Dhaka objects on Mamata Banerjee: তৃণমূল কংগ্রেসের বার্ষিক শহিদ দিবসের সমাবেশে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যে প্রতিবাদী যুবকরা বাংলাদেশ সরকারের দমন-পীড়ন থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, তাঁদের 'আশ্রয়' দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তাঁর সেই সভার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া রাজভবন থেকে দিল্লি হয়ে ঢাকায় পর্যন্ত তৈরি হয়েছে। বুধবার, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সঙ্গে তাঁর চলতি বিরোধিতার মধ্যেই প্রতিবেশী বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে, এমন কোনও 'রাজনৈতিক মন্তব্য' না করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন।
বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়া
বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী হাসান মাহমুদ সোশ্যাল মিডিয়া এক্স-এ ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া এক ভিডিওর প্রেক্ষিতে টিএমসি প্রধানের বিবৃতির জেরে ঢাকা থেকে, 'ভারত সরকারের কাছে একটি প্রতিবাদপত্র' পাঠিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে, বিভ্রান্তি সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।' এরপরই রাজ্যপালের কাছে থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বার্তা এসেছে। বিজেপি আইটি সেলের নেতা অমিত মালব্য প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পোস্ট করেছেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের জন্যই নয়, এখন ভারতের জন্যও বিব্রতকর।' রবিবার কলকাতায় শহিদ দিবসের সমাবেশে মমতা বলেছিলেন, 'আমি বাংলাদেশ নিয়ে মন্তব্য করব না। যা বলার ভারত সরকার বলবে। কিন্তু, অসহায় মানুষ বাংলার দরজায় কড়া নাড়লে আমরা তাঁদের আশ্রয় দেব। এর আগে অসমেও সমস্যায় পড়া মানুষ বাংলায় আশ্রয় নিয়েছিল।'
আরও পড়ুন- ভারতজুড়ে ব্যাপক বর্ষণ, জলে থইথই সর্বত্র, এত বৃষ্টিপাতের কারণটা কী?
বিরোধের ইতিহাসটা কিন্তু দীর্ঘ
তৃণমূল সুপ্রিমো মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে কথাটি বলেছিলেন। কিন্তু, তাঁর সেই বক্তব্যই বিতর্ক তৈরি করেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর আগে মোদী সরকারের নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইনের বিরোধিতা করেছেন। যা মুসলিমদের প্রতি বৈষম্যমূলক বলে অভিযোগ উঠেছে। পশ্চিমবাংলায় বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি উদ্বাস্তু আছেন। বিজেপি তাঁদের কথা মাথায় রেখে সিএএ লাগু করার কথা বলেছে। কিন্তু, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর আপত্তি বহাল রেখেছেন। পাশাপাশি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তিস্তা নদীর জল নিয়ে ঢাকার সঙ্গে স্বাক্ষরিত দিল্লির চুক্তির বিরোধিতা করেছে। ইউপিএ সরকারের আমলে, তাঁর সেই বিরোধিতার জন্যই প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ২০১১ সালে বাংলাদেশ সফরের সময় শেখ হাসিনার সঙ্গে তিস্তা চুক্তি করতে পারেননি। আবার, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন অভিযোগ করেছিলেন যে, বামফ্রন্ট সরকার ভোটব্যাংকের রাজনীতি করতে গিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের ভারতে আশ্রয় দিচ্ছে। ফলে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাংলাদেশের বিরোধের ইতিহাসটা বেশ দীর্ঘ।