গায় পরিণত হয়েছে। হাইকোর্ট জানিয়েছে, 'দাঙ্গার আগে দিল্লির বিক্ষোভ কোনও রাজনৈতিক বা গণতান্ত্রিক বিক্ষোভ ছিল না। বরং, তার চেয়েও অনেক বেশি ধ্বংসাত্মক ও ক্ষতিকারক ছিল। যা দাঙ্গার পরিণতিকে তৈরি করেছে।'
আরও পড়ুন- ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা, ভেঙে পড়ল কেদারনাথের তীর্থযাত্রী বোঝাই হেলিকপ্টার, নিহত ৬
দু'বছর আগে ১৩ সেপ্টেম্বর উমর খালিদকে গ্রেফতার করেছিল দিল্লি পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন বা ইউএপিএ, অস্ত্র আইন, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট আইন দায়ের করেছেন তদন্তকারীরা। এরপর থেকে জেলেই আছেন উমর খালিদ। তাঁর আইনজীবী ত্রিদীপ পায়াস ও বিশেষ সরকারি আইনজীবী অমিত প্রসাদের যুক্তি প্রায় ২০ দিন ধরে শুনেছে আদালত।
হাইকোর্টে খালিদের পক্ষে আইনজীবী ত্রিদীপ পায়াস জানান, দিল্লি পুলিশ দাঙ্গায় জড়িত থাকার অভিযোগে খালিদের বিরুদ্ধে পাঁচটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে উপস্থিত থাকার কথা চার্জশিটে জানিয়েছে। কিন্তু, খালিদ তার মধ্যে মাত্র দুটি গ্রুপের সদস্য ছিলেন। আর, মাত্র একটিতে বার্তা পোস্ট করেছিলেন। তাঁর সেই চারটি বার্তা ছিল যেখানে তিনি বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন, সেই বিক্ষোভস্থলের। আর, যে পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে বিক্ষোভ প্রত্যাহার নিয়ে খালিদের কথা কাটাকাটি হয়েছিল, সেই ছবি।
Read full story in English